কোটা নয় মেধায় চাকরি হওয়া উচিত -নায়ক মুক্তিযোদ্ধা সোহেল রানা

নিজস্ব প্রতিনিধি : সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। এছাড়া দেশের সিংহ ভাগ সাধারণ মানুষও এই কোটা পদ্ধতির বিপক্ষে। সাধারণ না হয়েও সেই দলে এবার যোগ দিলেন ১ সময়ে বাংলা সিনেমার নায়ক প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা সোহেল রানা। গতকাল সোমবার ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে এই নায়ক জানিয়ে দিয়েছেন, সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি কোটা পদ্ধতির পক্ষে নন, মেধার পক্ষে। তাই কোটা পদ্ধতি বাতিলের পক্ষেই মতামত দিয়েছেন এক সময়ের অ্যাকশন হিরো সোহেল রানা।

জাতীয় পার্টির সাবেক এই নেতা লিখেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের নাম বারবার বলা হচ্ছে কেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫৩ বছর। তার সাথে যদি আরও ১২ বছর যোগ করা হয় তাহলে তার বয়স হয় ৬৫। এই বয়সে তো নিশ্চয়ই কেউ চাকরির জন্য চেষ্টা করে না বা স্কুল-কলেজে ভর্তি হয় না। তাদের সন্তানদের বাবার কারনের জন্য কোটা সিস্টেমে চাকরি এবং ভর্তি হতে হবে, এটা মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করার শামিল।

সোহেল রানা আরো লিখেছেন, ‘নিজ ম্যারিটের গুণে তারা (মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা) ভর্তি হবে, পরীক্ষা দেবে এবং চাকরিতেও ইন্টারভিউ দেবে। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা কখনো এ ধরনের সুযোগ চাইনি। সম্মান যখন নেই, তখন এই ধরনের সুযোগ দিয়ে তার সন্তানদেরকেও সম্মান দেখানো একটা অপচেষ্টা মাত্র।

সরকারের কাছে মুক্তিযোদ্ধা এবং ছাত্রলীগের সাবেক নেতার প্রশ্ন, ‘সম্মানী দেওয়া ছাড়া তাদের (মুক্তিযোদ্ধা) জন্য আপনারা কি করেছেন, মুখে, মুখে? তাদের জন্য মায়া কান্না করেছেন ড্রেস থেকে শুরু করে চিকিৎসা বা চলাফেরা কোনো কিছুতেই কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি। তাই আমরা কখনোই কিছু চাইনি। জাতির পিতার নির্দেশে দেশ স্বাধীন করার দরকার ছিল, আমরা সেটাই করেছি। সর্বস্তরে এই কোটা সিস্টেম বাতিল করা হোক এটা দেশের সকলের দাবি।

বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন সোহেল রানা। দেশ স্বাধীনের পরপরই পা রাখেন চলচ্চিত্র জগতে। প্রযোজক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন পারভেজ ফিল্মস। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যানারেই চাষী নজরুল ইসলামের পরিচালনায় সোহেল রানার প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছিল দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন। যেটি ১৯৭২ সালে মুক্তি পায়।

এরপর নায়ক হিসেবে বহু সিনেমায় কাজ করেছেন সোহেল রানা। কুড়িয়েছেন খ্যাতি। প্রযোজনা করেছেন বেশ কিছু সিনেমা। তবে গত কয়েক বছর ধরে অভিনয় থেকে দূরে সোহেল রানা। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতি করলেও জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। দলটিতে প্রেসিডিয়ামের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে তিনি সামাজিক মাধ্যমেও তেমন সক্রিয় নন। সেই নীরবতা ভেঙে মতামত দিলেন কোটা আন্দোলন নিয়ে। এই মুক্তিযোদ্ধা কোটা নয় মেধারভিত্তি চাকরির পক্ষ্যে অবস্থান নিয়েছেন।ই

মন্তব্য করুন