
খবর ডেস্ক :
আয়তনের দিক দিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা হচ্ছে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির দুর্গম বাঘাইছড়ি উপজেলা। এই উপজেলাটি হচ্ছে ভারত সীমান্তবর্তী উপজেলা। বর্তমান সরকারের সড়ক যোগাযোগের উন্নয়নের ফলে বদলে যাচ্ছে দুর্গম বাঘাইছড়ি উপজেলা। বাঘাইছড়ি পৌর এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হচ্ছে উগলছড়ি সড়ক। এই সড়কটি নির্মিত হওয়ার ফলে বদলে গেছে এখানকার বসবাসরত হাজারো মানুষের ভাগ্য।
সরেজেমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, বাঘাইছড়ি সদর থেকে উগলছড়ি পর্যন্ত নব নির্মিত সড়কটি খুবই দৃষ্টি নন্দন। এই সড়কটি দিয়ে ৩টি ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগ যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি স্থানীয় মানুষের বৈকালিক ভ্রমণের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। ইউনিয়নগুলো হচ্ছে – বাঘাইছড়ি সদর সারোয়াতলী ও আমতলী।
বাঘাইছড়ি উগলছড়ি সড়কের স্থানীয় ব্যবসায়ী মনসুর আহম্মেদ বলেন, এই সড়কটির হওয়ায় এখানকার মানুষের জনজীবনে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, উগলছড়ি–সারেয়াতলী–আমতলি–মাহিল্যা পর্যন্ত সকল মানুষের সুযোগ–সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সড়কটির ফলে রাতের বেলায়ও সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে চলফেরা করতে পারছেন।
রাঙামাটি এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাঘাইছড়ি উপজেলা হেডকোয়ার্টার থেকে উগলছড়ি ভায়া বটতলী বাজার রোড পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৫ কি.মি.। এই সড়কটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ১০ কোটি টাকা। এই সড়কটি নির্মিত হওয়ায় এলাকার হাজারো মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হয়েছে।
স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল মাবুদ বলেন, এই সড়কটি এলাকার মানুষের যোগাযোগের পাশাপাশি প্রতিদিন বিকেল বেলায় এখানে প্রচুর মানুষ বেড়াতে আসেন। তিনি বলেন, এই রাস্তাটির দুই পাশে সারি সারি গাছ এবং সড়কটির দুপাশে বিল এই মনোরম দৃশ্য সকলের মনকে নাড়া দেয়। বাঘাইছড়ি স্থানীয় কৃষক মো. শফি জানান, প্রতি বছরে ৩–৪ মাস কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি থাকা অবস্থায় আমাদের যাতায়াত করতে খুব কষ্ট করতে হতো। এই সড়কটির ফলে এলাকার মানুষের সব ক্ষেত্রে যথেষ্ট উপকৃত হয়েছে। তিনি বলেন, উগছড়ি সড়কটি করে দেয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাদের মতো গরীব কৃষকদের দিকে দৃষ্টি দেয়ায়।
এলজিইডির বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, এই উগলছড়ি রাস্তাটি উন্নয়নের ফলে তিন ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে। পাশাপাশি এখানকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য চিকিৎসার ক্ষেত্রে রাস্তাটি যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করছে। তিনি বলেন, এই উগলছড়ি এলাকার মানুষ রাস্তাটি করে দেওয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন।
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি পৌরসভা মেয়র মো. জমির হোসেন বলেন, মাদ্রাসা পাড়া থেকে উগলছড়ি পর্যন্ত প্রায় ৫ কি.মি. রাস্তা নির্মাণ করেছে এলজিইডি। এই সংযোগ সড়কটি নির্মিত হওয়ার ফলে বাঘাইছড়ি পৌর এলাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস। তা সহজ হয়েছে।
রাঙামাটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমাদ শফি বলেন, বাঘাইছড়ি উপজেলা সদর থেকে উগলছড়ি পর্যন্ত সড়কটি আম্পান প্রকল্প থেকে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই সড়কটির দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৫ কি.মি.। এই সড়কটি হওয়ার ফলে বাঘাইছড়ি পৌর এলাকার মধ্যে পর্যটনের এক অপার সম্ভাবনাময় একটি স্থান। তিনি বলেন, কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন বৃদ্ধি পায় তখন স্থানীয় অনেক পর্যটক এই সড়কটিতে বেড়াতে আসে। ভবিষ্যতে এটিও ট্যুরিস্টদের জন্য একটি দর্শনীয় স্থান হতে পারে।