
(বায়ুদূষণ রোধে আসছে ১০০ দিনের কর্মসূচি)
খবর ডেস্ক :
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ কমাতে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছি। এরই মধ্যে ১০০ দিনের কর্মসূচি হিসেবে ঢাকার চারপাশের ৫০০ অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করার কার্যক্রম শুরু হবে। সচিবালয়ে গতকাল বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুইয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে আমরা বদ্ধ পরিকর। তাই এখন থেকে আমাদের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। খোলা ট্রাকে করে ঢাকা শহরে বালু, সিমেন্ট বহন করলে জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হবে। ঢেকে না রেখে নতুন ভবন নির্মাণ করলে জরিমানার পরিমাণ বাড়বে। বায়ুদূষণ বন্ধ করতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি জানিয়ে তিনি বলেন, যেটা এতদিন ছিল না। যারা বায়ুদূষণের জন্য দায়ী তাদের কোনোভাবেই ছাড় নয়।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ৩০০-এর ওপরে থাকলে ক্ষতিকর। আমাদের দেশে সেটা অনেক আগেই অতিক্রম করেছে। তাই বায়ুদূষণ কমানোর জন্য কি পরিকল্পনা নিচ্ছেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, প্রথমে আমরা বায়ুদূষণের উৎসগুলো চিহ্নিত করছি। উৎস কি সেটা না জানলে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। আরেকটা বিষয় হলো বায়ুর মান যখন খারাপ পর্যায়ে চলে যায় তখন আমরা একটা এলার্ট ইস্যু করতে চাই। জনসাধারণকে বলতে চাই আজকে আমাদের বায়ুর যে মান আছে সেটা স্বাস্থ্যের জন্য প্রচণ্ড ঝুঁকি। সুতরাং তাদের যদি জরুরি কাজ না থাকে তাহলে যেন ঘরের বাইরে না যায়। এছাড়া ডব্লিউএইচও বলছে মাস্ক পড়তে হবে।
তিনি বলেন, বায়ুদূষণের উৎসগুলোর বিপরীতে কি ব্যবস্থা নিতে পারি। আপনারা এরই মধ্যে লক্ষ্য করেছেন ঢাকার আশেপাশে যে অবৈধ ইটের ভাটা আছে সেগুলো গুড়িয়ে দিচ্ছি। সেটা দিয়ে পুরো সমস্যা সমাধান হবে না। ঢাকা শহরে সিমেন্ট, বালি পরিবহন হয়, নির্মাণ কাজ হচ্ছে। সেগুলো ঢেকে রাখার নিয়ম। আগামীকাল আমরা ১০০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করবো। সেখানে এসব বিষয়ে বিস্তারিত থাকবে।
অবৈধ ইটভাটার সংখ্যা ও কতগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আদালতের হিসাবে ২ হাজারের মতো অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। আমরা প্রথমে ঢাকার আশেপাশে স্থায়ী চিমনিগুলো চিহ্নিত করছি। ১০০ দিনের কর্মসূচিতে দিনে গড়ে তিন থেকে চারটি ইটভাটা গুড়িয়ে দেবো। অর্থাৎ ১০০ কর্ম দিবসে লক্ষ্য হচ্ছে ৫০০ ইটভাটা গুড়িয়ে দেওয়া। ঢাকার চারপাশে এক হাজার অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। আসলে এ ধরনের ইটভাটা সম্পূর্ণ অবৈধ। আরেকটা আছে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা সূচনা করছি, এই বার্তা দিতে চাচ্ছি যে, কোনো ধরনের অবৈধ ইটভাটা আমরা এখানে রাখতে চাচ্ছি না। বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বা বালি, সিমেন্ট পরিবহন, গাড়ির ধোয়া নিয়ন্ত্রণে কি ব্যবস্থা নেবেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এজন্য আমাদের সিটি করপোরেশন আছে, তাদের সহায়তা নিতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের জরিমানাগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। গাড়ির ধোঁয়া নিয়ে বিআরটিএ আছে, যে সব গাড়ির ফিটনেস নাই তাদের বিরুদ্ধে তো আমরা ব্যবস্থা নিতে পারবো না। শব্দদূষণ বিষয়েও বিআরটিএ দেখে। আমরা শুধু পরিবেশের মানমাত্রা নির্ধারণ করি। তবে এটা কার্যকর করার দায়িত্ব শুধু আমাদের না সবার দায়িত্ব। ফ্রান্স জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলা এবং জীববৈচিত্র রক্ষায় বাংলাদেশকে আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানান পরিবেশমন্ত্রী।