এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়লেন চেয়ারম্যান

শৈলুমং মার্মা (রুমা) বান্দরবান : বান্দরবানে রুমায় উপজেলা কনফারেন্স কক্ষে উপজেলা মাসিক সভা চলাকালীন সময়ে ১নং পাইন্দু ইউনিয়নে ৮ নং ওয়ার্ডের প্রাংসা ও মুয়ালপি পাড়া বাসীরা ১নং পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা বিরুদ্ধে সরকারি বি ডাব্লিউবি (VWB) চাউল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সভা কক্ষে প্রবেশ করেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ইউএনও মহোদয়ের বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেন। তারা জানান, সরকারি চাউল সুবিধা ভোগীদের মধ্যে সঠিক ভাবে বিতরণ করা হয়নি এবং কিছু অসৎ ব্যক্তির সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।

মাসিক সভার উপস্থিত অন্যান্য সদস্যরা অভিযোগটি গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিষয়টি খতিয়ে দেখার এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

বাসিন্দারা অনিয়ম বন্ধে নিয়মিত ও স্বচ্ছ চাউল বিতরণের দাবি জানান। তারা আশা করছেন, উপজেলা প্রশাসন এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
উপস্থিত বিক্ষোভ কারী মংহ্লা মারমা অভিযোগ করেন, সরকারের নিয়ম নীতি ও দিক নির্দেশনা উপেক্ষা করে চেয়ারম্যান যেমন খুশি তেমন তার পরিষদ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন দীর্ঘকাল ধরে। ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ৬ মাসের জন্য পাইন্দু ইউনিয়নে ৩৭৯ জন উপকার ভুগী নির্বাচিত হয়। এর মধ্যে ৮ নং ওয়ার্ডে ৩৯ জন। ৬ মাসে ১৮০ কেজি চাউল পাওয়ার কথা থাকলেও ৪০ কেজি বকেয়া চাউল না দেয়ার শত চেষ্টা করেন চেয়ারম্যান। তাই আজ আমরা বিক্ষোভ করছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ১নং পাইন্দু ইউনিয়নের সদস্য গণ যারা আছেন তারাও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযোগ করলেও তার কোন প্রতিকার কিংবা সমাধান কখনো চোখে পরেনি। বিভিন্ন সময়ে প্রকৃত সুবিধা ভোগীদের বাদ দিয়ে আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠ মহলকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। যার কারণে এলাকার অসহায় ও দরিদ্র মানুষ প্রাপ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
অভিযোগ কারীরা আরও জানান, চাউল বিতরণের জন্য যে তালিকা প্রণয়ন করার নিয়ম রয়েছে তা যথাযথ ভাবে অনুসরণ করা হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও সংশ্লিষ্টদের মতামত ছাড়াই একক ভাবে তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। অনেক জায়গায় যাচাই-বাছাই ছাড়াই নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা স্বচ্ছতার ঘাটতি তৈরি করেছে।
এ সময় সভায় উপস্থিত উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারাও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকারি ত্রাণ ও বরাদ্দ জনগণের কল্যাণের জন্য দেওয়া হয়। কিন্তু যদি সেখানে অনিয়ম বা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে, তাহলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এবং প্রকৃত ভুক্ত ভোগীরা বঞ্চিত হন।
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আদনান চৌধুরী জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, সরকারি যে কোনো বরাদ্দ জনগণের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে, ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থে নয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের বিতরণ কার্যক্রম স্বচ্ছতা ও জবাব দিহিতা বজায় রেখে সম্পন্ন করার জন্য দায়িত্ব প্রাপ্ত উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, খালেক রউজান কে কঠোর ভাবে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষ বলছেন, বরাদ্দকৃত চাউল যদি প্রকৃত প্রাপকদের না পৌঁছায় তবে এ ধরনের প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। তারা প্রশাসনের কাছে স্বচ্ছ তদন্ত ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন প্রাংসা ও মুয়ালপি পাড়া বাসীরা।

মন্তব্য করুন