অনলাইন ডেস্ক : ‘আওয়ামী লীগ সমর্থন করেন, জুলুম নির্যাতন করেননি এমন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর এ বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় চলছে। গত শনিবার চট্টগ্রামে বিভাগীয় পর্যায়ে সদস্য ফরম বিতরণ ও নবায়ন কার্যক্রম অনুষ্ঠানে তিনি এই বার্তা দেন। বিএনপির এই নেতা আরো বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের চিহ্নিত দোসররা বিএনপির সদস্য হতে পারবেন না। তবে ১জন ভালো লোক, আওয়ামী লীগের চিহ্নিত দোসর নন কিন্তু সমাজে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি, কখনো রাজনৈতিকভাবে অস্থিরতা সৃষ্টি করেননি, বিএনপির কার্যক্রমকে প্রতিহত কিংবা বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেননি, বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি করেননি, পারলে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাদের বিএনপির সদস্য করতে বাধা নেই। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে গোটা জাতি যখন ঐকবদ্ধ্য, ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচার প্রক্রিয়া যখন শুরু হচ্ছে; তখন বিএনপির দায়িত্বশীল নেতার মুখে এমন উক্তি রাজনীতি-সচেতন মানুষ কিংকর্তব্যবিমূঢ়। সত্যিই কি বিএনপি দিল্লির এজেন্ডা বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পথে হাঁটবে? ফখরুদ্দিন-মঈন উ আহমদের সরকারের সময়ের মতো সত্য ও জবাবদিহিতা কমিশনের (ট্রুথ কমিশন) মতো ‘আওয়ামী লীগের লোকজনকে দুধের মতো সাদা ফকফকা’ সার্টিফিকেট দিয়ে বিএনপিতে নেবে? ২০০৮ সালে সাবেক বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের নেতৃত্বে ট্রুথ কমিশন গঠন করে কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে ৪৫৬ জন চিহ্নিত দুর্নীতিবাজকে ‘ক্লিন ব্যক্তি’ সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছিল। ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা ইতোমধ্যেই রিপোর্ট করেছে, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হতেই সেই দলের সমর্থক ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির নেতাদের দলের টানতে সক্রিয় হলো বিএনপি। বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধরী বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সঙ্গীরা বিএনপির সদস্য হতে পারবেন না। তবে সমাজে গ্রহণযোগ্য কোনো ব্যক্তি, যিনি আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন, তাকে দলে (বিএনপি) নিতে অসুবিধা নেই। ভারতের আরো কয়েকটি পত্রিকা এ নিউজ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে। ভারতের গণমাধ্যম এই খবর এত গুরুত্ব দিয়ে প্রচারের রহস্য কি?
এখন প্রশ্ন উঠেছেন আওয়ামী লীগের ‘গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি’ চেনার উপায় কি? ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ সালে পাতানো নির্বাচনে যারা নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন তাদের ‘গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি’ ধরে নেয়া হবে? ১৫ বছর খুন-গুম-এমনকি জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের সময় যারা আওয়ামী লীগকে সমর্থন জানিয়েছেন তারা কি গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি? বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতার ভাষায় আওয়ামী লীগের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের বিএনপিকে পুনর্বাসন করা জায়েজ হলে সেনাপ্রধান গত ১১ মার্চ ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ রাজনীতির সুযোগ দেয়ার যে প্রস্তাব দিয়েছেন (২১ মার্চ জাতীয় নাগরিক পার্টির হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দেশবাসীকে এ তথ্য জানান) সেটিতে দোষ কী ছিল? সদস্য সংগ্রহ অভিযানে আমীর খসরুর এমন আহ্বানে বিএনপির মধ্যেই প্রশ্ন করছেন বিএনপি কি দিল্লির এজেন্ডা বাস্তবায়নে সত্যিই ‘আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন প্রকল্প’ খুলতে যাচ্ছে? নাকি ব্যবসায়ী নেতা আমীর খসরু নিজের ব্যবসায়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বিএনপিকে আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ের নেতাদের পুনর্বাসনের ঠিকাদারি নিয়েছেন? নাকি পর্দার আড়ালে দিল্লির থিঙ্কট্যাঙ্কদের চেতনা? বিএনপি যদি আওয়ামী লীগের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের দলে পুনর্বাসন করে তাহলে জামায়াত, এনসিপি কি বসে থাকবে? আর আওয়ামী লীগ নেতারা রং পাল্টিয়ে যে নামেই মাঠে নামুন, সময়মতো তারা কি বিএনপির বিরুদ্ধে ফণা তুলবে না? দেশে এখনো শতাধিক রাজনৈতিক দল থাকলেও মানুষ এখনো মনে করে বিএনপি তাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল।
