
নিজস্ব প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় নিজ সন্তানকে একাধিকবার ধর্ষণের মাধ্যমে গর্ভবতী করার অপরাধে মোহাম্মদ আলী (৪০) নামে এক বাবাকে গ্রেপ্তার করেছেন থানা পুলিশ।
লোকমুখে খবর ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) সূত্র ধরে থানা পুলিশ আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ধর্ষকের নিজ বাড়ি উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মনোহর চৌধুরীপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করে ধর্ষক বাবাকে থানায় নিয়ে আসেন।
গ্রেপ্তাররকৃত মোহাম্মদ আলী উল্লিখিত এলাকার মৃত এমদাদ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় ওই কন্যা সন্তানের মা বাদী হয়ে বাবাকে একমাত্র আসামি করে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ধর্ষণের শিকার ১২/১৩ বছর বয়সী কন্যাটি স্থানীয় কেফায়েত উল্লাহ-কবির আহমদ উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদীর সাথে ২০১০ সালের দিকে মোহাম্মদ আলীর বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে ২ ছেলে ও ২ কন্যা সন্তান রয়েছে। এদের মধ্যে ধর্ষণের শিকার কন্যাটি পরিবারের বড় মেয়ে। বিগত ১০-১৫ দিন আগে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পেট ব্যাথা বলে বমি করতে থাকে। বিষয়টি তার মা জানতে চাইলেও সে ভয়ে মাকে বলেনি।
মঙ্গলবার (২২এপ্রিল) পুনরায় মেয়ের পেট ব্যাথা ও বমি শুরু হলে স্বামীকে দিয়ে তাকে উপজেলার কেরানীহাট এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। মেয়ে আড়াই মাসের গর্ভবতী জেনে চিকিৎসক স্বামীর মাধ্যমে মেয়ের মাকে হাসপাতালে ডেকে পাঠাই। মেয়ের অবস্থা খারাপ দেখে গর্ভপাত করানো হয়।
এজাহার থেকে আরও জানা যায়, বাবার দ্বারা চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক বারটার দিকে তার শয়নকক্ষে প্রথম বার ধর্ষণের শিকার হয় মেয়েটি। প্রথম ঘটনার পর মেয়েটি তার শয়নকক্ষে একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হলেও মা ও মেয়েকে মেরে ফেলার ভয় দেখানোর কারণে বিষয়টি মা কে জানায়নি মেয়েটি।
মেয়েটির মা বলেন, বিষয়টি মেয়ের বাবাকে জিজ্ঞাসা করলে সে ধর্ষণের বিষয়টি আমার কাছে স্বীকার করে। বিষয়টি কাউকে না বলার অনুরোধ করেন। এ বিষয়টি শুনে আমি হঠাৎ স্তম্ভিত ও জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ি। পরে আমার ভাইকে হাসপাতালে ডেকে নিয়ে যাই। ভাইসহ নিকট আত্মীয়দের সাথে পরামর্শ করে স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করি।
স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এ ঘটনাটি সাতকানিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিষয়টি বলতে আমার খুবই লজ্জা লাগছে। আমি মনে করি, মানসিক বিকারগ্রস্ত লোক ছাড়া এ ধরনের কাজ কেউ করতে পারে না।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জাহেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালেই ধর্ষক বাবাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নরপিশাচ বাবা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মেয়ের মা বাদী হয়ে বাবাকে একমাত্র আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। ধর্ষককে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।আ