
খবর ডেস্ক :
আবারও শান্তিপূর্ণ উপায়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে সর্বনিম্ন বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়নের বিরুদ্ধে চলমান দমনপীড়নে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান জানিয়ে দেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। ওই সাংবাদিক জানতে চান যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শ্রম অধিকার নীতি প্রসঙ্গে। তিনি প্রশ্ন করেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সম্প্রতি উল্লেখ করেছেন যে, যারা শ্রমিক অধিকার লংঘন করবেন, হুমকি দেয়ায় জড়িত থাকবেন অথবা শ্রমিকদের ভীতি প্রদর্শন করবেন, প্রয়োজন হলে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতে পারে। বাংলাদেশের গার্মেন্ট শ্রমিক কল্পনা আক্তারের সংগ্রামের কথা উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সম্প্রতি বেতন বৃদ্ধির আন্দোলনে ৫ জন শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র কি কোনো ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, গত সপ্তাহে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোরালোভাবে বলেছেন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকার বিশ্বজুড়ে সুরক্ষিত ও অনুমোদনে আমরা কিভাবে সরকারসমূহ, শ্রমিক, শ্রম অধিকার বিষয়ক সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, নাগরিক সমাজ এবং বেসরকারি খাতের সঙ্গে যুক্ত থাকি। বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্য যেকোনো স্থানে আমরা সেটাই অব্যাহতভাবে করে যাবো। তিনি আরো বলেন, সর্বনিম্ন বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি যে সহিংসতা হয়েছে তার নিন্দা জানাই আমরা। একইভাবে বৈধ শ্রমিক এবং ট্রেড ইউনিয়নের কর্মকাণ্ডকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করাকেও নিন্দা জানাই। শ্রমিক এবং ট্রেড ইউনিয়নগুলোর বিরুদ্ধে চলমান নিপীড়নের বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমাদের নীতি হলো, যেমনটা আমরা পূর্বেও বলেছি, সেটা হলো- শ্রমিকরা যাতে সহিংসতার ভয়, প্রতিশোধ নেয়ার ভয় বা ভীতি প্রদর্শনের ভয় ছাড়া স্বাধীনভাবে তাদের অধিকারের দাবিতে সমাবেশ করতে এবং সামষ্টিকভাবে দর কষাকষি করতে সক্ষম হন- তা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে। বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাপী আমাদের কাজের মাধ্যমে আমরা এসব মৌলিক মানবাধিকারকে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর।
সাংবাদিক সাংবাদিক তার কাছে আরো জানতে চান, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আরেকটি একপেশে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাাচ্ছে। বিরোধীদের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চলছে। এর মধ্যে আছে হত্যাকাণ্ড, গণগ্রেপ্তার, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী ও তাদের পরিববারের সদস্যদের অপহরণ। বাংলাদেশে যেহেতু এক দলের বিরুদ্ধে অন্য কোনো দলকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপের আহ্বান আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে ক্ষমতাসীন দল। সুতরাং বাংলাদেশে একদলীয়, কর্তৃত্ববাদী শাসন রোধে কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন আপনারা?
ম্যাথিউ মিলার বলেন, আপনি ঠিকই বলেছেন। আমরা একদলের বিরুদ্ধে অন্য দলের পক্ষে অবস্থান নিই না। বাংলাদেশি জনগণ যা চায়, আমরাই তাই চাই। তা হলো-শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। আমরা সরকার, বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ ও অন্য অংশীদারদের সঙ্গে অব্যাহতভাবে যুক্ত থেকে তাদেরকে বাংলাদেশি জনগণের সুবিধার জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাবো।