
খবর ডেস্ক :
জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার গত ৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ নিয়ে যে বিবৃতি প্রচার করেছেন, সেটির কড়া প্রতিবাদ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘জাতিসংঘ হাইকমিশনারের বিবৃতি তাদের নজরে এসেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হাইকমিশনারের যে ম্যান্ডেট রয়েছে, তার বাইরে গিয়ে তিনি কাজ করেছেন। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে রাজনীতিকরণের মাধ্যমে তিনি বিবৃতিতে বাস্তবতার ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং তার মূল্যায়ন পক্ষপাতিত্বমূলক।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে জানায়, ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখার জন্য ৭ জানুয়ারি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার জন্য সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ছিল এবং বিভিন্ন বিদেশি পর্যবেক্ষক এ বিষয়ে তাদের পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘নির্বাচনে সহিংসতা হয়েছে এবং অনিয়ম হয়েছে’—এই দাবিটি সে কারণে সম্পূর্ণ পক্ষপাতমূলক এবং ভুল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকার অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলেও দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অসাংবিধানিক দাবিতে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বাইরে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে বিএনপি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করতে সহিংসতা ও নিরপরাধ মানুষ হত্যার পথ বেছে নেয়, যেমনটি দলটি অতীতের জাতীয় নির্বাচনের সময় করেছিল। শুধু গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপির কর্মীরা নিরীহ বেসামরিক নাগরিক, কর্তব্যরত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মীসহ ২৪ জনকে হত্যা করেছে। তারা সরকারি-বেসরকারি প্রায় এক হাজার যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়, ট্রেন লাইনচ্যুত করে এবং ট্রেনে হামলা চালিয়ে মা, তার তিন বছরের শিশুসহ যাত্রীদের জীবন্ত পুড়িয়ে দেয়। বিএনপির ধ্বংসযজ্ঞের পুরো চিত্র ভয়াবহ এবং দেশজুড়ে বিএনপির নৈরাজ্য সময়মতো ও পরে আবারও ওএইচসিএইচআরের কাছে পাঠানো হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, দেশকে অস্থিতিশীল করা এবং এর গণতান্ত্রিক যাত্রাকে ব্যাহত করার লক্ষ্যে নানা রকম হুমকি, বাধা ও সহিংসতার মধ্যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করা সত্যিই একটি চ্যালেঞ্জ ছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এত ব্যাপক সহিংসতা সত্ত্বেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের পদক্ষেপ সংযত, যৌক্তিক ও আইনি কাঠামোর মধ্যে ছিল। নির্বিচার ও গণগ্রেফতার, হুমকি, গুমসহ প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ, আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নজরদারি ও ব্ল্যাকমেলিংয়ের যে অভিযোগ ওএইচসিএইচআর করেছে, তা ভিত্তিহীন এবং এগুলোর কোনো প্রমাণ নেই। আর গ্রেফতারের সংখ্যা নিছক অতিরঞ্জন। শুধু যারা সহিংসতা ও বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত বা উসকানি দিয়েছিলেন, তাদেরই গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইনের শাসন বজায় রাখতে এবং সব নাগরিকের অধিকার রক্ষার জন্য এসব পদক্ষেপ জরুরি ছিল।