চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় পুলিশ পরিচয়ে ইটভাটায় ডাকাতি

খবর ডেস্ক :
চট্টগ্রামে পুলিশ পরিচয়ে ইটভাটার অফিসে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার ভোর ৫টার দিকে সাতকানিয়া থানার এওচিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত এনবিএম নামে একটি ইটভাটার অফিসে এ ঘটনা ঘটে। অফিসে রক্ষিত টাকা, ৭-৮টি মোবাইল ফোন, সিসি ক্যামেরার সার্ভার, সিসি ক্যামেরার যন্ত্রাংশ ও রাউটারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ডাকাতি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ডাকাতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ইটভাটার মালিক মঈনুদ্দিন।

ইটভাটা কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার ভোর ৫টার দিকে একটি বাস ও একটি প্রাইভেটকারযোগে ১০-১৫ জন মুখোশ পরিহিত অস্ত্রধারী এসে নিজেদের পুলিশের লোক পরিচয় দেয়। তারা ইটভাটার প্রধান গেট খুলে দিতে বলে। অস্ত্রধারীরা বলে- ইটভাটায় আসামি রয়েছে, তল্লাশি করতে হবে। পরে ইটভাটার ব্যবস্থাপকসহ অন্যরা পুলিশ মনে করে গেট খুলে দেয়। ডাকাত দল ইটভাটার অফিসে কর্মরত ব্যবস্থাপক আবদুর রহমান, সহকারী ব্যবস্থাপক তৌহিদুল ইসলামসহ অন্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় এবং হাত-পা বেঁধে একটি কক্ষে ঢুকিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে। পরে অফিসে ঢুকে ডাকাত দল ক্যাশ ভেঙে নগদ ৫৬ হাজার টাকা ও দারোয়ানের পকেটে থাকা কিছু টাকা লুটে নেয়। ডাকাত দল চলে যাওয়ার সময় ইটভাটার মালিককে কোন বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে পরিণাম খারাপ হবে বলে হুমকি দিয়ে যায়। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে সাতকানিয়া থানা পুলিশকে জানানো হলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। দুপুরে জেলা ডিবি পুলিশের একটি টিমও পরিদর্শন করে বলে ইটভাটার মালিক জানিয়েছেন। তবে পুলিশ বলছে, এটি নিছক ডাকাতির ঘটনা নয়। ইটভাটা মালিকের সঙ্গে কারও সঙ্গে বিরোধের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের ধারণা।

এলাকাবাসী সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ইটভাটার মালিক মঈনুদ্দিনের বাবা ও একই উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়ন (ইউপি) পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হক মিয়া নিজ শয়নকক্ষে হত্যার শিকার হন। এ ঘটনায় ইটভাটার মালিকের বড় ভাই নেজামুদ্দিন বাদী হয়ে বাড়ির কেয়ারটেকার জমির উদ্দিনকে একমাত্র আসামি করে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে নিহতের ৪ ছেলে ও ৩ মেয়ে আদালতে অভিযোগপত্রের ওপর নারাজি দিলে আদালত মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দেন। পরে পিবিআইও জমির উদ্দিনকে একমাত্র আসামি করে সম্পূরক চার্জশিট প্রদান করে। সম্প্রতি আসামি জমির উদ্দিন কার নির্দেশে আবদুল হক চেয়ারম্যানকে হত্যা করা হয়েছে এর বিশদ বর্ণনা দিয়ে জেলখানা থেকে একটি চিঠি পাঠায়। ইটভাটা মালিকের আপনজনদের মধ্যে কারও নাম এই চিঠিতে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর থেকে ইটভাটার মালিক মাঈনুদ্দিনের সঙ্গে একটি পক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়।

ইটভাটার মালিক মাঈনুদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, শুধু ডাকাতির ঘটনা নয়। আমার পিতার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নানা তথ্য আসছে। এখন আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। আমাকে চাপে রাখতে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। আমার পিতার হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনা আমি বের করবই।

সাতকানিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার বলেন, ‘এটি নিছক ডাকাতির ঘটনা নয়। এ ঘটনার পেছনে অন্য ঘটনা রয়েছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। এ ঘটনায় মামলা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন