অনলাইন ডেস্ক : ১. পটভূমি: বিএনপি প্রতিনিধিদলের চীন সফর২৩ থেকে ২৫ জুন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল চীন সফর করেছে। শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক প্রতিনিধিদলের এই সফরে নেতৃত্বে ছিলেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে জেষ্ঠ্য স্থায়ী কমিটির সদস্য, উপদেষ্টা এবং গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা ছিলেন।• ২৩ জুন: সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য এবং ন্যাশনাল পিপল্স কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান লি হংঝং চীনের গ্রেট হল অফ দ্য পিপল-এ বিএনপি প্রতিনিধিদলের সাথে সাক্ষাৎ করেন।• ২৪ জুন: চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান ওয়েইদং এবং আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও প্রতিনিধিদলটির সাথে পৃথকভাবে বৈঠক করেন, নতুন সরকার এবং নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার আশা প্রকাশ করেন।• ২৪ জুন দুপুরে উপমন্ত্রী সান হাইয়ান প্রতিনিধিদলের সম্মানে এক মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন।বহু-সংস্থা এবং উচ্চ-স্তরের সংবর্ধনা চীনের দলীয় এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক কাঠামোর মধ্যে বিএনপি'র প্রতি উল্লেখযোগ্য কূটনৈতিক মনোযোগের ইঙ্গিত দেয়।
২. অন্তর্বর্তী সরকারের সফরের সাথে ভাষার তুলনাবাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ২০২৫ সালের মার্চে চীন সফর করেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করেন। তবে, এর তুলনায় বিএনপির প্রতিনিধদলের সফরে চীনের সুর এবং রাজনৈতিক কাঠামো উল্লেখযোগ্য পার্থক্য দেখিয়েছে:
৩. ভাষার পিছনের সংকেত: চীনের কূটনীতির কাঠামোগত প্রভাববিএনপির সফরের সময় সিপিসির আন্তর্জাতিক বিভাগ একটি রাজনৈতিক স্মারকলিপি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছিল, যা দলের সাথে প্রাতিষ্ঠানিক-স্তরের সম্পৃক্ততার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক অভিপ্রায়ের ইঙ্গিত দেয়। এই ধরনের কাঠামো সাধারণত সেই রাজনৈতিক সত্তাগুলির জন্য বিবেচিত হয় যাদের কৌশলগত সম্ভাবনা বা দীর্ঘমেয়াদী মূল্য রয়েছে বলে চীন মনে করে। এর থেকে বোঝা যায় যে চীন ইতিমধ্যেই ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার জন্য বিএনপিকে একটি কার্যকর কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং এর কূটনৈতিক ভাষা সূক্ষ্মভাবে দলটির সম্ভাব্য শাসক ভূমিকার প্রতি উন্মুক্ততা প্রতিফলিত করে।
৪. কৌশলগত প্রভাব: চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য একটি নতুন কাঠামোবিএনপি প্রতিনিধিদলের কূটনৈতিক ভাষা এবং অভ্যর্থনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট সম্পর্কে চীনের মূল্যায়নে নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলি নির্দেশ করে:• চীন তার দৃষ্টিভঙ্গি বৈচিত্র্যময় করেছে এবং দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত সহযোগিতার জন্য আর কোনও একক দলের উপর নির্ভরশীল নয়।• দীর্ঘমেয়াদী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সীমিত হিসাবে দেখা হচ্ছে।• রাজনৈতিকভাবে প্রাসঙ্গিক দল হিসেবে বিএনপি এখন দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগত গুরুত্ব বহন করে, যা চীন-বাংলাদেশ কৌশলগত ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতে যেকোনও ব্যাঘাত রোধ করার জন্য দল-থেকে-দল চ্যানেল খোলার জন্য চীনকে আগ্রহী করে।
৫. উপসংহার: অনুমোদন নয়, বরং বন্ধুত্বপূর্ণ হিসেবেকূটনৈতিক ভাষা এবং সাবধানে পরিকল্পিত প্রোটোকল ব্যবস্থার মাধ্যমে চীন বিএনপিকে কৌশলগতভাবে জড়িত অংশীদার হিসেবে অবস্থান দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এটি হস্তক্ষেপ বা ভবিষ্যদ্বাণী নয়, বরং সুনির্দিষ্ট কূটনৈতিক সংকেতের মাধ্যমে সক্রিয় কৌশলগত অবস্থানের এক রূপ, যা ইঙ্গিত দেয় যে, চীনা কূটনীতি ইতিমধ্যেই ‘ভবিষ্যতের বাংলাদেশ’-এর জন্য জায়গা সংরক্ষণ করছে।ই