
খবর ডেস্ক : সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়ায় দ্রুত দেশের সার্বিক আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি উন্নয়ন এবং দৃর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন সহজ হবে। দেশের গার্মেন্টস সেক্টর নিয়ে যে চক্রান্ত চলছে তাও বন্ধ হবে বলে আশা সাধারন মানুষের। তবে অন্যায়ভাবে যেন কেউ হয়রানির শিকার না হন এবং সেনাবাহিনীর মাঠ পর্যায়ের পদক্ষেপ নিয়ে ছবি তোলা বা ভিডিও করে প্রচার করার মতো ঘটনা যেন বিতর্ক না হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহনের দাবিও করেছেন অনেকেই।
বুধবার এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সেনাবাহিনীর অফিসারদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার সুফল জনগণ ভোগ করবে। সেনাবাহিনী অনেকদিন ধরে মাঠে থেকে জনগণের সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। জনসেবা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থেই তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোতে জনবলের স্বল্পতা রয়েছে। সেটা পূরণের লক্ষ্যে কাজ করছে সেনাবাহিনী।
অন্যদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেছেন, নিরাপত্তা নিয়ে মানুষের মধ্যে যাতে আস্থা থাকে সেজন্য সেনা কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। মানুষ যাতে আরও জনবান্ধব পরিবেশে চলাচল করতে পারে, নিরাপদ বোধ করে, মানুষের মধ্যে যাতে আস্থা থাকে এজন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সব বাহিনী একইসঙ্গে একই ছাতার নিচে কাজ করছে, এই মেসেজটার জন্যই এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে কথা হয় ব্যবসায়ী কবির হোসেনের সাথে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রাজধানীসহ সারাদেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়ে উঠেনি। আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা এখনও ফিরে আসেনি। পুলিশও আগের মত কাজ করছে না। ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে খুন করার পর পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভ এখনও কমেনি। যার প্রভাব পড়ছে সমাজের সর্বত্র।
তিনি বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় সেক্টর গার্মেন্টস। পুলিশ পুরোপুরি দায়িত্ব পালনে ফিরে গেলে গার্মেন্টস সেক্টরে এমন বড় ধরনের সমস্যা থাকবে না। এখন সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়ায় দেশের গার্মেন্টস সেক্টর নিয়ে যে চক্রান্ত চলছে তা বন্ধ হবে। পাশাপাশি দ্রুত দেশের সার্বিক আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি উন্নয়ন এবং দৃর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারবে সেনাবাহিনী।
মেজর জেনারেল (অব:) আবদুল মতিন ইনকিলাবকে বলেন, এটা নতুন নয়, এর আগেও সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল। দেশের সিভিল প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে কাজ করছে সেনাবাহিনী। বিগত সরকারের সময় যারা বড় ধরনের অপরাধ করেছেন বা রাষ্ট্র বিরোধী কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করছেন। এ জন্য সেনাবাহিনীকে অনেক সময় পুলিশ বা অন্য কাউকে তথ্য দিতে হচ্ছে অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য। এ ক্ষেত্রে ওই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নির্দিষ্ট জায়গায় পৌছার আগে প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে বা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়ায় তারা নিজেরাই দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারবেন। এটা খুবই ভাল একটি সিদ্ধান্ত।
মেজর জেনারেল (অব:) আবদুল মতিন বলেন, আমাদের দেশের গার্মেন্টস সেক্টর নিয়ে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এখন সেনাবাহিনী কারো সহযোগিতা ছাড়াই দ্রুত আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে সক্ষম হবে। তবে অন্যায়ভাবে যেন কেউ হয়রানির শিকার না হয় এবং সেনাবাহিনীর মাঠ পর্যায়ের পদক্ষেপ নিয়ে ছবি তুলা বা ভিডিও করে প্রচার করার মতো ঘটনায় যে বির্র্তক তৈরি না হয় সে বিষয়ে খুবই সর্তক থাকা জরুরী বলে তিনি মন্তব্য করেন। উল্লেখ্য রাজধানীসহ সারা দেশে সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এই ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এই সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হয়েছে। আগামী দুই মাস (৬০ দিন) এই সিদ্ধান্ত বলবত থাকবে।ই