
চট্টগ্রাম জেলা অন্তর্ভুক্ত সাতকানিয়া উপজেলায় ১৭ নম্বর সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানর বিরুদ্ধে ৭ জন ইউপি সদস্য জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করে। সদস্যদের অনাস্থা। ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যকে আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব অর্পণ করায় একই ইউপির অপরাপর সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে অনাস্থা জানিয়েছে। এই বিষয়ে সম্প্রতি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ৭ জন সদস্য। অভিযোগের বিষয় তদন্ত করে সাতকানিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও বর্তমানে প্যানেল চেয়ারম্যান মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এই অভিযোগ করেন।
জানা যায়, সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্যের লিখিত অভিযোগ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে গত ৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার এসএমএন জামিউল হিকমা সাক্ষরিত ০৫.৪২. ১৫০০. ৭০১.৭০.০১৪.২৫.৫৭১ স্বারকমূলে যাচাই বাছাই পূর্বক সুস্পষ্ট মতামতের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রেরণ করেন।
বর্তমানে তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য বিষয়টি সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অধীনে এসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রামার ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ার হোছাইনের কাছে তদন্তাধীন আছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে দেয়া ইউপি সদস্যদের অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে সাতকানিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার/ভূমির অধীনে পরিষদের আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব ভালো ভাবে পরিচালিত হয়ে আসছিল, কিন্তু চলতি বছরের ৭ আগস্ট জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে পূর্বের চেয়ারম্যান প্যানেল থাকা সত্ত্বেও সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মহিউদ্দিনকে ১নং প্যানেল চেয়ারম্যান ঘোষণা করে প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব অর্পন করা হয়, যা ইউপি সদস্যদের অবহিত করা হয়নি এবং নিয়মমতো দায়িত্ব অর্পণ করা হয়নি, সেই সাথে পরিষদের আগের প্যানেলকেও মূল্যায়ন করা হয়নি।
সাত সদস্যের স্বাক্ষরিত অভিযোগ পত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, মহিউদ্দিন মেম্বার বিগত দিনে প্রকাশ্যে স্বৈরাচারের দোসর থাকলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিভাবে নিয়মবহির্ভূত ভাবে তাকে (মহিউদ্দিনকে) সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের এই পবিত্র দায়িত্ব দেয়া হয়! এই নিয়ে জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে। এই বিষয়ে এলাকার জনসাধারণ বিক্ষোভ, মানববন্ধন করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে, এতে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারন আছে। তাই জেলা প্রশাসক চট্টগ্রামকে বিষয়টি পূনরায় বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন ইউপির অন্য সদস্যরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনাকানিয়ার একাধিক ব্যক্তি বলেন, মহিউদ্দিন মেম্বার বর্তমানে একটি রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকার কারণে নিয়মবহির্ভূত ভাবে নিজে নিজে প্যানেল চেয়ারম্যান (০১) সেজে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে বিশেষ মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বভার নিয়েছেন।
এদিকে এই বিষয়ে তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ার হোসেন পলাশ তদন্তের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মো. মহিউদ্দীন মেম্বারকে পরিষদের আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব অর্পণ ও ১ নং প্যানেল চেয়ারম্যান ঘোষণায় দাখিল করা অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করছি। সংশ্লিষ্ট অনেকের সাথে কথা বলেছি, আরো কয়েবজনের সাথে কথা বলা বাকি আছে। আশা করছি বাকিদের সাথে কথা বলে শিগগিরই প্রতিবেদন জমা দিয়ে দিব।
এই বিষয়ে সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি জনসাধারণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি, জনগণ আমাকে ভালোবাসে। আমার জনপ্রিয়কায় ঈর্শান্বিত হয়ে অনেকে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।