
নিজস্ব প্রতিনিধি : লোহাগাড়া উপজেলার বটতলী ষ্টেশনে বড় বড় নাম করা ডাক্তারের নামে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে অভিনব কৌশলে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারনা করে আসছেন মোস্তাক আহমেদ নামে এক ব্যক্তি। স্থানীয়রা জানান, বটতলী মোটর ষ্টেশনের দরবেশ হাট রোড, সুমাইয়া প্লাজা নীচতলায়, উপজেলায় কর্মরত স্বনামধন্য ”ডাঃ এস এম আবু সাঈদ ও ডাঃ এম এ এইচ ফেরদৌসের নামে বড় বড় ডিজিটাল সাইনবোর্ড লাগিয়ে তাতে বড় বড় এমবিবিএস ডাক্তারের নাম দিয়ে নিচে ডাঃ মোস্তাক আহমেদ লিখে দেন। পরে ওই বাহারী বিজ্ঞাপন বোর্ডে সু কৌশলে নিজেকে ডাক্তার তকমা লাগিয়ে লোহাগাড়া বটতলী মোটর ষ্টেশনের মত জায়গাতে দিব্যি বড় ডাক্তার সেজে ৬/৭ বৎসর ধরে প্রতারনার মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এই মোস্তাক আহমেদ। উনার কোন প্রকার ডাক্তারী সার্টিফিকেট নেই, নেই কোন উচ্চ প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রী, কিংবা বিএমডিসি’র অনুমোদন নেই যাহাতে করে তিনি ডাক্তার শব্দ টি লিখতে পারেন। সুত্রে প্রকাশ, অত্যন্ত চুপিসারে তিনি তার চেম্বারের পার্শ্বে গোপন রুমে চালিয়ে যাচ্ছেন প্যাথলজিক্যাল ল্যাব, সম্পুর্ন অনুমোদনহীন ভাবে ইউরিন টেস্ট, রক্ত কফ ডায়বেটিস, আমাশয় ডেঙু সহ বিভিন্ন রোগের পরীক্ষা নিরিক্ষাও করে যাচ্ছেন। স্থানীয় আম জনতার সাথে আলাপচারিতায় জানা যায়, সাইনবোর্ডে উল্লেখিত ডাক্তার গন ৭/৮ বৎসর কিংবা তার ও অধিক সময় পুর্বে উক্ত স্থানে চেম্বার করে গিয়েছিলেন কিন্তু মোস্তাক সাহেব শ্রদ্ধার সাথে উনাদের স্মৃতিগুলোকে অম্লান করে রেখে তাহাদের নাম পদবীকে কাজে লাগিয়ে প্রতিনিয়ত চেম্বারে বসেন ডাঃ হিসেবে এবং দৈনিক ২০/৩০ জন রোগী দেখেন। পাশাপাশি উনি খৎনা/ মুসলমানীও করে থাকেন, ছোট ছোট কোমলমতি শিশুদের যাহা সম্পুর্ন ঝুকিপূর্ণ । মাঝে মধ্যে জটিল কঠিন রোগীদের ভর্তি রেখে ও তিনি চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন।
প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় ডাক্তারের সাথে। ওনাকে সাইনবোর্ডে উল্লেখিত ডাক্তারগনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন মাঝে মধ্যে আসেন। কখন আসেন, কয় জন রোগী দেখেন কিংবা সর্বশেষ কখন আসছিলেন ডাক্তার মহোদয় গন, সেটা জিজ্ঞেস করলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি। পরবর্তীতে উনাকে জিজ্ঞেস করা হয়, বাহিরে ডাক্তার মোস্তাক আহমেদ লিখেছেন, কিন্তু আপনার ডাক্তারী প্যাডে শুধু ”মোস্তাক আহমেদ” কেন লিখেছেন জানতে চাইলে উনি বলেন এটা আপনাকে বলব কেন, এটা আপনাকে বলা যাবে না, আপনি বুঝে নেন, আবার বললেন আপনি কি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেউ নাকি যে আপনাকে বলতে হবে।’ তাছাড়া আপনার সাথে কথা বলতে আমার ভাল লাগছে না”। এব্যাপারে জানতে চাইলে, লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ইকবাল হোসাইন বলেন, এধরনের অভিযোগ পেয়েছি, কিছু কিছু অসাধু প্রতারক চক্র, লোহাগাড়ার বিভিন্ন স্থানে চুপিসারে কিংবা প্রকাশ্য বসে ডাঃ লিখে গ্রামের সহজ সরল সাধারন মানুষকে বোকা বানিয়ে তাদের সাথে প্রতারনা করে আসছেন। যাহারা এহেন কর্মকান্ডে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা বলে অতি শীগ্রই সকল প্রকার ভুয়া ডাক্তার গনের চেম্বারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মং অছেন বলেন, অতি শীগ্রই সকল ভূয়া ডাক্তারগনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।