
অনলাইন ডেস্ক : ‘মানুষ তখনই পশুতে পরিণত হয়, যখন তার লজ্জা বলতে কিছু থাকে না’ সুইন বার্ন এর বিখ্যাত এই উক্তিটি আজ আপনার মনে হতেই পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী ইসরায়েলের হয়ে ইরানে হামলা চালানোর পর। যে ইসরায়েল বিগত দুই বছর ধরে ফিলিস্তিনে আগ্রাসন চালাচ্ছে, নির্বিচারে নরপিশাচের মত হত্যা করছে অসহায় মুসলমানদের তাদেরই পক্ষ নিয়ে ইরানে হামলা চালালো কি না আমেরিকা? এ যেনো চরম লজ্জাহীনতার বিরল দৃষ্টান্ত। ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু গবেষণা কর্মসূচিতে আগ বাড়িয়ে হামলা চালিয়ে ইরানের রোষানলে পড়ে ইহুদিবাদি ইসরায়েল আর এবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পক্ষ নিয়েই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলা চালালেন ইরানের পরমাণু ঘাঁটিতে। এ যেনো আমেরিকার ইহুদিবাদী ইসরায়েলের হয়ে তাবেদারিরই নির্লজ্জ বেহায়পনার বহিঃপ্রকাশ।
বোমারু বিমান ব্যবহার করে ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটি ফর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানতে আজ হামলা চালায় ট্রাম্পের সেনারা। ইসলাম বিদ্বেষী ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মত একই পথে যেনো হাটলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। তিনি ইরানে আদৌ হামলা চালাবেন কি না তা দুই সপ্তাহের মধ্যে জানানোর কথা থাকলেও আচমকা মুসলিম দেশটিতে হামলা চালিয়েই বসলেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এমন হটকারী লজ্জহীন সিদ্ধান্ত শুধু মার্কিন আমেরিকাকেই বিপদে ফেলবে না বরং তার শুরু করা এই সংঘাতের রেশ ছড়িয়ে পড়তে পারে বিশ্বব্যাপী।
ইরানের পাশে থাকার ঘোষণা যে আগেই দিয়ে রেখেছে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়া, চীন ও উত্তর কোরিয়া। শুধু ওরাই নয় পাশে রয়েছে তুরস্ক, পাকিস্তানের মত মুসলিম পরশক্তিও। ইরানের হয়ে এখন যদি ওরাও নেমে পড়ে যুদ্ধের ময়দানে তাহলে বিশ্বযুদ্ধও আটকাতে পারবে না কেউ, এমনটিই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অন্যদিকে এই হামলা চালানোর পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে আবারো হামলার হুমকি দিয়েছেন। এসময় তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, শান্তির পথে না এলে ইরানকে আরও বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে। একইসঙ্গে তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের হাতে এখনও বহু লক্ষ্যবস্তু বাকি রয়েছে ইরানের। ট্রাম্প এভাবে হুংকার দিলেও তাতে যেনো থোরাই কেয়ার এখন ইরানের।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি আমেরিকার এই হামলার কথা আগেই আন্দাজ করতে পেরে পুরোনো একটি ভিডিও অফিসিয়াল টেলিগ্রাম একাউন্টে পোষ্ট করে রীতিমতো আমেরিকাকে হুংকার দিয়ে রেখেছিলেন। আর হামলার পর তাদের মিত্র ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠী ট্রাম্পের এই হামলাকে যুদ্ধের সূচনা হিসেবে বর্ণনা করে আমেরিকাকে উচিৎ শিক্ষা দেওয়ার হুংকার দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যে ভুল করেছিলো কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী নেতানিয়াহু ঠিক একই ভুল করে বসলেন ইহুদিবাদী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। ইসরায়েল আগ বাড়িয়ে ইরানে হামলা চালাতে গিয়ে এখন যে খেসারত দিচ্ছে ঠিক একইভাবে খেসারত দিতে হতে পারে আমেরিকাকেও। কারণ, ইরানের মুসলিম যোদ্ধারা পরোয়া করে না মৃত্যুর। আর যুক্তরাষ্ট্রের চালানো হামলার পরপরই ইরানের প্রশাসন জানিয়ে দেয় পারমাণবিক যে তিন স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে আমেরিকা তা আগেই খালি করা হয়। সুতরাং ইরানের তেমন কোন ক্ষতিই হয়নি এই হামলায়।
ইসলাম বিদ্বেষী ইহুদিবাদী ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে নির্লজ্জ বেহায়ার মতো আমেরিকা ইরানে হামলা চালিয়ে বিশ্বজুড়ে যে নতুন অশান্তির আগুন জ্বালালো তা কতদূর কোন পর্যন্ত গড়াবে তা সময়ই বলে দিবে। কিন্তু, ইরানে হামলা চালিয়ে দেশটির শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিতে আঘাত হেনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুরো বিশ্বের মানুষের কাছেই এখন খলনায়কে রূপান্তরিত হলো তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।ই