মামলার তোয়াক্কা না করা সেই ভাইরাল যুবক আটক র্যাবের হাতে।
1 min read
মামলার তোয়াক্কা না করা সেই ভাইরাল যুবক আটক র্যাবের হাতে। ফেসবুক লাইভে এসে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির সেই ভাইরাল হওয়া রায়হানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সোমবার সকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে র্যাব-২ এর একটি টিম রাজধানীর শেওড়াপাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি এবং রোস্টিং আর ট্রলের মাধ্যমে অপদস্ত করতেন বিভিন্ন মানুষকে।
এখানেই শেষ নয়, কটাক্ষ করেছেন দেশের প্রচলিত আইন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়েও।
কোনো ধরনের মামলা মোকদ্দমার তোয়াক্কা করেন না এমন দাবি করা সেই রায়হান শেষ পর্যন্ত আটক হয়েছে র্যাবের হাতে।
বলা হচ্ছে, ফেসবুকে হঠাৎ করেই ভাইরাল হওয়া ‘রায়হান’ ওরফে রায়হান আলমের কথা।
ফেসবুকে লাইভে এসে ধূমপান, উগ্র আচরণ, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন ও বিভিন্ন জনের নামে অশালীন কথাবার্তা বলে দ্রুতই ভাইরাল হয় ২৫ বছর বয়সের এ যুবক।
ফেসবুকভিত্তিক বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী গ্রুপে এ নিয়ে আলোচনা উঠলে বিষয়টি নজরে আসে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার টিমের।
এ নিয়ে তাকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হলেও থামেননি রায়হান।
উল্টো পুলিশ, র্যাব নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে লাইভে এসে।
হুমকি দেয় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোক্তাদেরও। সামাজিকভাবে তাদের হেয় করার কথাও জানায় রায়হান।
সর্বশেষ রবিবার (১০ মে) লাইভে এসে রায়হান বলে, আরে মামলা কী জিনিস এইডাই আমার ডিকশনারিতে নেই।
পুলিশ-র্যাব আমি ভয় পাই নাকি?
শুধু এসবই নয় অভিযোগ আছে নারীদের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইলিং করার মতো গুরুতর অপরাধের সঙ্গে যুক্ত এ রায়হান।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে অবশেষে সোমবার (১১ মে) ভোরে রায়হানকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব)।
জানা গেছে, রায়হান (২৫) কোনো একটি কলেজে বিবিএস কোর্সে পড়াশোনা করেছে।
তবে বর্তমানে কিছুই করতেন না। পশ্চিম শেওড়াপাড়ার বাসায় পরিবারের সঙ্গেই বসবাস করতেন।
রায়হানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বেশ কিছুদিন ধরেই তার বিভিন্ন কার্যক্রমের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছিল।
অবশেষে টানা কয়েকদিনের চেষ্টায় রায়হানের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে সোমবার ভোরে শেওড়াপাড়ার নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করে র্যাব-২।
লাইভে এসে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি
সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে রায়হান বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে লাইভে এসে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, নারীদের উত্ত্যক্ত করা, নারীদের ট্র্যাপে ফেলে ব্ল্যাকমেলিংসহ নানা ধরনের অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।
মধ্যরাতে লাইভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কটাক্ষসহ নানা ধরনের আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়া ছিল রায়হানের নিয়মিত কার্যক্রম।
রায়হানের ব্যবহৃত মোবাইল ও কম্পিউটার থেকে বিপুল পরিমাণ ছবি, অশ্লীল ভিডিও, নারীদের সঙ্গে আপত্তিকর চ্যাটের স্ক্রিনশট উদ্ধার করা হয়েছে। যা দিয়ে বিভিন্ন সময় নারীদের ব্ল্যাকমেলিং করেছেন এবং ভবিষ্যতে ব্ল্যাকমেলিংয়ের জন্য এসব সরবরাহ করা হয়।
র্যাব-২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, আপত্তিকর কনটেন্টের কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া রায়হানকে আটকে মাঠে নামে র্যাব। টানা কয়েকদিনের চেষ্টায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে শেওড়াপাড়ার নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়।
মামলা মোকদ্দমার তোয়াক্কা না করা সেই রায়হানের বিরুদ্ধেই এখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। র্যাবের এ কর্মকর্তা প্রত্যেক অভিভাবককে তাদের সন্তানদের দিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, কোনো সন্তান ল্যাপটপ বা মোবাইলের মাধ্যমে কোনো সাইবার অপরাধে জড়িত হচ্ছে কিনা বিষয়টির দিকে যেন বাবা-মায়েরা নজর দেন।