দেশরক্ষায় ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল সেনাবাহিনী : চিফ প্রসিকিউটর

অনলাইন ডেস্ক : দেশরক্ষায় সেনাবাহিনী ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, আমাদের দেশপ্রেমিক বাহিনী রয়েছে সেনাবাহিনী। যাদের সবসময় ভালোবাসে দেশের জনগণ। তাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী বলা হয়। রাস্তায় দেখলে মানুষ তাদের বুকে জড়িয়ে ধরেন। গত বছরের ৩ আগস্ট যখন পুলিশ নির্বিচারে মানুষ মারছে, সেনাবাহিনী তখন ছাত্র-জনতার মাঝখানে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে শেখ হাসিনার মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, মিরপুরে পুলিশ যখন ছাত্রদের গুলি করে মারছিল, মাঝখানে সেনাবাহিনী দাঁড়িয়ে উল্টো পুলিশ বাহিনীর ওপর ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে তাদের ডিসপার্স (ছত্রভঙ্গ) করেছেন। বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্তভাবে হয়তো কোনো ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বাহিনী হিসেবে তারা বিরাট ভূমিকা পালন করেছে। এসব কথা আমরা আদালতে তুলে ধরেছি। সবমিলিয়ে এই বাহিনী ছাড়া বাকি সব রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপরাধ সংঘটনে ব্যবহার করেছিল শেখ হাসিনার সরকার। সুতরাং এটা সুস্পষ্টভাবেই মানবতাবিরোধী অপরাধ। এর ‘চরম দণ্ড’ নিশ্চিতের মাধ্যমে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যেন এ ধরনের কোনো হত্যাকাণ্ডের সুযোগ তৈরি না হয় কিংবা কোনো স্বৈরশাসক নিজের জনগণকে হত্যার দুঃসাহস না দেখান; এর জন্যই এ বিচার যেন ভূমিকা পালন করে সেটা আমরা আদালতের কাছে প্রার্থনা করেছি।

জাতির উদ্দেশ্যে তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত ও সঠিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকার ছিল। আশা করি আমরা সেই অঙ্গীকার রক্ষা করতে পেরেছি। আমরা আদালতে একেবারে স্পষ্টভাবে তাদের অপরাধ প্রমাণ করেছি। এমন দৃঢ় প্রমাণ শৃঙ্খল উপস্থাপন করা হয়েছে, হিমালয়ের মতো দৃঢ় ও হীরার চেয়েও স্বচ্ছ। এর মধ্য দিয়ে কেউ বলতে পারবে না যে কারও প্রতি কোনো অবিচার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতসহ (আইসিসি) দুনিয়ার যেকোনো আদালতে এই সাক্ষ্যপ্রমাণকে যদি নিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে প্রত্যেক আসামির সর্বোচ্চ দণ্ড নিশ্চিত হবে। এটা আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। সুতরাং ব্যক্তিগতভাবে কাউকে ভুক্তভোগী করা বা প্রতিহিংসা নয়; ইতিহাসের একটা মীমাংসা ও বাংলাদেশকে নিরাপদ করাসহ ভবিষ্যতের স্বৈরশাসকত্বের জন্য সতর্ক বার্তা দিতে এই বিচার একটা চূড়ান্ত রায় হবে।

এদিন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে টানা পাঁচদিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছে প্রসিকিউশন। শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী সোমবার (২০ অক্টোবর) দিন ধার্য করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেল এ দিন নির্ধারণ করেন।ই

মন্তব্য করুন