
অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, জামায়াত আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্র উপহার দিতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, ‘যদি জনগণ জামায়াতের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেয়, তবে আমরা ১৮ কোটি মানুষের কাছে রাষ্ট্রের মালিকানা হস্তান্তর করব, কারণ রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক জনগণ।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের উত্তরা জোনের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত র্যালি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সেলিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার কষ্টার্জিত অর্জনকে ব্যক্তিগত, দলীয় ও পৈত্রিক সম্পত্তিতে পরিণত করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানী করতে ছাড়েনি। এরা বিরুদ্ধ মতাদর্শের মানুষকে স্বাধীনতাবিরোধী আখ্যা দিয়ে অপরাজনীতি করেছে, এমনকি মুক্তিযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকেও রাজাকার বলে আখ্যায়িত করেছে।
তিনি বলেন, ‘‘শেখ হাসিনাই ছিলেন জঙ্গীবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক।’’ সেলিম উদ্দিন এও বলেন, ‘‘বাকশালীরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করতে না পেরে তাদের বিরুদ্ধে রাজাকার ও জঙ্গী তকমা লাগিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘‘অবিলম্বে জঙ্গীবাদীদের বিচার করা উচিত।’’ জামায়াত নেতারা দাবি করেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবসায়িক পণ্য হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং দেশের মেধাবী মানুষকে রাজাকারের নাতি-পুতি আখ্যা দিয়ে তার নৈতিক পতন ঘটিয়েছে। সেলিম উদ্দিন আরো বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা বাস্তবতা মেনে পদত্যাগ করলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভিন্ন হত।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘‘আওয়ামী লীগ তাদের আদর্শ বিরোধীদের ওপর এমন কোনো নির্যাতন করেনি, যা তারা করেনি।’’ জামায়াত নেতারা বলেন, ‘‘তারা আমাদের চলাফেরা করতে দেয়নি, এমনকি নামাজ ও ইফতার মাহফিল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঈদের নামাজও আমাদের জন্য নিষিদ্ধ ছিল।
সেলিম উদ্দিন সতর্ক করে বলেন, ‘‘যারা স্বৈরাচারি মনোভাব নিয়ে রাজনীতি করতে চান, তাদের অবস্থা শেখ হাসিনার মতো হবে। তাদেরকে ইতিহাসের আস্তাকূড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হবে।
মহানগরী আমির বলেন, ‘‘দেশের মানুষ সকল দলের শাসন দেখেছে, কিন্তু কোনো দল জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়নি। তাই জনগণ এখন জামায়াতের শাসন দেখতে চায়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জামায়াতের নেতাকর্মীদের জনগণের সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘‘মানুষের কল্যাণ কখনো মানুষের তৈরি বিধান দিয়ে সম্ভব নয়।’’ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘‘এজন্য আগামী নির্বাচনে যারা ক্ষমতায় আসতে চান, তাদের উচিত আল্লাহর আইনে দেশ পরিচালনা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া।
তিনি দেশের ইসলামিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গঠনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘‘জামায়াত দেশের জনগণকে দুর্নীতি, লুটপাট, হত্যা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যমুক্ত একটি আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্র উপহার দিতে চায়।
র্যালীর পর আজমপুরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উত্তরা পশ্চিম অঞ্চল পরিচালক ও মহানগরী নায়েবে আমির ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা। সভাটি পরিচালনা করেন মহানগরী সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির মোহাম্মদ আব্দুর রহমান মূসা, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসের শূরা সদস্য জামাল উদ্দিন, মহানগরী উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি এইচ এম আতিকুর রহমান, উত্তরা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম, এবং অন্যান্য নেতা-কর্মীরা।
বিজয় র্যালিটি উত্তরা ১১ চৌরাস্তা জমজম টাওয়ারের সামনে থেকে শুরু হয়ে উত্তরা আজমপুরে এসে শেষ হয়।ই