
ডেস্ক : ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, মহানবী (সা.) হলেন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রপথিক। তিনি পনেরশ’ বছর আগে মানবাধিকারের কথা বলে গেছেন।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আধুনিক বিশ্বে জনপ্রিয় পরিভাষা মানুষের অধিকার, নারী কিংবা শিশুর অধিকার, মত প্রকাশের অধিকার প্রভৃতি বিষয়ে দেড় হাজার বছর আগেই নবী (সা.) কথা বলে গেছেন। তিনি কেবল তত্ত্বই দিয়ে যাননি তিনি তত্ত্বকে বাস্তবায়ন করে গেছেন। এ প্রসঙ্গে রাসূল (সা.) এর হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, অনারবের ওপর আরবের কিংবা আরবের ওপর অনারবের, কালো মানুষের ওপর সাদা মানুষের অথবা সাদা মানুষের ওপর কালো মানুষের বিশেষ কোন মর্যাদা বা প্রাধান্য নেই। বর্ণবৈষম্য ও জাত্যাভিমানের অবলোপন করে গেছেন হযরত মুহাম্মদ (সা.)।
রাসূল (সা.) প্রণীত মদিনার সনদকে প্রথম লিখিত সংবিধান উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, রাষ্ট্র পরিচালিত হয়ে থাকে সংবিধানের মাধ্যমে। এই সংবিধানের ধারণা প্রথম দিয়ে গেছেন হযরত মুহাম্মদ (সা.)। মেসোপোটেমিয়ায় হাম্বুরাবি প্রণীত ‘দি কোড অব হাম্বুরাবি’তে অনেক অসঙ্গতি আছে। কিন্ত রাসূল (সা.) দেড় হাজার বছর আগে ‘মদিনার সনদ’ নামে যে সংবিধান দিয়ে গেছেন সেটা অনন্য বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। রাষ্ট্র সংবিধান অনুসারে চলবে-এটাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন হযরত মুহাম্মদ (সা.)।
নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর অবদান অবিস্মরণীয় উল্লেখ করে ড. খালিদ বলেন, প্রাচীন রোমান, পারস্য ও ভারতীয় সাম্রাজ্যে নারীদেরকে দোজখের দরজা ও শয়তানের মুখপাত্র হিসেবে গালমন্দ করা হতো। কিন্ত মহানবী (সা.) ঘোষণা দিলেন, মায়ের পায়ের নিচে জান্নাত। আমাদের প্রিয় নবী (সা)’র এই মহৎ ঘোষণা নারী জাতিকে মর্যাদার শিখরে নিয়ে অধিষ্ঠিত করেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে তাঁর আগে কেউ নারীকে এরূপ মার্যাদায় দেননি।
এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা হযরত আয়েশা (রা) এর শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে মহানবী (সা.)এর অবদান তুলে ধরেন। উপদেষ্টা রাসূল (সা.) এর সীরাত মেনে চলার মধ্য দিয়ে জীবনকে আলোকিত করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তৃতা করেন। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদদীনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ট্টেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আঃ ছালাম খান ও জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ মুফতি আব্দুল মুনয়িম খাঁন মহানবী (সা.) এর সীরাতের ওপর আলোচনা করেন। পরে অতিথিরা ঈদ-ই- মিলাদুন্নবী (সা.) এর উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত কেরাত, নাতে রাসূল (সা.), ক্যালিওগ্রাফ ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।ই