
অনলাইন ডেস্ক : বিভিন্ন মহল থেকে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের যে দাবি উঠেছে তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার রাজধানীতে একটি কর্মসূচি থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই প্রতিক্রিয়া জানান তিনি। বিভিন্ন মহলে জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের দাবির বিষয় জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় বিএনপি। যেটা কোনো ইস্যুই নয় সে ইস্যু সামনে এনে নতুন করে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে পোস্ট করেছেন সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, সময় হলে জানাবো। প্রেসিডেন্টের পদ থেকে মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা যে দাবি জানিয়েছে সে বিষয়ে বিএনপির সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, সময় হলে জানাবো, জানতে পারবেন।
এর আগে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে কূটনীতিক সাবিহউদ্দিন আহমেদের স্মরণ সভায় তার বর্ণাঢ্য জীবন-কর্ম তুলে ধরে তাকে স্মরণ করা হয় এবং জানানো তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সাবিহসহ আমরা যারা ছাত্ররাজনীতি শুরু করেছিলাম আমাদের একটা লক্ষ্য ছিলো এই সমাজটাকে পরিবর্তন করব, আমরা বদলে দেবো। সেটা সেই সময় সম্ভব হয়নি, সাবিহ চলে গেছেন সরকারি চাকরিতে, সরকারি চাকরিতে গেলেও কখনো সেই লক্ষ্য থেকে সরে যায়নি।
তিনি বলেন, সাবিহ যেখানেই ছিলো সেখানেই দেশের জন্য কাজ করেছে, জনগণের জন্য কাজ করেছে। সবচেয়ে বেশি আমার মনে পড়ে যে, যখন তিনি আমাদের ম্যাডাম বেগম খালেদা জিয়ার সাথে কাজ করেছেন তখন দেখেছি যে, তিনি সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করেছেন।
শেখ হাসিনার শাসনমালে সাবিহ উদ্দিন ওই সময়ে সরকারের রোষানলে নির্যাতিত হওয়ার তুলে ধরেন বলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ওই সময়ে তার ওপরে প্রচণ্ড আক্রমণও হয়েছিলো, রিয়াজ রহমান সাহেবের গুলি লেগেছিলো, সাবিহ উদ্দিন আহমেদের গাড়িটা পুড়িয়ে দিয়েছিলো। এই সময়গুলো আমরা পার করেছি। বহুবারই বিভিন্ন গ্রেফতার হওয়ার মুহুর্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে, সে ভিকটিম হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু হয়নি। অফুরন্ত প্রাণশক্তি ছিলো তার। মনে হয়েছে টগবক করছে সবসময় জীবনী শক্তি নিয়ে। কোনো কিছুতে ভেঙে পড়ার লোক ছিলোৃ লড়াই করেছে শেষ পর্যন্ত।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাবিহ উদ্দিন ছিলেন রিয়াল ন্যাশনালিস্ট। দেশ ও জনগণের প্রশ্নের কোনো কম্প্রমাইজ নেই। আন কম্প্রমাইজিং ছিলেন। এমন মানুষ পাওয়া দুস্কর। আমরা হারিয়েছি, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, সিরাজুল ইসলাম সবুজ। সাবিহ অনন্য। আমরা তার পরিবারের জন্য দোয়া করি।
প্রফেসর মাহবুবউল্লাহ বলেন, সাবিহ শেষ দিন পর্যন্ত দেশের কথাটি ভেবেছেন, দশের কথাটি ভেবেছেন। তার মধ্যে স্বার্থপরতা ছিলো। দেশপ্রেমের প্রশ্নের কোনো আপোষ তিনি করেননি। বাংলাদেশে খুব মানুষই পাবে যে, আপন স্বার্থ ভুলে দেশ ও জনগনের স্বার্থ নিয়ে কাজ করা। তিনি সব সময়ে এটা লালন করেছেন।
২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাবিহউদ্দিন আহমেদ। মৃত্যকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৬ বছর। ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার শাসনামলে সাবিহউদ্দিন আহমেদ যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনার ছিলেন।
সাবিহ উদ্দিন বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের ওপরে স্মৃতিচারণ করেন প্রবীণ সম্পাদক শফিক রেহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন, জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মাহফুজ আনাম, এবিএম শাহেদ আখতার, সাবিহ উদ্দিন আহমেদর ছোট ভাই সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ অবসরপ্রাপ্ত কুটনীতিক, ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন পেশার নাগরিকগণ। এছাড়া সাবিহ উদ্দিনের সহধর্মিনী রওনক আহমেদ, ছেলে সাইয়াব আহমেদ, বিএনপি মহাসচিবের সহধর্মিনী রাহাত আরা বেগমসহ নিকট স্বজনরাও ছিলেন স্মরণ সভায়।ই