
তালিকা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দুদকের
ডেস্ক : রাতের ভোটের কারিগর সাবেক জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হচ্ছে। সাবেক ডিসিদের তালিকা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে দুদক থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ২০১৮ সালে দিনের ভোট আগের রাতেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্সভর্তি করা হয়েছিল। দিনের ভোট রাতে করা, ব্যালট জালিয়াতি, অনেক কেন্দ্রে অবিশ্বাস্যভাবে ৯০ শতাংশের বেশি কাস্টিং দেখানো, ব্যাপক আর্থিক লেনদেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রার্থীকে বিজয়ী করে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এর মূল কারিগর ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকরাই, ছিলেন মূলত রিটার্নিং অফিসার। তাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশেই পুলিশ, প্রিজাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসাররা দেশের নির্বাচনী ইতিহাসের এই কলঙ্কজনক কাজটি সম্পাদন করেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ অবসরে গিয়ে দেশে-বিদেশে বিলাসবহুল জীবন-যাপন করছেন। তবে অধিকাংশই এখনো প্রশাসনে বহাল তবিয়তে আছেন। সাবেক বিভাগীয় কমিশনার ও সাবেক সরকারের সাজানো প্রশাসন। এছাড়া দুদকে ওই নির্বাচন সংক্রান্ত দুর্নীতি, জালিয়াতি ও প্রতারণার পৃথক কিছু অভিযোগও জমা পড়েছে। গত ২০১৮ সালে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের নামে তালিক চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে দুদক।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগ (এপিডি)-এর অতিরিক্ত সচিব মো. ওবায়দুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, আমি এবং জনপ্রশাসন সচিব দেশের বাহিরে আছি। তার পর দুদক থেকে কোনো চিঠি আসলে আমরা তালিকা দিবো। তবে এ তালিকা আমরা প্রস্তুত করে রেখেছি। চিঠি পাওয়ার সাথে সাথে দেয়া হবে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও পতিত সরকারে আমলারা প্রশাসনে এখনো দাপটের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। সেইসব রিটার্নিং অফিসাররা কে কোথায় আছেন তার একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাঠকদের জন্য নিম্নে দেয়া হচ্ছে এর মধ্যে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আলী আজম, সাবেক ঢাকা জেলার ডিসি ও বর্তমান যুগ্মসচিব আবু সালেহ মো. ফেরদৌস খান, গাজীপুরের সাবেক ডিসি ও অতিরিক্ত সচিব ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির (বিএনপি পন্থী কর্মকর্তা বলে পরিচিত), নারায়ণগঞ্জের সাবেক ডিসি রাব্বী মিয়া, নরসিংদী জেলার ডিসি সৈয়দ ফারজানা কাওনাইন, মানিকগঞ্জ জেলার সাবেক ডিসি এস এম ফেরদৌস, মুন্সীগঞ্জ জেলার সাবেক ডিসি সায়লা ফারজানা, ফরিদপুর জেলার সাবেক ডিসি উম্মে সালমা তানজিয়া, শরীয়তপুর জেলার সাবেক ডিসি কাজী আবু তাহের, মাদারীপুর জেলার সাবেক ডিসি মো. ওয়াহেদুল ইসলাম, গোপালগঞ্জের সাবেক ডিসি মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান সরকার, রাজবাড়ি জেলার সাবেক ডিসি ও অতিরিক্ত সচিব মো. শওকত আলী, কিশোরগঞ্জ জেলার সাবেক ডিসি মো. সারোয়ার মোর্শেদ চৌধুরী, টাঙ্গাইল জেলার সাবেক ডিসি মো. শহিদুল ইসলাম, বি-বাড়িয়া জেলার হায়াত-উদ-দৌলা খান, কুমিল্লা জেলার সাবেক ডিসি মো. আবুল ফজল মীর, চাঁদপুর জেলার সাবেক ডিসি মো. মাজেদুর রহমান, লক্ষীপুর জেলার সাবেক ডিসি অঞ্জন চন্দ্র পাল, ফেনীর জেলার সাবেক ডিসি মো. ওয়াহেদুজ্জামান, নোয়াখালী জেলার সাবেক ডিসি ও যুগ্মসচিব তন্ময় দাস, চট্টগ্রাম জেলার সাবেক ডিসি মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, কক্সবাজার জেলার সাবেক ডিসি কামাল হোসেন, বান্দরবান জেলার সাবেক ডিসি মো. দাউদুল ইসলাম, রাঙ্গামাটি জেলার সাবেক ডিসি এ কে এম মামুনুর রশিদ, খাগড়াছড়ি জেলার সাবেক ডিসি মো. সাহেদুল ইসলাম, সিলেটের সাবেক ডিসি ও (বর্তমান মিনিস্টার সউদী বাংলাদেশ দুতাবাস) কাজী এমদাদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলার সাবেক ডিসি তোফায়েল ইসলাম, সুনামগঞ্জ জেলার সাবেক ডিসি মোহাম্মদ আবদুল আহাদ, হবিগঞ্জ জেলার সাবেক ডিসি মাহমুদুল কবির মুরাদ, ময়মনসিংহ জেলার সাবেক ডিসি ড. সুবাদ চন্দ্র বিশ্বাস, নেত্রকোনা জেলার সাবেক ডিসি ময়নুল ইসলাম, শেরপুর জেলার সাবেক