
‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি’র ফাইল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে
অনলাইন ডেস্ক : হাসিনা রেজিমে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় প্রশাসনে বঞ্চিত ৭৬৪ সাবেক কর্মকর্তাদের পদমর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা দিতে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে সরকার গঠিত কমিটি। ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি বাস্তবায়নে বকেয়া বেতন, আনুতোষিক, পেনশন বাবদ এককালীন আনুমানিক ৪২ কোটি টাকা এবং পরে পেনশন বাবদ বার্ষিক অতিরিক্ত ৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব। প্রথম দফায় শুধু বকেয়া বেতন পাবেন বঞ্চিত এসব কর্মকর্তা। এ জন্য প্রথমে ২১ কোটি টাকা ছাড় করার অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। এর পরও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে আছে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এদিকে ফ্যাসিবাদ সরকারের হয়ে যেসব প্রশাসনের কর্মকর্তারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলো তাদের দ্রুত অপসারণ করে, সৎ পদঞ্চিতদের দায়িত্বে নিয়ে আসতে নতুন সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার ৬ মাসেও বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার।
এদিকে ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি সুপারিশের সার-সংক্ষেপ গত ২৭ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গত ২৮ দিনেও এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়নি। জামায়াতপন্থী ও ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের বর্তমান প্রশাসনে থাকা কয়েকজন সচিব ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি সুপারিশ বাস্তবায়নে বড় বাধা বলে অভিযোগ পদবঞ্চিত কর্মকর্তাদের। সব মিলে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে আছে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি। বঞ্চিতদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি সুপারিশের প্রজ্ঞাপন জারি করতে সার-সংক্ষেপ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু কি কারণে প্রশাসনের ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি সুপারিশ বাস্তবায়নের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে না তা কেউ বলতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক উপদেষ্টা ইনকিলাবকে বলেন, উপদেষ্টা পরিষদে বঞ্চিতদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি ও আর্থিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন করা হয়েছে। সরকারের ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রথম দফায় বঞ্চিত কর্মকর্তাদের বকেয়া বেতন বাবদ অন্তত ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে অর্থ বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। একারণে হয়তো পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারি হতে দেরি হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো সাইফুল্লাহ পান্নার সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ করেনি। সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে প্রধান করে গঠন করা এ কমিটির সদস্য হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ, অর্থ বিভাগ, জনপ্রশাসন ও আইন মন্ত্রণালয়ের চার প্রতিনিধি দায়িত্ব পালন করে বিভিন্ন সুপারিশ দেয়া হয়। ভূতাপেক্ষ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়ার আদেশ জারি করার কথা থাকলে সেটা নিয়ে টালবাহনা শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াত পন্থী কর্মকর্তারা বলেন, আসলে এগুলো ঠিক না। আমরা অনেক বছর থেকে বঞ্চিত আছি। যখন কোনো পদোন্নতি হয় তখন এগুলো বলা হচ্ছে। এ সব অভিযোগ ঠিক না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঞ্চিত এক অতিরিক্ত সচিব অভিযোগ করে ইনকিলাবকে বলেন, পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকে গত ১৭ বছর পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে চলে পার করেছি। এখনো রাস্তায় ঘুরছি। আমাদের বিষয়টি নিয়ে আটকে আছে। অথচ ফ্যাসিবাদের দোসররা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ সচিব পদে ২৭জন কর্মকর্তারা এখনো রয়েছে। তা না করে প্রশাসনের অনেক মন্ত্রণালয়ে জামায়াত পন্থী ও ফ্যাসিবাদী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। প্রশাসনে জামায়াত পন্থী ও ফ্যাসিবাদী কর্মকর্তাদের ভাগাভাগি চলছে। তারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাভোগ করতে পারলেও আমরা বঞ্চিত থাকছি। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ফ্যাসিবাদী কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। আমরা টাকা আগে চাই না। আমরা পদমর্যাদা ফিরে চাই। এটা দিতে সরকারের টাকা লাগে না।
