নিজস্ব প্রতিনিধি : নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় ২৯ বছর পর অপমৃত্যু থেকে হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণের আদেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার ঢাকার ৬ষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন। সালমান শাহ'র মা নীলা চৌধুরীর আইনজীবী আবিদ হাসান সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিন চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা অপমৃত্যুর মামলায় তার মায়ের রিভিশন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
এ বিষয়ে সালমান শাহর বাবা কমর উদ্দিনের অভিযোগ এবং ঘটনায় জড়িত রিজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদের জবানবন্দি সংযুক্ত করে মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য রমনা মডেল থানা পুলিশকে আদেশ দিয়েছেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান সালমান শাহ। অভিনেতার হঠাৎ মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা’ বলে দাবি করেন তার সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। কিন্তু ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলা করেন সালমানের বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
ওই সময় অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সিআইডির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ১৯৯৭ সালের ২৫ নভেম্বর সিএমএম আদালত সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বলে রায় দেন। যা প্রত্যাখ্যান করেন সালমান শাহর বাবা এবং পরবর্তীতে রিভিশন মামলা করেন।
২০০৩ সালে সেই রিভিশন মামলার বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক ‘অপমৃত্যু’ উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এরপর ছেলের মৃত্যুর বিচারপ্রার্থী কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী মারা গেলে মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালে তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। তখন মামলাটি তদন্তের ভার পড়ে পিবিআইয়ের ওপর।
২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করলে ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন।
মামলার নিষ্পত্তি আদেশের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১২ জুন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবারও রিভিশন মামলা দায়ের করে বাদীপক্ষ। ওই রিভিশন মামলায় বলা হয়, একাধিক ব্যক্তির প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে হত্যাকে ধামাচাপা দেয়া হয়েছে। সুপরিকল্পিত হত্যাকে ‘আত্মহত্যা’ ও ‘অপমৃত্যু’ বলা হচ্ছে। তাই সত্য প্রতিষ্ঠায় সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।আ.দেশ।