
নিজস্ব প্রতিনিধি : সবার মন জয় করা অনন্য স্বাদের ও রঙে টসটসে দেশের সেরা দিনাজপুরী লিচু এখন বাজারে। দিনাজপুরের লিচু মানেই অন্যরকম মিষ্টি ও রসালো স্বাদ। যার সারাদেশে চাহিদা ও বাজার রয়েছে। সারাদেশে কমবেশি লিচু উৎপাদিত হলেও দিনাজপুরের লিচুর চাহিদা বেশি।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিভিন্ন জাতের লিচুর মধ্যে বেদানা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-থ্রি, কাঁঠালি, মোজাফফরপুরী লিচু এখন সবার কাছেই প্রিয়। চলতি সপ্তাহেই পুরোদমে লিচু বাজারে পাওয়া যাবে। এবার রোদের তীব্রতা ও বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আগেই অনেক লিচু পাকার রং ধরে এবং এক শ্রেণির ব্যবসায়ী অপরিপক্ক এসব লিচু বিক্রি করেছেন। এর স্বাদ পাওয়া যাবে না।
আবার খেলে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সময়ের আগেই বাজারে দেখা যায় এসব লিচু।
এদিকে, দিন দিন লিচুর বেচা-কেনা বাড়ছে। বাজারে প্রথম আসে মাদ্রাজী লিচু।
এরপর কাঁঠালি, মোজাফফরপুরী, বোম্বাই, বেদানা। আর শেষের দিকে চায়না থ্রি লিচু বাজারে নামবে।
দিনাজপুরের কালিতলা মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে বসছে লিচুর বাজার। ব্যবসায়ীরা জেলার বিভিন্ন বাগান আর বাজার থেকে লিচু কিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন। এখন পরিবহন ছাড়াও কুরিয়ার সার্ভিসেও দেশের বিভিন্ন স্থানে লিচু যাওয়া শুরু হয়েছে।
এবার দিনাজপুর জেলায় লিচু উৎপাদন এবং বেচা-কেনা ৭০০কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবার আশা করছে কৃষি বিভাগ।
দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলাতে কম বেশি লিচুর চাষ হয়। বেশি চাষ হয় সদর উপজেলার মাসিমপুর, উলিপুর, আউলিয়াপুর, মহব্বতপুর, বিরলের মাধববাটি, করলা, রবিপুর, রাজারামপুর, মহেশপুর, বটহাট এবং চিরিরবন্দর, বিরল, বীরগঞ্জ, খানসামা উপজেলায়।
দিনাজপুর শহরের কালিতলা লিচুর বাজারে লিচুতে ভরপুর। এখন পাইকারি বাজারে প্রতি হাজার মাদ্রাজি লিচু বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকায়। অন্যদিকে খুচরা বাজারে প্রতিশত মাদ্রাজি লিচু ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা। প্রতিশত বেদনা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চিরিরবন্দরের লিচু চাষি আফসার আলী বলেন, বোম্বাই লিচুর ফলন মোটামুটি ভালো। আশা করছি বাজারে লিচুর দাম ভালো পাবো।
মাসিমপুরের চাষী ও বিক্রেতা মোসাদ্দেক হোসেন জানান, দিনাজপুরের লিচুর দেশব্যাপী কদর রয়েছে। কিন্তু এ লিচু পাকার পর বেশি দিন রাখা যায় না। আবার গাছ থেকে নামানোর পর কয়েকদিনের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। এতে তাড়াতাড়ি মৌসুম শেষ হয়ে যায়। তাই দীর্ঘদিন লিচু সংরক্ষণে একটি হিমাগার এ অঞ্চলে তৈরি হলে চাষীরা লাভবান হবে এবং সারা বছরই এর স্বাদ নিতে পারবে মানুষ। এছাড়াও লিচু রফতানি যোগ্য হতে পারে।
বিরলের ধামইর ইউপির লিচু বাগান ক্রেতা শাহিন হোসেন জানান, ফলন ভালোই আছে। আশা করছি ভালোই লাভ হবে। তিনটি বাগান কিনেছি। একটি বাগান ২৪ লাখ টাকায় আগামী তিন মৌসুমের জন্য কিনেছি। এই বাগান থেকে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা লাভ হবে আশা করছি।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছরে দিনাজপুর জেলায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে লিচু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। যা ওজনের আকারে ৩৫ হাজার টন।বা:প্র।