আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করেই ছাড়ল বাংলাদেশ

ডেস্ক : দুর্দান্ত বোলিং-ফিল্ডিংয়ে লক্ষ্যটা ছিল নাগালেই। পরে ব্যাট হাতে নিজের মাস্টারক্লাস মেলে ধরলেন সাইফ হাসান। তার ছক্কা বৃষ্টিতে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করেই ছাগল বাংলাদেশ।

৩ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে রোববার ৬ উইকেটে জিতেছে টাইগাররা। ১৪৪ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে যায় ১২ বল হাতে রেখেই।

আগের ২ ম্যাচ জিততে একটা পর্যায়ে কিছুটা শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল দল। এবার পরিপূর্ণ পারফরম্যান্সে জয় পেল জাকের আলির নেতৃত্বাধিন দলটি।

শুরুর দিকে সাইফকে সঙ্গ দেন তানজিদ হাসান। শেষটা সাইফ টানেন নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে।

৩৮ বলে সাত ছক্কা ও দুই চারে ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন সাইফ। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কা ও ভারতের বিপক্ষে দারুণ দুটি ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যান উপহার দিলেন আরেকটি মনে রাখার মতো ইনিংস।

তার সঙ্গে ২৪ বলে ৩৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে সোহানের অবদান ৯ বলে ১০। ছক্কায় ম্যাচ শেষ করেন সোহান।

শারজাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যথারীতি বাংলাদেশের জয়ের ভিত গড়ে দেন বোলাররাই। প্রথম ম্যাচে ১৫১, পরের ম্যাচে ১৪৭, চার রান কম করার সেই ধারায় এবার আফগানদের ইনিংস শেষ হয় ১৪৩ রানে।

৩ ওভারে ১৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার মোহাম্মাদ সাইফউদ্দিন। টানা দুই বলে উইকেট নিয়ে আফগানদের বিপদে ফেলে দেওয়া তানজিম হাসান সাকিব ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে নেন ২ উইকেটই। একই বোলিং ফিগার নামুস আহমেদেরও।

একটি করে নেন শরিফুল ইসলাম ও রিশাদ হোসেন। দুজনই ওভারপ্রতি রান দেন ছয়ের উপরে। রিশাদ ছিলেন বেশিই খরুচে। ৪ ওভারে এই লেগ স্পিনার দেন ৩৯ রান।

লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা ছিল ভালো-মন্দের মিশেল। প্রথম ২ ওভারে রান আসে কেবল ৩, পরের ২ ওভারে ২১। এরপরই শেষ হয় পারভেজ হোসেন ইমনের ১৬ বলে ১৪ রানের অস্থির এক ইনিংস।

সাইফ ক্রিজে গিয়েই হাতের জোর দেখাতে শুরু করেন। তার প্রথম চার স্কোরিং শটের তিনটিই ছিল ছক্কা।

তানজিদ দুই দফায় জীবন পেয়েও প্রত্যাশার দাবি মেটাতে পারেননি। সহজ ক্যাচ দিয়ে বাঁচার পরের বলেই আউট হন ৩৩ বলে ৩৩ করে।

মুজিব-উর-রহমানের টানা দুই বলে বিদায় নেন জাকের আলি (১০) ও শামীম হোসেন (০)।

৩২ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি পূর্ণ করেন সাইফ।

এর আগে টস জিতে বল বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জাকের আলি। পাওয়ারর প্লের মাঝে দল তুলে নেয় ৩ উইকেট।

বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে চতুর্থ ও নবম উইকেট জুটি। দুই জুটি থেকেই এসেছে সমান ৩৪ রান করে। দুই জুটিতেই ছিলেন দরভিশ রসুলি। রসুলি ও মুজিব-উর-রহমানের ব্যাটেই লড়াইয়ের পুঁজি পায় আফগানরা।

সপ্তম ওভারে ব্যাটিংয়ে নেমে রসুলি আউট হন ১৯তম ওভারে সাইফউদ্দিনের শিকার হয়ে। ২৯ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় তার ভ্যাট থেকে আসে ইনিংস সর্বোচ্চ ৩২ রান। ৯৮ রানে দল ৮ উইকেট হারানোর পর মুজিবের সঙ্গে তার ৩৪ রানের জুটি ছিল ২২ বলে।

শেষ পর্যন্ত ১৮ বলে ক্যারিয়ার সেরা ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন মুজিব। অলআউটের শঙ্কায় পড়া আফগানিস্তান ৯ উইকেটে করে ১৪৩ রান।

এই দুজন ছাড়া আফগান ইনিংসে বিশোর্ধো রান কেবল সেদিকুল্লাহ আতালের। এই টপ অর্ডার ২৩ বলে করেন ২৮ রান।

শেষ ২ উইকেটে ৪৫ রান তোলে আফগানিস্তান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৪৩/৯ (গুরবাজ ১২, ইব্রাহিম ৭, আটাল ২৮, তারাখিল ১১, রাসুলি ৩২, ওমারজাই ৩, নাবি ১, রাশিদ ১২, এহমেদজাই ০, মুজিব ২৩*, বাশির ২*; শরিফুল ৪-০-৩৩-১, নাসুম ৪-০-২৪-২, তানজিম ৪-০-২৪-২, সাইফ উদ্দিন ৩-০-১৫-৩, সাইফ হাসান ১-০-৬-০, রিশাদ ৪-০-৩৯-১)।

বাংলাদেশ: ১৮ ওভারে ১৪৪/৪ (পারভেজ ১৪, তানজিদ ৩৩, সাইফ ৬৪*, জাকের ১০, শামীম ০, সোহান ১০*; মুজিব ৪-০-২৬-২, ওমারজাই ৩-০-১২-১, বাশির ৩-০-৩৮-০, রাশিদ ৪-১-১৩-০, এহমেদজাই ৪-০-৫০-১)

ফল: বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: সাইফ হাসান।

সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ৩-০তে জয়ী।

ম্যান অব দা সিরিজ: নাসুম আহমেদ।ই

মন্তব্য করুন