সদ্য বিদায়ী সাবেক এক সচিব ইনকিলাবকে বলেন, জামায়াতপন্থী কর্মকর্তা মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদে রয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব পদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সচিব দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী কর্মকর্তাদের মধ্যে শিল্প ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলোর শীর্ষ পদ নারী কর্মকর্তারা সামলাচ্ছেন। তারা হলেন. শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড.মুশফিকুর রহমান,পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব নাসরীন আফরোজ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে থাকা ফ্যাসিবাদীরা জামায়াতের কর্মকর্তাদের সাথে ভাগাভাগি করে প্রশাসন চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কয়েকদিন ধরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান কর্মসূচি গত ১৫ ডিসেম্বর পদোন্নতিসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালনে করেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম’। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে, ফ্যাসিবাদী সরকার কর্তৃক পদোন্নতি বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরসহ সব স্তরের পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মচারীদের প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা সিনিয়রিটিসহ ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির ‘প্রজ্ঞাপন’ অবিলম্বে জারি করতে হবে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত সকল চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে এবং বর্তমান সরকার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত বিতর্কিত কর্মকর্তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। বর্তমানে কর্মরত সাবেক ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর, ছাত্র-জনতা হত্যায় জড়িত স্বেচ্ছাচারী, দুর্নীতিবাজ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ কাজে লিপ্ত কর্মকর্তাকে অবিলম্বে প্রত্যাহারপূর্বক আইনের আওতায় আনতে হবে। দলবাজ, অদক্ষ ও সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের অপসারণ/অব্যাহতি প্রদানপূর্বক ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখের পর দীর্ঘদিনের বঞ্চিত কর্মরত যে সমস্ত কর্মকর্তা পদোন্নতি পেয়েও এখনো পদায়ন পাননি তাদের দ্রুত উপযুক্ত পদে পদায়ন করতে হবে। মাঠ প্রশাসনে কর্মরত বিতর্কিত জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার করে নিরপেক্ষ, সৎ, দক্ষ কর্মকর্তাকে পদায়ন করতে হবে। পূর্বের ফিট লিস্ট বাতিল করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পুনরায় ফিট লিস্ট করতে হবে। বিগত সরকারের সময় যারা দলীয় বিবেচনায় পদোন্নতি পেয়েছে তাদের পদোন্নতি আদেশ বাতিল এবং আর্থিক সুবিধা প্রত্যাহার করতে হবে। বিদেশে ‘বেগম পাড়া’য় বাড়ি ক্রয়সহ অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের ৬ মাস পার হয়েছে। কিন্তু এখনো জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে সিভিল সার্ভিস সংস্কারের মাধ্যমে জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে ক্যাডারগুলোর মধ্যে বৈষম্য নিরসন ও প্রশাসন ক্যাডার নির্ভরতা কমানোর দাবি জানিয়েছে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য পরিষদ। রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রশাসন ক্যাডারের একচেটিয়া আধিপত্যের সমালোচনা করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞদের প্রাধান্য দেওয়ার প্রস্তাবও করেছে সংগঠনটি। গতকাল শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘জন আকাক্সক্ষা পূরণে প্রত্যাশিত সিভিল সার্ভিস’ শীর্ষক সেমিনারে এই দাবি জানায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য পরিষদ। সিভিল সার্ভিসের ২৫টি ক্যাডার নিয়ে গঠিত আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ এই সেমিনারের আয়োজন করে। বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, অসরপ্রাপ্ত