অনলাইন ডেস্ক : দেশের উদীয়মান রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এক নতুন রাজনৈতিক অবস্থানের দিকে মোড় নিচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে জামায়াতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অভিযোগে থাকা দলটি এবার সেই অবস্থান থেকে সরে এসে স্পষ্ট জামায়াতবিরোধী বার্তা দিচ্ছে। দলটির তরুণ নেতা ও আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এই পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে।
সাম্প্রতিক একটি ফেসবুক পোস্টে নাহিদ ইসলাম লিখেন জামায়াতের পিআর পদ্ধতির আন্দোলনের নামে পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রতারণা করছে। ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রক্রিয়া ও জাতীয় আলোচনাকে গণঅভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্র ও সংবিধান পুনর্গঠনের আসল প্রশ্ন থেকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে পরিকল্পিতভাবে আন্দোলন চালিয়েছে।
ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের বিরোধিতা করেছে, তারা কখনও সংস্কার আলোচনায় অংশ নেয়নি। না জুলাই অভ্যুত্থানের আগে, না পরে। তারা কোনও কার্যকর প্রস্তাবও দেয়নি, কোন সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গিও উপস্থাপন করেনি, কিংবা গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের প্রতি কোনও প্রতিশ্রুতিও দেখায়নি।
নাহিদ ইসলামের স্পষ্ট অবস্থানের পর তার সুঁড়ে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, জামায়াত কখনোই গণমানুষের দল ছিল না, তারা শুধু ক্ষমতার রাজনীতিতে সুবিধা নিতে চেয়েছে। ‘ইতিপূর্বে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ জামায়াতকে ব্যবহার করেছে, আর এবার জামায়াত আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করছে। জামায়াত ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগ ফিরে আসার সম্ভাবনা তৈরি হবে।’ প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগ ও জামায়াত আসলে একই মুদ্রার দুই পিঠ—একটি অপরটির বিকল্প নয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হান্নান মাসউদ বলেন,জুলাই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগের রাত এবং সেই দিন সকালেও জামায়াত জানিয়েছিল, তারা যাবে কিন্তু স্বাক্ষর করবে না। তারা পিআর ছাড়া স্বাক্ষর করবে না। এই ধরনের কথা বলতে দেখা যেত এরশাদকে। ২০১৪ সালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ সকালে বলতেন নির্বাচনে যাব, বিকেলে বা দুপুরে যাবো না, আবার রাতে বলতেন, নির্বাচনে যাব। জামায়াতের বর্তমান অবস্থানও এখন এমনই—কথা ও কাজের মধ্যে কোনো সামঞ্জস্য নেই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, সাম্প্রতিক এনসিপির স্পষ্ট জামায়াতবিরোধী রাজনৈতিক অবস্থান জাতীয় রাজনীতিতে একটি তাৎপর্যপূর্ণ মোড় নির্দেশ করছে। বিশেষ করে জামায়াতকে ঘিরে যে রাজনৈতিক জোট গঠনের প্রক্রিয়া চলছিল, সেখানে এনসিপির বর্তমান অবস্থান, ভবিষ্যতে সম্ভাব্য জোটগুলোকে দুর্বল করতে পারে। জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের বক্তৃতায় দুই দলের রাজনৈতিক বিরোধ দৃশ্যমান হয়েছে।ই