ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিনিধি : উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভারতের ডম্বুর ও গজলডোবা বাঁধ খুলে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টির প্রতিবাদে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলেন, ভারতের সঙ্গে কোনো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হতে পারে না। তাদের সঙ্গে প্রতিবেশীর ন্যায় ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘পানি বণ্টনে ভারতের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অববাহিকার ভিত্তিক নদী-চুক্তি, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিকল্প বাঁধ নির্মাণ ও নদীসমূহের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার প্রকল্প গ্রহণে’র দাবিতে আয়োজিত ছাত্র-জনতার সমাবেশে শিক্ষার্থীরা এমন মন্তব্য করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান; ভারতের আগ্রাসন, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও; ভারতের সব চুক্তি, বাতিল করো করতে হবে; ভারতের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বক্তারা বলেন, ভারত আমাদের সঙ্গে যা করেছে তা কোনো যুদ্ধের চেয়েও কম নয়। যখন আমরা ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই রাষ্ট্র সংস্কার শুরু করলাম ঠিক তখনই তারা আমাদের দেশে পানি ছেড়ে দিয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করল। এখন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ও বন্ধুত্ব কতটুকু ঠিক থাকবে তা এদেশের ছাত্র-জনতা সিদ্ধান্ত নেবে। এই রাষ্ট্র মেরামতের সময় ভারত এই কাজ করে তারা আমাদের ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা করছে। তারা বলেন, ভারতের উদ্দেশে আমরা বলতে চাই, রাষ্ট্র মেরামতে যদি আপনারা সঙ্গে না থাকেন, আপনাদের সঙ্গে আমাদের কোনো বন্ধুত্ব থাকবে না। আপনাদের সঙ্গে সব চুক্তিকে ভঙ্গ করে দেওয়া হবে। ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করতে দেওয়া হবে না। ছাত্র-জনতা সম্মিলিতভাবে পরাজিত শক্তির সব কূটচাল রুখে দেবে।

সমাবেশের আহ্বায়ক জামালুদ্দীন মুহাম্মাদ খালিদ বলেন, আমরা জুলাই বিপ্লবের আগেও স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছি। সুতরাং দেশে স্বাধীনতা আসার পরে আমরা ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আরও বড় বিক্ষোভ করতে পারবো। মালদ্বীপের মতো রাষ্ট্র যদি ভারতে খেদাতে (তাড়াতে) পারে আমরাও তাদের খেদাতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে কোনো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে পারে না। একটাই সম্পর্ক হবে- প্রতিবেশীর ন্যায় ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে এই দাবি করবো এবং সামনের দিনে যারা ভারতকে বন্ধু রাষ্ট্র বলবে তাদেরকেও আমরা বয়কট করবো।

ঢাবি শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন বিন মোজাফফর বলেন, আজ আমাদের ওপর ভারত ইসরাইলের মতো আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ভারতের সঙ্গে নতজানু হওয়া কোনো চুক্তি আমরা মেনে নেবো না। তাদের সঙ্গে ইতোপূর্বে হওয়া সব অসামঞ্জস্যপূর্ণ চুক্তি বাতিল করতে হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: আকস্মিক বাঁধ খুলে দিয়ে বন্যা সৃষ্টির প্রতিবাদে এবং ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে গতকাল প্রতিটি হল থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।

এ সময় ‘ভারতের আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ ‘ভারতের দালালরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ ‘আমার দেশ ডুবল কেনো, সরকারের কাছে জবাব চাই’ ‘পেতে চাইলে মুক্তি, ছাড়তে হবে ভারত ভক্তি’ ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ এবং বিভিন্ন মোদিবিরোধী স্লোগান দিতে দেখা গেছে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মেশকাত চৌধুরী মিশু বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে আন্তর্জাতিক নদীগুলো আছে তার পানির ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে। এছাড়াও ইতোপূর্বে ফ্যাসিবাদী সরকারের সঙ্গে ভারতের যে অন্যায্য ও গোপন চুক্তিগুলো হয়েছিল তা দ্রুত বাতিল করতে হবে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া কোনো বাঁধ খুলে দেওয়া যাবে না।

