হাতকড়াসহ হাসপাতাল থেকে পালানো সেই সন্ত্রাসী কাটা রফিক গ্রেপ্তার

দায়িত্বরত ২ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

ডেস্ক : হাতকড়াসহ চমেক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়া মহেশখালীর দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী কাটা রফিককে ২৪ ঘণ্টার মাথায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় তাকে পেকুয়া এলাকার সৎবোনের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাঁচলাইশ থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পেকুয়া থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করে। হাসপাতাল থেকে পালিয়ে সে মহেশখালীর বাড়িতে না গিয়ে পেকুয়া সদরের বাইন্যাখালি ২ নম্বর ওয়ার্ডের আসাদ আলী ফকির বাড়ির সৎবোনের বাসায় আশ্রয় নিয়েছিল। রাতেই তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়েছে বলে পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ সাংবাদিকদের জানান।

পুলিশ জানিয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোস্টগার্ডের একটি দল গত ১৬ মার্চ ডাকাতির জন্য সংঘবদ্ধ হওয়া একটি সন্ত্রাসী গ্রুপকে ধরতে অভিযান চালায়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা কোস্টগার্ডকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। কোস্টগার্ডও পাল্টা গুলি চালায়। কোস্টগার্ডের সাথে বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয় মহেশখালীর শীর্ষ সন্ত্রাসী কালারমারছড়া ইউনিয়নের নোনাছড়ির মফিজুর রহমান ওরফে মজু বলির পুত্র রফিকুল ইসলাম ওরফে কাটা রফিক। কোস্টগার্ড অস্ত্রশস্ত্রসহ তাকে গ্রেপ্তার করে। ওই সময় তার কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, দুই রাউন্ড গুলিসহ কয়েকটি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য পুলিশ হেফাজতে কঙবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। হাসপাতালে সিএমপির দুই পুলিশ সদস্য তাকে পাহারা দিচ্ছিল। কিন্তু গত ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় খুন, ধর্ষণ, ডাকাতিসহ প্রায় এক ডজন মামলার আসামি কৌশলে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পুলিশের মাঝে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।

কালারমারছড়ার কুখ্যাত সন্ত্রাসী জিয়াউর রহমানের সার্বিক সহায়তায় সন্ত্রাসী কাটা রফিক পালাতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়। ওই ঘটনায় দায়িত্বরত ওই দুই পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। দুই পুলিশ সদস্য হলেন কনস্টেবল মামুন ও আব্দুল কাদির।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কালারমার ছড়ার কুখ্যাত জিয়া বাহিনীর প্রধান খুন, ডাকাতি, ধর্ষণসহ ১৫ মামলার আসামি জিয়াউর রহমান জিয়া গত বছরের ১৪ নভেম্বর গ্রেফতার হয়। তার কাছ থেকে ৫ আগস্ট পরবর্তী পুলিশের লুটকৃত একটি বিদেশী পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন ও ২৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছিল। তবে গত ২৮ মার্চ জামিনে মুক্ত হয়ে জিয়া আবারো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে। সন্ত্রাসী কার্যক্রমে নিজের পরিকল্পনায় সে তার সেকেন্ড ইন কমান্ড কাটা রফিককে পালাতে সহায়তা করেছে।

হ্যান্ডকাপসহ আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়। ঘটনার পর পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার এবং নিজস্ব সোর্স মারফত সন্ত্রাসী কাটা রফিকের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হন। তিনি জানতে পারেন যে, উক্ত সন্ত্রাসী হাসপাতাল থেকে পালিয়ে পেকুয়ায় সৎবোনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। ওসি পাঁচলাইশ গতকাল বিকেল চারটা থেকে তাকে নজরবন্দি করে রাখে। পরবর্তীতে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ পেকুয়া পুলিশের সহায়তায় গতকাল সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করে।

নগর পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ দৈনিক আজাদীকে বলেন, হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসী কাটা রফিককে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। ওসি পাঁচলাইশ নিজস্ব সোর্স এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। রাতেই তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়েছে বলেও পুলিশ কমিশনার জানান।আ

মন্তব্য করুন