৭ দিনের মধ্যে সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের সাজা ও মামলা বাতিলের দাবি

ডেস্ক রিপোর্ট : আগামী ৭ দিনের মধ্যে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান ও মিসের মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের দেওয়া ফরমায়েশি সাজার রায় বাতিল এবং প্রেস খুলে দেওয়াসহ পত্রিকা প্রকাশের সব অন্তরায় দূর করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক ও পেশাজীবী নেতারা।

একইসঙ্গে আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে কর্মীদের দীর্ঘ প্রায় একযুগ বেকার রাখা এবং পত্রিকার প্রেস জব্দ করে রেখে যন্ত্রপাতি বিনষ্ট ও লুটপাটের ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানান নেতারা।

শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে নেতারা এ দাবি জানান। সামাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।

আমার দেশ-এর নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বিএফইউজের সাবেক সভাপতি ও আমার দেশ-এর নগর সম্পাদক এম আবদুল্লাহ।

বক্তব্য দেন- বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, সাবেক মহাসচিব এমএ আজিজ, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার, বর্তমান সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, শিক্ষক নেতা ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীল আলম প্রধান, প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ডিআইউর সাবেক সভাপতি মোরসালিন নোমানী, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ঐক্যজোটের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, বিএফইউজের সহসভাপতি একেএম মহসিন, সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল, প্রচার সম্পাদক শাহজাহান সাজু, মফস্বল সাংবাদিক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত ইবনে মইন চৌধুরী, ইংরেজী দৈনিক ইকোনমিক এক্সপ্রেসের সম্পাদক আমীর হোসেন জনি, বিশিষ্ট প্রকাশক মুনীরুজ্জমান প্রমুখ।

ডা. জাহিদ হোসেন প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘দৈনিক আমার দেশ গণমানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছিল। মাহমুদুর রহমানের সাহসী নেতৃত্বে পত্রিকাটি যখন জনপ্রিয়তায় তুঙ্গে উঠে তখন আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার তা বন্ধ করে দেয়। মাহমুদুর রহমানকে বার বার গ্রেফতার, রিমান্ড, হামলা, মামলা করে তার জীবনকে বিপন্ন করে তুলে।

মাহমুদুর রহমানের মতো নির্ভিক সম্পাদক সমসাময়িককালে আর দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে বিএনপি নেতা ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে পালাতে বাধ্য হওয়া আওয়ামী সরকার আপনার বিরুদ্ধেও অনেক মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে আমরা পেশাজীবী ও সাংবাদিক সমাজ প্রতিবাদ জানিয়েছে। আপনার সাজা বাতিল হয়েছে, মামলা প্রত্যাহার হয়েছে। আশা করি, মাহমুদুর রহমান এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে দেওয়া সাজা ও মামলা বাতিলে আপনি উদ্যোগ নেবেন। দৈনিক আমার দেশ প্রকাশের পথ সুগম করবেন।

রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান ও আমার দেশ পত্রিকার অপরাধ হাচ্ছে তারা সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করেছেন। সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাটের সংবাদ প্রকাশ করেছেন। এ জন্য আওয়ামী স্বৈরসরকারের রোষানলে পড়তে হয়েছে তাদের।

তিনি অবিলম্বে সাজা বাতিল করে মাহমুদুর রহমানের দেশে ফেরার সুযোগ করে দেওয়ার দাবি জানান।

সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, ‘আমার দেশ ও মাহমুদুর রহমান শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনের নির্মম শিকার। এমন জুলুম কোনো সম্পাদক বা সাংবাদিকের ওপর হয়? তাকে হত্যা করার জন্য বার বার হামলা করা হয়েছে। ১২৪টি মামলা দিয়ে আদালতের বারান্দায় ঘুরিয়েছে। বানোয়াট অভিযোগে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হওয়ার পরও মাহমুদুর রহমান প্রতিকার না পাওয়া দুঃখজনক।

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্যোগ নিয়ে মাহমুদুর রহমানের সাজা বাতিল, তার স্ত্রীর সাজা বাতিল, মামলাগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়া এবং প্রেসের তালা খুলে দেওয়ার দাবি জানান। একইসঙ্গে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে তাদের গদি পাকাপোক্ত করার জন্য প্রথমেই দৈনিক আমার দেশকে টার্গেট করে। কারণ, আমার দেশ সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দুর্নীতি-লুটপাটের সংবাদ প্রকাশ করছিল। ২০১০ সালের জুনে প্রথমে দফায় আমার দেশ বন্ধ ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কমান্ডো স্টাইলে অভিযান চালিয়ে তুল নিয়ে যায়। দ্বিতীয় দফায় ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল গায়ের জোরে দ্বিতীয় দফায় আমার দেশ বন্ধ করে মাহমুদুর রহমানকে ধরে নিয়ে যায়। দিনের পর দিন রিমান্ডে নির্যাতন চালানো হয়। গত ১১ বছর যাবত আমার দেশের কর্মীরা বেকারত্ব নিয়ে দুঃসহ জীবন কাটাচ্ছে। এর মধ্যে বানোয়াট মামলায় মাহমুদর রহমানকে ৭ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার স্ত্রীকেও ৭ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই নিপীড়নের বিচার চাইতে আজ আমরা রাজপথে নেমেছি।যু

মন্তব্য করুন