বিচারক, শিক্ষক, লেখক এবং রাজনীতিবিদ আলোচনায় অংশ নেন। সেমিনারে বিদ্যমান সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থায় রাষ্ট্র ও জনগণের ক্ষতিসমূহ তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, বৈষম্যের কারণে পেশাদারত্বকে প্রাধান্য না দেওয়ায় দৈনন্দিন কাজে দীর্ঘসূত্রতা ও জনমনে অসন্তুষ্টি, সিভিল সার্ভিসে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার মাধ্যমে রাজনীতিতে স্বৈরাচারিতা কায়েম, প্রশিক্ষণে অর্থ অপচয়, জনগণের অর্থ অপচয়, অদূরদর্শী প্রকল্প গ্রহণ, জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতার অভাবের সমস্যা তৈরি হয়েছে।
গত বছর ৫ আগস্ট পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালানোর পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। সেই থেকে প্রশাসনে আমূল পরিবর্তন আসতে শুরু করে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চুক্তিতে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়োগ বাতিল করে অবসরে থাকা বঞ্চিত যোগ্য কর্মকর্তাদের প্রশাসনে নিয়োগ দেওয়া প্রক্রিয়া শুরু হয়। পদোন্নতিবঞ্চিত প্রশাসনে কর্মরত প্রায় ৭০০ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। কিছু কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেয়ার পরে মাঝ পথে আবার বঞ্চিতদের পদোন্নতি প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। এরপর অতীতে যারা পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন এবং বছরের পর বছর ওএসডি ছিলেন,তাদের ক্ষতিপূরণের দাবি ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সরকারি চাকরিতে বঞ্চিতদের জন্য বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়। সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে প্রধান করে গঠন করা এই কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন মন্ত্রিপরিষদ, অর্থ বিভাগ, জনপ্রশাসন ও আইন মন্ত্রণালয়ের চার প্রতিনিধি।
প্রায় সাড়ে চার হাজার আবেদন জমা পড়লেও যাচাই শেষে ৭৬৪টি আবেদন কমিটি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে সচিব পদে ১১৯ জন, গ্রেড-১ (সচিবের সমান বেতন গ্রেড)-এ ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৭২ জন এবং উপসচিব পদে চারজনকে পদোন্নতির সুপারিশ করেছে কমিটি। অবসরে গেছেন, সে জন্য তাঁদের ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি দেওয়া যেতে পারে বলে সুপারিশ করা হয়েছে। এই ৭৬৪ জন কর্মকর্তার মধ্যে ৯ জনকে চার ধাপ, ৩৪ জনকে তিন ধাপ, ১২৬ জনকে দুই ধাপ এবং ৫৯৫ জনকে এক ধাপ পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করে কমিটি। নতুন পদমর্যাদা নির্ধারণের পর বঞ্চিত এই কর্মকর্তাদের আর্থিক সুবিধা প্রদানে মোট খরচ হবে আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পদোন্নতি বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বঞ্চনা নিরসনে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অবহিত রেখে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ শুরু করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ।
আওয়ামী লীগের আমলে ২০০৯ সাল থেকে গত ৪ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে সরকারি চাকরিতে নানাভাবে বঞ্চনার শিকার এবং এ সময়ের মধ্যে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য গত ১৬ সেপ্টেম্বর এ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির প্রধান ছিলেন সাবেক অর্থসচিব এবং বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক জাকির আহমেদ খান। কমিটির কাছে মোট ১ হাজার ৫৪০টি আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে মারা যাওয়া কর্মকর্তাদের পক্ষে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের করা ১৯টি আবেদন ছিল। যাচাই-বাছাই করে কমিটি সচিব পদে ১১৯ জন, গ্রেড-১ (সচিবের সমান বেতন গ্রেড)এ ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৭২ জন ও উপসচিব পদে চারজনকে পদোন্নতির সুপারিশ করেছিল। যেহেতু তাঁরা অবসরে গেছেন, সে জন্য তাঁদের ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করেছিল কমিটি। ওই ৭৬৪ কর্মকর্তার মধ্যে কমিটি ৯ জনকে চার ধাপ, ৩৪ জনকে তিন ধাপ, ১২৬ জনকে দুই ধাপ ও ৫৯৫ জনকে এক ধাপ পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে। এখন সেই সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। কিন্তু প্রজ্ঞাপন জারির প্রস্তাব অনুমোদন মিলছে না বলে জানা গেছে।ই