অনলাইন ডেস্ক : বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তারা আসন্ন নির্বাচনে আর কোনো দায়িত্বে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রোববার সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যেসব সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, তাদের বিচার আইনি প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হবে। ‘সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি দেশে থাকি, আমার সন্তানরাও দেশে থাকে, আমার সেফ এক্সিটের প্রয়োজন নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে মাঠপর্যায়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং অফিসার ইন চার্জদের (ওসি) সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা জানান, নির্বাচন চলাকালে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি বা সহিংসতার চেষ্টা করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক বডি-ওর্ন ক্যামেরা সরবরাহের প্রক্রিয়া চলছে।
উপদেষ্টা আরও জানান, নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে তিন দিন মেয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যা দেশের ১৩০টি ভেন্যুতে ২৮টি ব্যাচে অনুষ্ঠিত হবে।
এর মধ্যে দুটি ব্যাচের ১৩ হাজার সদস্য ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সব ব্যাচের প্রশিক্ষণ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এছাড়া আনসার-ভিডিপির ৫ লাখ ৮৫ হাজার সদস্যকেও নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার সদস্য অস্ত্রসহ ও ৪ লাখ ৫০ হাজার সদস্য নিরস্ত্র প্রশিক্ষণ পাবেন। আগামী জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে এই প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হবে।
তিনি জানান, নির্বাচনে বিজিবির ১ হাজার ১০০ প্লাটুনের ৩৩ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন, যাদের মধ্যে ৬০ শতাংশ ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। এ প্রশিক্ষণ ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ সম্পন্ন হবে। পাশাপাশি প্রায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যকেও মোতায়েন করা হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমানে ওই অঞ্চলে শান্তি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল এখন অনেক কমে গেছে। দুর্গাপূজার সময় কিছু ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী ও তাদের মদদপুষ্ট বুদ্ধিজীবীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় তাদের সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে।ই