আরবি বিভাগের শিক্ষক ড. ইফতিখারুল আলম মাসুদ বলেন, ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী কোনো রাষ্ট্রের ভালো সম্পর্ক নেই। উগ্র, ফ্যাসিস্ট, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী সেখানে শাসন করছে। তারা যেভাবে আমাদের শোষণ করেছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নদীর পানি। আজ তরুণ প্রজন্ম দেশপ্রেমের চেতনায় জেগে উঠেছে। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার অনেক দূরদর্শী ছিলেন। তিনি ভারত নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করায় তাকে মেরে ফেলা হয়। রাজনৈতিকভাবে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে না পেরে এখন পানি নিয়ে খেলা শুরু করেছে।

প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নকিব বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার সরকার একটা অত্যন্ত নতজানু পররাষ্ট্রনীতি এবং এই রাষ্ট্রকে ভারতের অলিখিত কলোনিতে পরিণত করেছিল। তারা এই কাজটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার সঙ্গে কোনো আধিপত্যবাদ চলে না, কোনো জাতি কখনো আধিপত্যকে মেনে নেওয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেনি। ভারত সরকার কি শেখ হাসিনার বন্ধু হয়ে থাকতে চায় নাকি বাংলাদেশের জনগণের বন্ধু হয়ে থাকতে চায়? তারা যদি শেখ হাসিনাকে বন্ধু হিসেবে বেঁচে নেয় তাহলে বাংলাদেশর জনতার শত্রুতাকে তাদের বেছে নিতে হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ মহানগরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী এই বিক্ষোভে অংশ নেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও আন্দোলনে অংশ নিতে দেখা যায়।
ডুয়েট: গাজীপুর মহানগরীতে ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলটি ডুয়েট গেইট থেকে শুরু হয়ে জয়দেবপুর প্রদক্ষিণ করে গাজীপুরের শিববাড়ি মোড়ে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে ডুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ বলেন, ছাত্র-জনতার এ সরকার অবিলম্বে দেশের মানুষের ন্যায্য পানির অধিকার আদায় করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

এ সময় ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে বেশি ষড়যন্ত্র করলে সেভেন সিস্টার্স অস্থিতিশীল হয়ে যাবে। আমরা চিকেন নেক সম্পর্কে অবহিত। মুরগি গলা চেপে ধরলে নি:শ্বাস বন্ধ হয়ে ছটফট করবে। তাই অনতিবিলম্বে পানির ন্যায্য অধিকার বুঝিয়ে দিতে হবে। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাহজাহান চৌধুরী প্রমুখ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় :
জাবি সংবাদদাতা জানান, ভারতের ত্রিপুরার ধলাই জেলায় গোমতী নদীর ওপরে থাকা ডুম্বুর বাঁধের গেট খুলে দেওয়ায় সৃষ্ট বন্যার প্রতিক্রিয়ায় এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভারতের অর্থায়নে সব ধরনের প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় অংশীদারীত্বে নির্মাণাধীন চারুকলা বিভাগের ভবন নির্মাণের কাজ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে ক্যাম্পাসে চলমান ভারতীয় প্রকল্প বন্ধের দাবি জানান।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চারুকলা অনুষদের ভবন নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ অর্থায়নে ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে, ৪৭ কোটি ৮৯ লাখ ১৭ হাজার টাকা বাংলাদেশ এবং বাকি ৫০ কোটি টাকা দেবে ভারত সরকার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসিব জামান ফেসবুকে লেখেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেকহোল্ডাররা ভারতীয় আধিপত্য কখনোই মেনে নিবে না। এখানের অংশীজনদের মনে রাখা উচিত হাসিনা রেজিম শেষ। এখন চাইলেই কেউ ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলবে না বিষয়টা এমন না। জেন-জি চাইলে ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধও করতে পারে।

তিনি আরো লেখেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইন্সটিটিউট তৈরি হচ্ছে ভারতীয় অর্থায়নে। ভারতীয় অর্থায়নে ইন্সটিটিউট তৈরি হওয়া মানে তাদের আধিপত্য জাহাঙ্গীরনগরে ঢুকে যাওয়া, এটা স্বাভাবিক। আর এই চারুকলা ইন্সটিটিউট অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের কোনো অংশ না, সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। সুতরাং এই আধিপত্য ঠেকানোও আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। চারুকলা ইন্সটিটিউট যদি হতেই হয় সেটা হবে দেশের টাকায়। অন্য দেশের অর্থায়নে যদি চারুকলা বিভাগ ইনস্টিটিউটে পরিণত হয় তাহলে কয়েকদিন পর প্রত্যেকটা বিভাগ ইন্সটিটিউট হইতে চাইবে। স্টিল নাও চারুকলা একটা বিভাগ মাত্র। ব্যাপারটা হইতাসে, আমাদের মাস্টারপ্ল্যান হওয়া দরকার, একাডেমিক ও অবকাঠামোগত উভয়টাই। মাস্টারপ্ল্যান করতে এক থেকে দুই বছর সময় লাগে সুতরাং বাকী অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগে মাস্টারপ্ল্যান হতেই হবে, এটা অমূলক। আরেকটা ব্যাপার হইতাসে, ভারতীয় অর্থায়নে জাহাঙ্গীরনগরে কোনো ভবন হইতে দেওয়া হবে না। জাহাঙ্গীরনগরবাসী এটা কখনোই মেনে নিবে না।

ক্যাম্পাসে চলমান ভারতীয় প্রকল্প বন্ধের দাবি জানিয়ে নজরুল ইসলাম নাইম নামে আরেক শিক্ষার্থী লেখেন, ‘জাবি ক্যাম্পাসে কোনো ভারতীয় বিষফোঁড়া প্রকল্প হতে দেওয়া হবে না।’
জাহাঙ্গীর আলম নামে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এক শিক্ষার্থী লেখেন, ‘চারুকলা ভবন নির্মাণে ভারতীয় ফান্ডিং রুখে দিতে হবে।

সাদিকুর রহমান নামে দর্শন বিভাগের এক শিক্ষর্থী বলেন, ছোট বেলা থেকেই আমাদের প্রজন্মকে গিলানো হয়েছে যে ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। অথচ এই তথাকথিত বন্ধু রাষ্ট্রই সবচেয়ে বেশি মানুষকে সীমান্তে হত্যা করছে। এমনকি আমাদের নাগরিকদের হত্যা করে কাটাতারে ঝুলিয়ে পর্যন্ত রাখে। ইজরাইল গাজার নিরীহ মানুষের উপর যেমন বোমা ফেলে ঠিক তেমনি এই বন্ধু রাষ্ট্রটি আমাদের উপর বন্যার পানি নিক্ষেপ করে। আর সেই দেশের সরকারের অনুদান দিয়ে আমাদের কোন প্রজেক্ট নির্মিত হোক তা আমরা সচেতন শিক্ষার্থী মহল চাই না।
এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদ প্রকল্প পরিচালক ও চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এমএম ময়েজ উদ্দিনকে একধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

এর আগে, বাংলাদেশে আকস্মিক বন্যার কবলে পড়ার ঘটনায় ভারতকে দায়ী করে ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মশাল মিছিল করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। পরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা ভারতের সাথে পানি চুক্তির ন্যায্য হিস্যার দাবি জানান। পাশাপাশি ডুম্বুর গেট খুলে দিয়ে বাংলাদেশকে প্লাবিত করার প্রতিবাদ জানান। এছাড়া সীমান্ত হত্যা, ভারতে সংখ্যালঘু হত্যা এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়েও ভারত সরকারের সমালোচনা করেন বক্তারা।ই

মন্তব্য করুন