শয়তান মানুষের শত্রু কেন

অনলাইন : মানবজাতি সৃষ্টির সময় থেকে শয়তান তার শত্রু। পবিত্র কোরআনের অসংখ্য আয়াতে আল্লাহ মানবজাতিকে শয়তানের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। যেমন—

১. শত্রুতার সূচনা : আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করার পর আল্লাহ সিজদার নির্দেশ দিলে ফেরেশতারা সিজদা করেন। কিন্তু শয়তান অহংকারবশত সিজদা করা থেকে বিরত থাকে।

ফলে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হয় এবং মানবজাতির সঙ্গে তার চিরন্তন শত্রুতার সূচনা হয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যখন আমি ফেরেশতাদের বললাম, আদমকে সিজদা করো, তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সিজদা করল, সে অমান্য করল ও অহংকার করল। সুতরাং সে অবিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হলো। …কিন্তু শয়তান তা থেকে তাদের পদস্খলন ঘটাল এবং তারা যেখানে ছিল সেখান থেকে তাদেরকে বহিষ্কার করল।

আমি বললাম, তোমরা পরস্পরের শত্রুরূপে নেমে যাও, পৃথিবীতে কিছু কালের জন্য তোমাদের বসবাস ও জীবিকা রইল। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ৩৪-৩৬)

২. শয়তানের অঙ্গীকার : মানবজাতিকে বিভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট করার ক্ষেত্রে শয়তানের অঙ্গীকার কোরআনে এভাবে এসেছে, ‘সে বলল, তুমি আমাকে শাস্তিদান করলে, এ জন্য আমিও তোমার সরল পথে মানুষের জন্য নিশ্চয়ই ওত পেতে থাকব। অতঃপর আমি তাদের কাছে আসবই তাদের সামনে, পেছন, ডান ও বাঁ দিক থেকে এবং তুমি তাদের বেশির ভাগকে কৃতজ্ঞ পাবে না। ’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১৬-১৭)

৩. শত্রুতার ধরন : আল্লাহ মানবজাতির শত্রুতার ধরনও স্পষ্ট করেছেন।

ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানবসন্তান! আমি কি তোমাদের নির্দেশ দিইনি যে তোমরা শয়তানের দাসত্ব কোরো না। কেননা সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু? আর আমারই ইবাদত কোরো, এটাই সরল পথ। ’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত : ৬০-৬১)

৪. শয়তানের কৌশল : পবিত্র কোরআনে শয়তানের কৌশল বা ফাঁদের ব্যাপারেও মুমিনদের সতর্ক করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ কোরো, শয়তান তাদের কার্যাবলি তাদের দৃষ্টিতে শোভন করেছিল এবং বলেছিল, আজ মানুষের মধ্যে কেউই তোমাদের ওপর বিজয়ী হবে না, আমি তোমাদের পাশে থাকব। অতঃপর দুই দল যখন পরস্পরের সম্মুখীন হলো, তখন সে পেছনে সরে পড়ল এবং বলল, তোমাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক রইল না।
’ (সুরা আনফাল, আয়াত : ৪৮)

৫. শয়তানকে বন্ধু বানানোর ক্ষতি : আল্লাহ শয়তানকে বন্ধু বানানোর পরিণতি সম্পর্কে বলেন, ‘আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে বাদ দিয়ে শয়তানকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করবে সে স্পষ্ট ক্ষতির মধ্যে পতিত হবে। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১১৯)

আল্লাহ সবাইকে প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সব শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করুন। আমিন।বা:প্র।

মন্তব্য করুন