ডিসি ও বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব আনারকলি মাহবুব, জামালপুর জেলার সাবেক ডিসি আহমেদ কবির(ওএসডি), পঞ্চগড় জেলার সাবেক ডিসি ও বর্তমানে যুগ্মসচিব সাবিনা ইয়াসমিন, লালমনিরহাট জেলার সাবেক ডিসি ও অতিরিক্ত সচিব (বিএনপি পন্থী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত) মোহাম্মদ শফিউল আরিফ, গাইবান্ধা জেলার সাবেক ডিসি সেবাঞ্জিন রেমা ও আব্দুল মতিন, ঠাকুরগাঁও জেলার সাবেক ডিসি ড. কে এম কামরুজ্জামান, কুড়িগ্রাম জেলার আলোচিত সাবেক ডিসি মোসা. সুলতানা পারভীন, দিনাজপুর জেলার সাবেক ডিসি মো. মাহমুদুল আলম, নীলফামারী জেলার সাবেক ডিসি নাদিয়া শিরিন, রংপুর জেলার সাবেক ডিসি এনামুল হাবিব, নওগাঁ জেলার সাবেক ডিসি মো. মিজানুর রহমান, জয়পুরহাট জেলার সাবেক ডিসি মোহাম্মদ জাকের হোসেইন, বগুড়া জেলার সাবেক ডিসি ফয়েজ আহমেদ, নাটোর জেলার সাবেক ডিসি মোহাম্মদ গোলামুর রহমান, পাবনা জেলার সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন, সিরাজগঞ্জ জেলার সাবেক ডিসি কামরুন নাহার সিদ্দিকা, চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাবেক ডিসি এ জেড এম নুরুল হক, সাতক্ষীরার সাবেক ডিসি এস এম মোস্তফা কামাল, যশোর জেলার সাবেক ডিসি মো. আবদুল আউয়াল, বাগেরহাট জেলার সাবেক ডিসি তপন কুমার বিশ্বাস, খুলনা জেলার সাবেক ডিসি মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, ঝিনাইদহ জেলার সাবেক ডিসি সরোজ কুমার নাথ, চুয়াডাঙ্গা জেলার সাবেক ডিসি গোপাল চন্দ্র দাস, কুষ্টিয়া জেলার সাবেক ডিসি মো. আসলাম, মেহেরপুর জেলার সাবেক ডিসি মো. আতাউর গনি, নড়াইল জেলার সাবেক ডিসি আঞ্জুমান আরা, মাগুরা জেলার সাবেক ডিসি মো. আলী আকবার, বরিশাল জেলার সাবেক ডিসি এস এম আজিয়ার রহমান, পিরোজপুর জেলার সাবেক ডিসি আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন, ভোলা জেলার সাবেক ডিসি মোহাম্মদ মাসুদ আলম, ঝালকাঠি জেলার সাবেক ডিসি হামিদুল হক, পটুয়াখালী জেলার সাবেক ডিসি মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী এবং বরগুনা জেলার সাবেক ডিসি কবির মাহমুদ। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে ওএসডি ও বদলী করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের প্রায় ৬ মাস পেড়িয়ে গেলেও এখনো প্রশাসনের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ফ্যাসিবাদী কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করে আসছে তাদের ঘুরে ফিরে ভালো ভালো মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হচ্ছে। এদিকে ২০১৮ সালে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের নামের তালিকা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে দুদক।
জানা গেছে, গত ২০১৮ সালে বিএনপি-জামায়াতকে মেরে-কেটে ক্ষমতায় বসতে শেখ হাসিনা দু’হাতে অর্থ ছিটান। আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী, পুলিশ, আমলা, ডিসি, এসপিদের দেয়া হয় এ অর্থ। দলীয় ক্যাডারদের মাঝে অর্থ বিলানো হয় বস্তা বস্তা। তবে সরকারি হিসাবে এ অর্থের পরিমাণ ছিলো ৭শ’ কোটি টাকা। এর মধ্যে ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে’ পুলিশকে আগাম অর্থ বরাদ্দ দেন ২শ’ ৭২ কোটি টাকা। অ্যাডভান্স পাওয়া টাকার মধ্যে ৬৩ কোটি ২২ হাজার টাকা। র্যাবকে ১০ কোটি ২০ লাখ ২৯ হাজার। কোস্টগার্ডকে ১ কোটি ৫৬ লাখ। বিজিবিকে ৩৩ কোটি ২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। আনসার ও ভিডিপিকে দেয়া হয় ১শ’ ৬৩ কোটি ৮১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ওই বছর ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় কথিত এ ‘নির্বাচন’। এর আগে ওই বছর ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছিলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খাতওয়ারি ৭শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ওই নির্বাচনে একেকটি কেন্দ্রে ১৪ থেকে ১৬ জন নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন। প্রতি নিরাপত্তাকর্মীকে প্রাপ্য অর্থের দ্বিগুণ, তিন গুণ করে দেয়া হয়। যে নির্বাচন পরবর্তীতে ‘রাতের ভোটের নির্বাচন’ কুখ্যাতি পায়। বাস্তবে জালিয়াতি ও প্রতারণাপূর্ণ নির্বাচনে মানুষকে ভোট দিতে হয়নি। ভোট গ্রহণের আগের রাতে দলীয় কর্মী, পুলিশ এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ব্যালট বাক্স ভরে রাখেন। প্রহসনের ওই নির্বাচনের যাবতীয় খরচ কার্যত ছিলো রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় এবং আত্মসাৎ। নির্বাচনের নামে অর্থ অপচয়, আত্মসাৎ, জালিয়াতি ও জাতির সাথে প্রতারণার অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অসুন্ধানের জন্য একটি শক্তিশালী টিম গঠন করেছেন সংস্থাটি।
