বান্দরবানে ঈদের ছুটিতে নেই পর্যটক, হতাশ ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিনিধি : অপরূপ সৌন্দর্যে ভরা সবুজে ঘেরা পাহাড়ের নগরী বান্দরবান সারা পর্যটক ঢল নামে। এবার ঈদুল আযহার ছুটিতেও পার্বত্য জেলা বান্দরবানের পর্যটকদের সমাগম দেখা যায়নি।
প্রতিবছর এমন বন্ধে শতশত পর্যটক জেলার পর্যটনকেন্দ্র আর হোটেল মোটেল রেস্টুরেন্টগুলোতে জমজমাট থাকলে ও এবারে দেয়া যায় ভিন্ন চিত্র। পর্যটক না থাকায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা পড়েছে ধ্বসের মুখে। বান্দরবানের পর্যটককেন্দ্র নীলাচল, মেঘলা, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক ও নীলগীরিসহ বিভিন্ন স্পটে দেখা যায়নি তেমন পর্যটক। যারা বেড়াতে এসেছে তার পরিমাণ খুবই অল্প। এসব পর্যটক সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের বেশিরভাগ বান্দরবানের পাশ্ববর্তী এলাকা সাতকানিয়া, আমিরাবাদ আর কেরানীহাটের বাসিন্দা।

বান্দরবানের বেশ কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় পাশ্ববর্তী এলাকা থেকে হাতে ঘোনা কয়েকটি পরিবার জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ঘুরতে এসেছে আর যারা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বান্দরবান ভ্রমন করে আবার সন্ধ্যা নামতেই নিজ নিজ গন্তব্যে ছুটে যাচ্ছে। বান্দরবানের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের টিকেট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা থাকা সুমি ত্রিপুরা জানান, এবারের ঈদের দিন নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রে ৪শ পর্যটক প্রবেশ করেছে আর ১৮ জুন ঈদের ২য় দিন প্রায় ১ হাজার পর্যটক ভ্রমন করেছে আর যাদের বেশীর ভাগই স্থানীয় বাসিন্দা। সুমি ত্রিপুরা আরো জানান, গতবছর ঈদের ছুটিতে নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রে প্রচুর পর্যটক আসলেও এবার পর্যটক অনেক কম।

পর্যটন ব্যবসায়ী ও পর্যটকবাহী যানবাহনের সংশ্লিষ্টরা জানান, বান্দরবানে নানা কারণে পর্যটক কমে যাচ্ছে আর তার মধ্যে বর্তমান সময়ে পার্বত্য এলাকার সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের আতংক সবচেয়ে বেশি। জেলা সদরের এক আবাসিক হোটেল এর মালিক মো.জসীম বলেন,বান্দরবানে শুধুমাত্র ৩টি উপজেলায় বর্তমানে একটু সমস্যা থাকলেও অন্য ৪টি উপজেলায় পর্যটকেরা অনায়াসে ভ্রমন করতে পারছে। পর্যটকদের ভ্রমন আনন্দদায়ক আর নিরাপদ হোক সেজন্য আমরা হোটেল মালিক আর প্রশাসনের সবাই চেষ্টা করছে। তিনি আরো বলেন, বান্দরবানে পর্যটকরা সব সময় বেড়াতে আসে আর আমরা তাদের জন্য বিভিন্ন হোটেল মোটেল ছাড় দিয়ে থাকি এবার ও আমাদের হোটেল প্রায় ৩০ শতাংশ ছাড় রয়েছে তবে কোন পর্যটক নেই বললেই চলে।

বান্দরবান আবাসিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো.সিরাজুল ইসলাম বলেন, বান্দরবানের পর্যটনখাত এখন আইসিওতে চলে গেছে। এবছর আমাদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। পর্যটক না থাকায় হোটেলের নানা ধরনের খরচ পোষাতে গিয়ে মালিকদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। পর্যটকদের ভ্রমনের জন্য আমরা নানামুখী পদক্ষেপ নিলেও অনেক পর্যটক ভয়ে এখনও বান্দরবান আসছে না আর আমাদের ব্যবসা ও হচ্ছে না। ট্যুরিস্ট পুলিশের বান্দরবান জোনের পরিদর্শক স্বপন কুমার আইচ জানান, বান্দরবানে সাম্প্রতিক সময়ে পর্যটক কম তবে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা তাদের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। পর্যটকরা যাতে কোন পর্যটন কেন্দ্রে গিয়ে কোন ধরনের নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে না পড়ে সেজন্য সাদা পোষাকের পাশাপাশি পোষাকধারী ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছে।

মন্তব্য করুন