রংপুর জেলার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই কোন স্থায়ী শহিদ মিনার

সেলিম চৌধুরী, বিভাগীয় প্রধান, রংপুর :
মাতৃভাষা বাংলার জন্য যাঁরা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের স্মরণে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্থায়ী শহীদ মিনার’সহ নানা ভাস্কর্য থাকলেও রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) প্রতিষ্ঠার ১৬ বছরেও নির্মিত হয়নি স্থায়ী শহীদ মিনার।

বিষয়টি নিয়ে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম’সহ বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ সমালোচনা করে থাকলেও প্রসাশনের উদাসীনতা চোখে পড়ার মত।

জানা যায়, ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর ১৬ বছর পার হলেও নির্মিত হয়নি স্থায়ী শহীদ মিনার। প্রথম দিকে কাপড় দিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করে শ্রদ্ধা জানানো হতো। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কাপড় দিয়ে বানানো শহীদ মিনারটি দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলে ২০১২ সালে তড়িঘড়ি করে কংক্রিটের অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় সড়কের কোল ঘেঁষে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নজরদারির অভাবে শহীদ মিনারটি শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের আড্ডার আসরে পরিণত হয়েছে এবং প্রতিনিয়তই ঘটছে দায়িত্বহীন কাণ্ড।

রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বহিরাগতরা জুতা পায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে কিংবা সিঁড়িতে বসে আড্ডা দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুশাইদ বলেন, বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা ও ইতিহাস সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে শহীদ মিনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকা আমাদের জন্য চরম দুর্ভাগ্যের বিষয়।

সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সবুর বলেন, গণমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকার সংবাদ প্রকাশিত হওয়া আমাদের জন্য যেমন লজ্জার, তেমন দ্রুত সময়ে সমাধান করাটাও আমাদের দায়িত্ব। কেন যে দীর্ঘ দিনেও স্থায়ী শহীদ মিনারের বিষয়টা সমাধান হচ্ছেনা। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো: শাহরিয়ার আকিফ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো মাস্টারপ্ল্যান না থাকায় শহীদ মিনার নির্মাণে পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না।

প্রতিষ্ঠার ১৬ বছরেও কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর আগে কোনো উপাচার্য মহোদয় এ বিষয়ে উদ্যোগ নেননি। বর্তমান উপাচার্য এ বিষয়ে কাজ করছেন। মাস্টারপ্ল্যানটি শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

মন্তব্য করুন