গত বুধবার কমিশনের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান সংস্থার মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, গত ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দিনের ভোট রাতে করার অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। এ লক্ষ্যে একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়ম, যেমন- দিনের ভোট রাতে করা, ব্যালট জালিয়াতি, অনেক কেন্দ্রে অবিশ্বাস্যভাবে ৯০ শতাংশের বেশি কাস্টিং দেখানো, ব্যাপক আর্থিক লেনদেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রার্থীকে জেতানো ইত্যাদি নানা অভিযোগ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া দুদকে ওই নির্বাচন সংক্রান্ত দুর্নীতি, জালিয়াতি ও প্রতারণার পৃথক কিছু অভিযোগও জমা পড়েছে। এসব অভিযোগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি মহানগর, জেলা, বিভাগীয়, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মী নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, যেমন- পুলিশের তৎকালীন আইজি জাভেদ পাটোয়ারী, ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, র্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, পুলিশের সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকি, তৎকালীন জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ.টি ইমাম, জেলা প্রশাসক, জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা, বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জ ডিইজি, পুলিশ সুপার, থানার অফিসার ইনচার্জ, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং অফিসারসহ নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তার যোগসাজসের তথ্য রয়েছে। ওই সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র্যাব ও পুলিশকে যে অর্থ দেয়া হয় তার দুই-তৃতীয়াংশই প্রতিষ্ঠান দু’টির শীর্ষ কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে দুদক সূত্র থেকে এ তথ্য জানিয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ১১৬ ডিসি-এসপির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। এসব কর্মকর্তা হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে বিরোধীদের বিরুদ্ধে লাখ লাখ মামলা, গায়েবী মামলা, গুম, খুন এবং আয়না ঘরে আটক রাখেন।
নির্বাচনের নামে ২০১৮ সালে যা ঘটিয়েছিলেন হাসিনা : নিজ ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা আগে থেকেই নানা রকম ফন্দি আটেন। নির্বাচন সামনে রেখে ২০১৭ সাল থেকে নানা লেয়ারে সাজাতে থাকেন ব্যুরোক্রেসি ও পুলিশ প্রশাসন। অনুগত রাজনৈতিক দলগুলোকে জোটভুক্ত করে আগেই পক্ষে নিয়ে নেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগে করা মামলায় কারাদÐ দিয়ে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা দেয়া হয়। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও মিথ্যা মামলায় কারাদন্ড দিয়ে নির্বাসিত জীবন যাপনে বাধ্য করেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পুরো পরিবারকেই মামলার পর মামলা দিয়ে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে পর্যুদস্ত করা হয়। অন্যদিকে নির্বাচনকে ‘বৈধতা’ দিতে কৌশলে গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেনকে দিয়ে ‘জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট’ গঠন করান। বিভ্রান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে ওই জোটে বিএনপিকেও যুক্ত করা হয়। এসব তৎপরতা সুস্পষ্ট হয় ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে। ‘জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট’ নামের নতুন জোট আত্মপ্রকাশ করে ওই বছর ১৩ অক্টোবর। এরই মধ্যে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ‘একাদশ সংসদ নির্বাচন’। ওইদিন ২৯৯টি আসনে ‘ভোট গ্রহণ’ দেখানো হয়। এর মধ্যে আ’লীগ এবং জাতীয় পার্টি ও মহাজোট ২৮৮টি আসনে ‘জয়ী’ দেখানো হয়।ই