হিন্দুত্ববাদী ভারতের আগ্রাসনবিরোধী মানুষের চিন্তা-চেতনা বিএনপি ধারণ করে সেটি তারেক রহমানের বিভিন্ন বক্তৃতায় প্রকাশ পাচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার দেশে প্রত্যাবর্তনে মানুষের স্বাগত জানানোর দৃশ্য সে বার্তা দেয়। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিগুলোর ‘কমন শত্রু’ ফ্যাসিস্ট হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। ৫ আগস্ট হাসিনা পালিয়ে দিল্লি যাওয়ার পর তাকে রিসিভ করেছে দেশটির নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর দিল্লি নানাভাবে বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করে। ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হওয়ায় কৌশল পাল্টে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের নতুন কৌশল নিয়েছে। কৌশলের অংশ হিসেবে তথাকথিত পরিচ্ছন্ন নেতা শিরিন শারমীন, সাবের হোসেন চৌধুরী গংদের নেতৃত্বে ‘রিফাইন আওয়ামী লীগ’ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলো হিন্দুত্ববাদী ভারতের ‘হাসিনা পুনর্বাসন’ চানক্যনীতি ধরে ফেলে। অতঃপর অন্য দলে তৃণমূল পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের ‘পুশইন’ করে নিজেদের শক্তি ধরে রেখে ‘ঝোপ বুঝে কোপ’ মারার কৌশল গ্রহণ করে। আমীর খসরু চৌধুরী কি সেই এজেন্ডা বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের বিএনপির নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তৃণমূল নেতাদের? গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি নিয়ে বিতর্ক চলছে। এর আগে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের ‘ফ্যাসিস্ট শব্দ বারবার বলতে ভালো লাগে না’ ও ‘জামায়াত ভারতের বিরুদ্ধে নয়’ ইত্যাদি বক্তব্য দেয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন উঠে জামায়াত ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে বিদেশি কোন শক্তির সহায়তায় পর্দার আড়ালে দিল্লির সঙ্গে সমঝোতা করেছে। যদিও সেটা বেশিদূর এগোতে পারেনি। তবে বিএনপির দু’-চারজন নেতার কথাবার্তায় ভারতীয় স্বার্থ রক্ষার অভিযোগ উঠলেও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশপ্রেমী কঠোর অবস্থান ওই নেতারা হালে পানি পায়নি। তারেক রহমান একদিকে ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করা যাবে না’ বলছেন অন্যদিকে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বলেছেন, ‘আগস্টে খুনি স্বৈরাচারী দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। এই স্বৈরাচার একদিন একটি কথা বলেছিল ভারতকে যা দিয়েছি তা ভারত সারা জীবন মনে রাখবে। তাই এই পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত শুধু স্বৈরাচারকে মনে রেখেছে, বাংলার মানুষকে মনে রাখেনি।’ ১১ ফেব্রুয়ারি উত্তরাঞ্চলের তিস্তা নদীর পারের পাঁচটি জেলার ১১টি পয়েন্টে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও মেগা প্রকল্প অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবিতে টানা ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবেশী দেশ থেকে আর অন্যায্যতা দেখতে চায় না, ফেলানীর ঝুলন্ত লাশ আর দেখতে চায় না।’ ভারতের চানক্যনীতি নিয়ে তারেক রহমানের বার্তা পরিষ্কার। শীর্ষ নেতার কাছে বিএনপির তৃণমূল নেতারা বার্তা পেয়ে গেছেন। গত ১৫ মে কুমিল্লায় এক অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘বিএনপির শত্রু আওয়ামী লীগ। তবে আগে শত্রু ছিল শুধু আওয়ামী লীগ, এখন অনেক শত্রু। কিছু গোষ্ঠী আছে, কিছু লোক আছে, যারা সুযোগসন্ধানী। সুযোগ নিচ্ছে, চাঁদাবাজি করছে, দখলবাজি করছে আর বদনামটা বিএনপির ঘাড়ে আসছে। এখান থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে।
এদিকে ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর অনলাইন এক্টিভিস্ট পিনাকি ভট্টাচার্যের একটি স্ট্যাটাস সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। পিনাকির ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘অমিত শাহের (ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিজেপি সরকারের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি) সামনে পারলে তো হাঁটু ভাইঙ্গা বসে পড়ে বিএনপির আমীর খসরু। এরা ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়বে? পোস্টে জুড়ে দেয়া ছবিতে দেখা যায় অমিত শাহ বসে আছেন, আর মাথা নিচু করে কুর্ণিশ করার ভঙ্গিমায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী তার সঙ্গে কথা বলছেন। এ প্রসঙ্গে বিএনপির একজন নেতা বলেন, আমীর খসরুরা ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিক হয়েছেন। ব্যবসার লাভের বাইরে তারা কিছু বোঝেন না। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সাপে-নেউলে সম্পর্ক। তারপরও যুক্তরাষ্ট্র সব সময় এক চীন নীতিতে বিশ্বাসী। অথচ ২০০১ সালে বিএনপি জোট ক্ষমতায় আসার পর বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চীনকে উপেক্ষা করে ব্যবসার জন্য তাইওয়ানের সঙ্গে চুক্তি করে। এরপর ঢাকায় তাইওয়ান কনস্যুলেট অফিস খোলে। ফলে চীনের সঙ্গে বিএনপির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তখন দেশে-বিদেশে ও বিএনপির ভেতরে এই ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠেছিল।
দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামী লীগ যেভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম-নির্যাতন, হামলা-মামলা করেছে; তাতে তৃণমূলের কোনো আওয়ামী লীগ নেতা বিএনপিতে যোগদান করলে বিএনপির নেতাকর্মীরা কি টিকতে পারবে? গর্তে লুকিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতে কোটি কোটি টাকা। তারা টাকা দিয়ে সব কিছুকে বশীকরণের চেষ্টা করবে না? এক সময় সময় বুঝে আওয়ামী লীগের কোটি কোটি কর্মী সমর্থন মুজিববাদী চেতনায় ফিরে যাবে। ফলে আমীর খসরুর ভাষায় ‘গ্রহণযোগ্য আওয়ামী লীগ নেতাদের’ বিএনপির সদস্য করার সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী। বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচন হয়েছে দিল্লির নীলনকশা অনুযায়ী। সে নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হওয়ার মানেই নির্বাচিত। তারপরও ট্র্যান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জরিপ অনুযায়ী জাতীয় সংসদে ৭৫ শতাংশ এমপি ছিলেন ব্যবসায়ী। আওয়ামী লীগ দলের নেতাদের বদলে এমপি পদ বিক্রির বাণিজ্য করায় ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা খরচ করে এমপি হন। এখন ‘তথাকথিত গ্রহণযোগ্য’ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিএনপিতে ভেড়ালে রাজনীতিতে হর্স ট্রেডিংয়ের মতো কেনাবেচার শুরু হয়ে যাবে। কারণ বিএনপি নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতাদের দলে ভেড়ালে জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও অন্যান্য দল কি বসে থাকবে? ভারত শত শত কোটি টাকা খরচ করে ভিন্ন ভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রার্থী করে ভোট কিনে এমপি করবেন না তার নিশ্চয়তা কোথায়? ২০২৪ সালের নির্বাচনে কয়েকজন প্রার্থী প্রকাশে বলেছিলেন তারা দিল্লি মনোনীত প্রার্থী। অন্যদিকে জামায়াত তো ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগ নেতাদের দলে টানার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তৃণমূলের আওয়ামী লীগ নেতাদের ফরম পূরণ করে দলে নিচ্ছেন। আর অন্তর্বর্তী সরকারের ছাতার নিচে গড়ে উঠা এনসিপিও আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার চেষ্টায় ‘নীতির পরিবর্তন করে’ যে প্রক্রিয়ায় হোক ক্ষমতায় যেতে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার জন্য টাকাওয়ালা প্রার্থীর সন্ধান করবে না তার নিশ্চয়তা কী। তখন অন্তর্বর্তী সরকারের ছাতার নিচে থাকা এনসিপির দিকে আওয়ামী লীগের টাকাওয়ালা নেতারা দৌঁড়াবেন না ভবিষ্যতের চিন্তা করে বিএনপির দিকে যাবেন?
১৯৭৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানের বাকশাল গঠনের পরবর্র্তী সময়ের রাজনৈতিক দৃশ্যপটের কথা মনে আছে? বাকশালে যোগ দেয়ার জন্য তখন হিড়িক পড়েছিল। বিভিন্ন দলের রাজনীতিক থেকে শুরু করে সামরিক- বেসামরিক আমলা, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ব্যবসায়ী, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, কবি-সাহিত্যিক-সাংবাদিকদের মধ্যে বাকশালে যোগদানের প্রতিযোগিতা শুরু হয়। শুধু সাংবাদিকদের মধ্যেই ২৩ মে ২২৪ জন, ২ জুন ৯ জন সম্পাদক, ৪ জুন ৩০২ জন সাংবাদিক গণভবনে গিয়ে বাকশালের সৈনিক হওয়ার আবেদন করেন। অন্যান্য সেক্টরে ছিল একই চিত্র। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীদের ভাষায় ‘গ্রহণযোগ্য আওয়ামী লীগ নেতাদের’ বিএনপিতে যোগদানের সুযোগ দেয়া হলে আগামী নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অঙ্গনের দৃশ্যপট পাল্টে যাবে। তখন কি জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী ১৪শ মানুষের বিনিময়ে ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের চেতনা মূল্যহীন হয়ে পড়বে না?
২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে ‘বিএনপির রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা : ৩১ দফা বাস্তবায়ন’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘স্বৈরাচারের মাথা পালিয়ে গিয়েছে কিন্তু তাদের লেজ রয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে সচেতন থাকতে হবে। আমাদের ভেতরেও এজেন্ট ঢুকে গেছে। তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের সোচ্চার হতে হবে।ই