খাগড়াছড়িতে কিশোরীকে ধর্ষণ ও প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলায় রাবিতে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিনিধি : খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও এর প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অধ্যয়নরত পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্যারিস রোডে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা- ‘এক দেশ দুই নীতি, মানি না মানবো না’, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘পাহাড়ে আগুন কেন প্রশাসন জবাব চাই’, ‘তনু থেকে কল্পনা, খুন-গুম-ধর্ষণ আর না’, ‘সারা দেশে নারী নিপীড়ন বন্ধ করা’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’ প্রভৃতি স্লোগান ও লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের সঙ্গে অন্য কোনো জাতিগোষ্ঠীর রক্তের মিল নেই বলে ধর্ষণকে সাপোর্ট করা হচ্ছে। ধর্ষণের প্রতিবাদে যখন সেখানে আন্দোলন করা হচ্ছে, তখন সেনাবাহিনীসহ বাঙালি সেটেলাররা তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন। সমতলে ধর্ষণ হলে সেটার আন্দোলন হয়, বিচার হয় কিন্তু পাহাড়ে ধর্ষণ হলে কেন উল্টোটা হয় এবং এক দেশে দুই নীতি কেন রয়েছে সেই প্রশ্ন তুলেন বক্তারা।

সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী শামিন ত্রিপুরা বলেন, মাত্র ১২ বছরের এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। পাহাড়ে যখন এই ঘটনার প্রতিবাদ করা হচ্ছে তখন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনী সেটাকে দমানোর চেষ্টা করছে। এই মুহূর্তে পাহাড়ে আগুন জ্বলছে, রক্ত ঝরছে। যে বাহিনীর মাধ্যমে আমার মা-বোনের সম্মান-ইজ্জতের ওপর হাত চলে আসে, সেই বাহিনীকে আমরা বিশ্বাস করতে পারছি না। তাদের সঙ্গে সহকারী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে সেখানকার সেটেলাররা। আমরা প্রতিবাদ করলেই বিভিন্নভাবে থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের শিক্ষার্থী বিভা চাকমা বলেন, এই যুগে এসেও ধর্ষণের বিচার চাইতে আমাদের রাস্তায় দাঁড়াতে হচ্ছে। আর এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে যখন পাহাড়ি মানুষেরা আন্দোলন করছেন, তখন তাদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। আমরা এই দেশের বিচ্ছিন্ন কোনো জনগোষ্ঠী নয়। আমরা এ দেশেরই নাগরিক। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আমরা সমান অবদান রেখেছি। তাহলে কেন আমাদের দেশপ্রেমিকের ওপর প্রশ্ন তোলা হচ্ছে? আমাদের ক্ষেত্রে কেন দ্বৈতনীতিমূলক আচরণ করা হচ্ছে? কেন মৌলিক অধিকার সংকুচিত করা হচ্ছে?

সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি ফুয়াদ রাতুল বলেন, সমতল ও পাহাড়ের সবাই মিলে আমরা শেখ হাসিনাকে উৎখাত করেছিলাম; কিন্তু পরবর্তী সময়ে আমরা দেখতে পেলাম, জুলাই গণঅভ্যুত্থান থেকে সবার আগে পাহাড়িদের বিচ্ছিন্ন করা হলো। ঢাকায় পাহাড়িদের যৌক্তিক আন্দোলনে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি হামলা করল, কিন্তু বর্তমান সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো পাহাড়িদের আন্দোলনে পুলিশ দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। পাহাড়িদের প্রশ্নে সব শাসকের একই মনোভাব।যু

মন্তব্য করুন