
অনলাইন ডেস্ক : জাতিসংঘ জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক সরকারের অধীনে আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে না — এবং এটি সেখানকার সহিংসতা আরও তীব্র করবে। মানবাধিকার বিষয়ে জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা ভলকের তুর্ক এই সতর্কবার্তাটি কানাডার হ্যামিল্টনে এক অনুষ্ঠানে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার হ্যামিল্টনে দেওয়া বক্তব্যে ভলকের তুর্ক বলেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংঘাত এবং রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর সেনাবাহিনীর দীর্ঘ দিনের নিপীড়নকে সামনে রেখে তারা এই নির্বাচনকে যথার্থভাবে গ্রহণ করতে পারে না। তিনি সতর্ক করে বলেন, সামরিক সরকারের অধীনে ভোট অনুষ্ঠিত হলে তা সহিংসতার নতুন অধ্যায় যোগ করবে এবং রোহিঙ্গাদের দুর্দশা কমবে না।
তুর্ক তার বক্তব্যে স্মরণ করিয়েছেন, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে সেনাবাহিনীর নির্মম অভিযানের ফলে প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে; অনেকেই এখনও রাখাইন রাজ্যের মধ্যে বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়েছে। তিনি বলেন, हालই (২০২৩ সালের নভেম্বরে) রাখাইনে আবারও সেনাবাহিনীর অভিযান শুরু হয়েছে, এবং গত দেড় বছর ধরে সেখানে বিমান হামলা, বেসামরিকের হত্যাকাণ্ড, সম্পত্তি ধ্বংস, লুটপাট ও নির্বিচারে গ্রেপ্তার বিদ্যমান।
তুর্ক আরও বলেন, আমরা যে ভিডিও ফুটেজগুলো দেখেছি তা দেখে মনে হয়েছে, রাখাইনে এখন ২০১৭ সালের আগস্টের আগের পরিস্থিতিই ফিরে এসেছে। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন — রাখাইনের সাধারণ মানুষের প্রতিদিনের বাস্তবতা হচ্ছে গ্রেপ্তার-আটককরণের ভীতি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় প্রবেশাধিকার সীমিত, চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা, জোরপূর্বক শ্রম ও নিয়োগ এবং বর্ণবাদ ও আতঙ্ক।
তুর্কের মতে এখনকার পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে প্রয়োজন সহিংসতা পরিহার, বেসামরিকদের সুরক্ষা, দুর্গত এলাকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো, এবং ব্যাপক রাজনৈতিক সংলাপ। তিনি বলছেন, এ মুহূর্তে নির্বাচন নয়; বরং নির্বাচন আয়োজন করলে তা সহিংসতাকে আরও বাড়িয়ে দেবে।
সম্মেলনে তুর্ক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক করেছেন যে, নির্বাচন যদি সামরিক সরকারের শাসনে ও অপব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হয় তবে সেটি দেশের সংকট মেটাবে না। তিনি প্রভাবশালী দেশগুলোকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হতে ও তাতে মানবিক সহায়তার পথ খোলা ও আস্থা পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ নিতে বলছেন। তথ্যসূত্র:ই