ডেস্ক : সুধারামে কিশোর গ্যাং বাহিনীর হাতে অস্ত্রের মুখে ২ বোন অপহরণের ২১ দিনেও উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছে থানা পুলিশ। নোয়াখালী সদর উপজেলায় এ ঘটনা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবার। ১৭মে, শনিবার দুপুরের দিকে বিষয়টি মানবজমিনকে নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুধারাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত শুক্রবার এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় মামলা নেয়া হয়েছে। এর আগে, গত ২৬শে এপ্রিল সন্ধ্যায় উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের রামানন্দী গ্রামের ফয়েজ মিস্ত্রি বাড়ি থেকে অপহরণের শিকার হন ২ বোন। অপহৃতরা হলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থী তাহরিম হারুন ফালাহ (১৫) ও তার ছোট বোন তাছনুবা হারুন তাহা (১২)। ভুক্তভোগী ২ স্কুলছাত্রীর মা ফরিদা আক্তার জানান, তার বড় মেয়ে তাহরিম হারুন ফালাহ পানা মিয়া টিএফ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ও ছোট মেয়ে তাছনুবা হারুন তাহা স্থানীয় খাদিজাতুল কোবরা মহিলা মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
বড় মেয়েকে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে উপজেলার চর বাঞ্ছারাম গ্রামের ওমর ফারুকের ছেলে সাজ্জাদুর রহমান শাওন দীর্ঘদিন যাবত উত্ত্যক্ত করে আসছে। বিষয়টি তিনি শাওনের দাদা, নানা ও পরিবারের সদস্যদের অবগত করলেও তারা কোনো শাসন কিংবা ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এতে শাওন আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তিনি আরও জানান, গত ২৬শে এপ্রিল সন্ধ্যায় আমি ঘরের বাইরে অবস্থানের সুযোগে পূর্বের ঘটনার জেরে শাওন ও তার সহপাঠীরা আমার ঘরে ডুকে দুই মেয়ে তাহরিম হারুন ফালাহ ও তাছনুবা হারুন তাহাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে বহু জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তাদেরকে না পেয়ে শাওনের পরিবারকে বিষয়টি অবগত করলে তারা এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।

ভিকটিমদের মামা ওয়াহিদুর রহমান অপু বলেন, গত ২১ দিন ধরে অস্ত্রের মুখে কিশোর গ্যাং বাহিনীর হাতে আমার দুই ভাগ্নি অপহৃত অবস্থায় রয়েছে। আমরা থানায় অভিযোগ করার পরও পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করতে পারেনি। এই নিয়ে একাধিকবার পুলিশ অভিযুক্ত সাজ্জাদুর রহমান শাওনের পরিবারের সঙ্গে থানায় বৈঠকও করেছে। কিন্তু কোনো সন্ধান বের করতে পারেনি। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শাওনের পরিবারকে নিয়ে থানায় বৈঠক করলেও আমার ভাগ্নিদের কোনো তথ্য না পাওয়ায় থানা পুলিশ আমার বড়বোন ফরিদা আক্তার থেকে এজাহার গ্রহণ করার পর অভিযুক্ত সাজ্জাদুর রহমান শাওনকে গ্রেপ্তার করে। অপহৃত ছাত্রীদের বাবা হারুন অর রশিদ বলেন, আমার বড় মেয়ে ফালাহ এসএসসি পরীক্ষার ৬টি বিষয় শেষ করেছে। ২৬শে এপ্রিল সন্ধ্যায় পড়ার টেবিলে পরের দিনের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ওই সময় বখাটে শাওন ও তার সহপাঠীরা আমার বড় মেয়ের সঙ্গে ছোট মেয়েকেও অপহরণ করে নিয়ে যায়। জানি না আমার মেয়েরা কোথায় আছে, কেমন আছে। এখন তথ্য-প্রযুক্তির যুগ, কিন্তু ঘটনার ২১দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো আমার মেয়েদের উদ্ধার করতে পারেনি। আমি আমার মেয়েদের সন্ধান চাই। সুধারাম মডেল থানার এসআই ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাজ্জাদুর রহমান শাওন (২০) নামে ১ তরুণকে গ্রেপ্তার করে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।(মানব জমিনে প্রকাশিত)