‘অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনসার সদস্যদের গাফিলতি পেলে ব্যবস্থা’

ঢাকা জেলা সমাবেশ অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত মহাপরিচালক

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ বলেছেন, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় কোনো কিছু ঘটলে সবার আগে আনসার বাহিনী জানতে পারে। তাদের ফোর্স প্রতিটি গ্রামে, পাড়া-মহলায় রয়েছে। দেশের কোথাও অপরাধ সংঘটন হলে, তা দ্রুত জানাতে পারে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনসার বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা রাখতে হবে।

তবে এক্ষেত্রে আনসার সদস্যদের কোনো গাফিলতে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি ভবনের কাউন্সিল হলে আনসার বাহিনীর ঢাকা জেলা সমাবেশ-২০২৫ এ প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলা কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ মোস্তাক আহমদ। সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিচালক আশরাফুল আলম।

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আরিফ হোসেন, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহররম আলী, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রফিউল আলম ও ঢাকা মহানগর আনসারের পরিচালক নুরুল আবছার।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, সর্তক থাকার পরও যদি দু’একটি অপরাধ সংঘটন হয়, সেটা সবাই (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) মিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশের সামাজিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে আনসার বাহিনী বদ্ধপরিকর। আনসার বাহিনী দেশজুড়ে বিস্তৃত।

আমরাই পারি সোনার বাংলা গড়ে তুলতে। আনসার বাহিনীর প্রতিটি সদস্য সর্বত্র আনুগত্য, সুশৃঙ্খল ও পরিশ্রমীর জন্য প্রশংসিত হয়ে আসছেন। গত ৫ আগস্টের পর দেশের ভঙ্গুর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে আনসার সদস্যরা বুক চেতিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই সময় দেশের সাধারণ মানুষসহ পুলিশের থানার নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা ঠিক রেখেছেন। সর্বোপরি রাষ্ট্রকে বিপর্যায়ের হাত থেকে রক্ষা করেছে।
তিনি বলেন, আশার সংবাদ হলো এখন পর্যন্ত যেসব দেশের কূটনৈতিক মিশনগুলো নিজেদের নিরাপত্তায় আনসার বাহিনীর গার্ড নিয়েছে। তারাও প্রশংসা করেছেন। আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে প্রশিক্ষিত জনশক্তি নিতে আগ্রহী। আমরা বাহিনীর মহাপরিচালকের নির্দেশে এখন সেই প্রশিক্ষিত জনশক্তি তৈরিতে কাজ শুরু করেছি। আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক)-সহ বিভিন্ন দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আনসার বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। দেশের গন্ডি পেরিয়ে এসব প্রশিক্ষণার্থীরা বৈদেশিক কর্মসংস্থানেও ভূমিকা রাখতে পারবে।

সমাবেশে উপস্থিত আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ বলেন, আমাদের বিশাল নেটওয়ার্ককে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। আমার দায়িত্ব আমার চেয়ে আর কেউ ভালো বোঝে না, এটা মাথায় রেখেই কাজ করবেন। এখন থেকে মাথা উঁচু করে কাজ করবেন, বুক ফুলিয়ে কাজ করবেন। আশা করবো আপনারা ভবিষ্যতে আরও ভালোভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। দেশে বর্তমানে আনসার-ভিডিপির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬১ লাখ। ফলে আনসার বাহিনীর ইউনিফর্মে গর্ববোধ করবেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রের যেকোনো সংকট ও দুর্যোগে অন্যতম মুখ্য ভূমিকায় আমরা সর্বদা অগ্রগামী। আনসার-ভিডিপি বাহিনীর ২টি নারী ব্যাটালিয়নসহ ৪২টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে। ৫ হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা কাজ করছি। সরকারের সমস্ত নির্দেশে আমরা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিচ্ছি। সামাজিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। দেশকে এগিয়ে নিতে প্রতিটি জেলায় পুরুষ এবং নারীদের নিয়ে পৃথক প্লাটুন রয়েছে। সুন্দর দেশ গঠনে আনসার সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠান শেষে সেবামূলক কাজে বিশেষ অবদানের জন্য ঢাকা জেলার আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মাঝে তিনি পুরস্কার বিতরণ করেন। এর আগে, অতিরিক্ত মহাপরিচালক আইডিইবি ভবন চত্বরে বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে ঢাকা জেলা সমাবেশ উদ্বোধন করেন।বা:প্র:প্র।

মন্তব্য করুন