
২টি কিডনিই নষ্ট প্রবাসী আবদুল হামিদের
ডেস্ক : আবদুল হামিদ পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে ৭ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে ঔষধের দোকানে চাকরি করে যে অর্থ পেত তা দিয়ে হামিদের পরিবার সুখে শান্তিতে চলছিলো। কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন টিকেনি। প্রবাসে থাকাকালে আক্রান্ত হয় এক মরণব্যাধিতে। চিকিৎসার জন্য ফেরেন নিজ মাতৃভূমিতে।
দেশে পৌঁছে ডাক্তার দেখাতে দেখাতে ক্লান্ত দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরানোর সহযোগি এ প্রবাসী। কয়েক মাস ধরে একাধিক চিকিৎসক দেখিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানতে পারেন তার দুটি কিডনিই নষ্ট। এর মধ্যে প্রবাসে থেকে যে অর্থ সঞ্চয় করে রেখেছিল তা পুরোপুরি ব্যয় করে ফেলেছেন তিনি।
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার হদাহা ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ ৫নং ওয়ার্ডের মো. মাহবুবুর রহমানের ছেলে আবদুল হামিদ।
এ অবস্থায় তার পরিবার সন্তানকে নিয়ে বেঁচে থাকার আশায় সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। তাকে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা হিসাব নং-২০৫০২৯৪০২০১৮০০২১৪ ইসলামী ব্যাংক, কেরানীহাট শাখা, চট্টগ্রাম। তার বিকাশ নাম্বার-০১৩১৭-৪৯০১০৯, নগদ- ০১৮৫৩৭৭৭১০৬।
স্থানীয়রা জানান, জীবিকার তাগিদে ২০১৭ সালে আবদুল হামিদ কাজের সন্ধানে সৌদি আরবে যান। কিছুদিন মামার দোকানে কাজ করেন। পরে ঔষধের দোকানে চাকরি নেন। সেখানে ঠিকভাবে ঘুম না হওয়ার কারণে ৭-৮ মাস আগে তার পিঠে ব্যাথা অনুভব করেন। এরপর আব্দুল হামিদ অসুস্থ হয়ে পড়েন। আত্মীয় স্বজনরা তাকে চিকিৎসার জন্য দেশে চলে আসার পরামর্শ দেন। গত ৫ মাস আগে তিনি চিকিৎসার জন্য দেশে ফিরেন।
হামিদের নিকট আত্মীয় মো. নাসির উদ্দিন বলেন, হামিদ বিদেশে থাকাকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য দেশে ফেরে জানতে পারেন তার দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এলাকাবাসী তাকে সহযোগিতা করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করছে। তাকে আর্থিক সহায়তা করার জন্য আমি সবার কাছে অনুরোধ করছি।
আব্দুল হামিদের প্রতিবেশী মো. ফারুক বলেন, আমাদের এলাকার সন্তান আব্দুল হামিদ সৌদি আরবে থাকত। বিদেশে থাকাকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য দেশে ফিরে আসেন। বর্তমানে তার চিকিৎসার পেছনে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। তাকে বাঁচাতে হলে ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন। পরিবারের পক্ষে এত টাকা বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। সকলে মিলে যদি তাকে কিছু সহযোগিতা করা যায় তাহলে হয়তো সে বেঁচে থাকতে পারবে।
আব্দুল হামিদের শ্বশুর মো পারভেজ বলেন, আমার মেয়ের স্বামী বিদেশে থাকাকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য দেশে ফিরে আসেন। বর্তমানে রাজধানীর ইনসাফ বারাকা কিডনি এন্ড জেনারেল হাসপাতালে অধ্যাপক ডাক্তার এহতেশামুল হকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রতি সপ্তাহে তার দুইটি ডায়ালাইসিস করতে খরচ হচ্ছে ৪-৫ হাজার টাকা। বিদেশে নিয়ে গিয়ে নতুন কিডনি স্থাপনের জন্য ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন। আমাদের পরিবারের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সকলের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চাচ্ছি।
আব্দুল হামিদ বলেন, আমি প্রবাসে থাকাকালে অসুস্থ হয়ে পড়ি। দিন দিন শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দেশে ফেরত আসি। দেশে আসার পর চিকিৎসক জানান আমার দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। আমার সব উপার্জন চিকিৎসা খাতে ব্যয় করে ফেলেছি। নতুন দুটি কিডনি স্থাপনের জন্য ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন। আমি বাঁচতে চাই। এজন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ দেশবাসীর কাছে আর্থিক সহযোগিতা চাই। আমাকে সহযোগিতা করলে স্ত্রী ও একমাত্র সন্তান নিয়ে বেঁচে থাকতে পাবর। আমার ছেলেটার ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আমাকে সহযোগিতা করুন।
ছদাহা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মোরশেদ রহমান বলেন, আব্দুল হামিদ সৌদি আরবে থাকাকালে তার দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে তিনি দেশে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে তার অর্জিত অর্থ ও সম্পদ খরচ হয়ে গেছে। আমি সাধ্যমতো তাকে সহযোগিতা করেছি। তার কিডনি স্থাপন করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। তাই তাকে সবাই সহযোগিতা করলে হয়তো তিনি সুস্থ হয়ে আবারো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন।