
চট্টগ্রামের ৯ আসনের প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময়ে জেলা প্রশাসক : কখন কোথায় জনসভা জানালে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেব : একে অন্যের প্রতি নানা অভিযোগ প্রার্থীদের
খবর ডেস্ক :
চট্টগ্রামের ৯ সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। সভায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাও তাদের অভিযোগ এবং মতামত তুলে ধরেছেন।
গতকাল সকালে নগরীর সার্কিট হাউজে চট্টগ্রাম–৩ সন্দ্বীপ আসন ছাড়া জেলার অবশিষ্ট ৯টি আসনের প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। সভায় চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহও উপস্থিত ছিলেন।
সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম জেলার ৯টি সংসদীয় আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভার পর সাংবাদিকদের জেলা প্রশাসক বলেন, চট্টগ্রামের প্রার্থীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আচরণ বিধি মেনে চলছেন না। ৯টি আসনের প্রার্থীদের নিয়ে আমরা মতবিনিময় সভা করেছি। সেখানে আমরা তাদের নির্বাচনি বিধিমালা–২০০৮ সেটা পালন করতে নির্দেশ দিয়েছি। আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি আচরণ বিধিমালা পালন বিষয়ে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি কাজ করছে। সেখানে বিভিন্ন পর্যায়ের বিচারকেরা কাজ করছেন। তারাও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আমরাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী কী ব্যবস্থা নিয়েছি সেসব প্রার্থীদের জানিয়েছি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিযোগ, মতামত ও পরামর্শ আমরা শুনেছি। প্রার্থীদের নানা প্রশ্ন ছিল তারা সেটা উপস্থাপন করেছেন।
তিনি আরও বলেন, দুই একটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। সেসব বিষয়ে প্রার্থীরা আমাদের অভিযোগ করেছেন। প্রত্যেকটি অভিযোগের সুনির্দিষ্টভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে আমরা তাদের জানিয়েছি। থানা মামলা নিয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।
সাতকানিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে বারবার গোলাগুলি নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, প্রার্থীদের আমরা অনুরোধ করেছি, কখন কোথায় তারা জনসভা করবেন, জানাতে। সে ক্ষেত্রে আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেব। সেই সঙ্গে সামনে সেনাবাহিনীকে মোতায়েন করা হবে। সন্দ্বীপে নৌবাহিনী মোতায়েন হচ্ছে। আমরা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধের জন্য সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করব। আপনারা যে আশঙ্কার কথা বলছেন, সে আশঙ্কা সামনে রেখে অভিযান পরিচালনা করা হবে। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মতবিনিময় সভায় প্রার্থীরা একে অন্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। এরপর সকল প্রার্থীর উদেশ্যে পরস্পরকে হেয় করে কিছু করা থেকে বিরত থাকতে জেলা প্রশাসক অনুরোধ করে বলেন, আপনারা পারস্পরিক সহাবস্থান বজায় রাখুন।
জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, প্রার্থীরা যে সভাসমাবেশ করছেন, আচরণবিধিমালা অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টা আগে এসবের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা পুলিশ সুপার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কিংবা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানালে তারা পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিতে পারতেন। প্রার্থীরা যেহেতু অনেক ক্ষেত্রে আমাদের জানাননি, সে জন্য অনেক ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে।
সভায় জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বলেন, আমরা গত নির্বাচন নিয়ে বেশকিছু জায়গায় এনাইলাইসিস করেছি, কোথায় কোথায় ঝামেলা ছিল। সেগুলো আমরা খুঁজে নিয়েছি। ওগুলাকে কেন্দ্র করে আমরা আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন করব। সে সমস্ত জায়গায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে অভিযান পরিচালনা করেছি। ১৫টির মতো অস্ত্র আমরা উদ্ধার করেছি। অবৈধ অস্ত্র যারা ব্যবহার করে তাদের প্রত্যেকের বাড়িতে বাড়িতে আমরা তল্লাশি চালিয়েছি। এখানে কোনো সহিংসতা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সহিংস এলাকাগুলো আমরা চিহ্নিত করেছি ।