প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেন অমর একুশে গ্রন্থমেলা
1 min read
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতি-সাহিত্যের মান আরও উন্নত করে সারা বিশ্বে তা ছড়িয়ে দিতে চায়।
তিনি বলেন, অমর একুশে বইমেলার মধ্য দিয়ে আমাদের শিল্প-সংস্কৃতিকে কেবল বাংলাদেশের মধ্যেই নয় বিশ্ব দরবারে পৌঁছাতে চাই।
গতকাল বাংলা একাডেমিতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২০ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের শিল্প, কলা, সাহিত্য, সংস্কৃতিকে আমরা আরো উন্নতমানের করে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিতে চাই।
আমাদের সাহিত্য আরো অনুবাদ হোক।
বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষ আমাদের সাহিত্যকে জানুক, সেটাই আমরা চাই।
বাংলা একাডেমি এ ব্যাপারে যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছে। আরো পড়ুনঃ আমাদের খবর।
একুশে বইমেলার আবেদনের কথা বোঝাতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একুশের এই বইমেলা.. গ্রন্থমেলা বলেন আর বইমেলা বলেন, বইমেলা বলতেই একটু আপন আপন মনে হয় বেশি।
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ায় ছাত্রজীবনের মত বইমেলায় স্বাধীনভাবে বেশি সময় কাটাতে পারেন না।
আক্ষেপ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই বইমেলা বা গ্রন্থমেলা এটা আমাদের প্রাণের মেলা।
যদিও সত্যি কথা বলতে কি.. প্রধানমন্ত্রী হয়ে সবসময় এটাই দুঃখ লাগে যে এখন আর সেই স্বাধীনতা নেই।
আগে যেমন ছাত্রজীবনে এখানে দিনের পর দিন.. ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতাম এবং ঘুরে বেড়াতাম বই মেলায়।
পুরো সময়টা পারলে থাকতাম। সেটা আর এখন হয়ে ওঠে না।
এই একটা দুঃখ এখনো থেকে যাচ্ছে।
সেই স্বাধীনতা আর পাচ্ছি না। তারপরও আমি বলব এই বইমেলা আসলেই ভালো লাগে।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা একাডেমি প্রকাশিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত ‘আমার দেখা নয়া চীন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চীন সফরের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথাও তুলে ধরেন।
জাতির পিতার সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কারাগারে যে খাতা কিনে দিতেন।
তাতেই বঙ্গবন্ধু তার লেখা শুরু করেছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কারাগারে যখন তিনি ছিলেন আমার মা সব সময় লেখার খাতা কিনে দিয়ে কিছু লেখার জন্য অনুরোধ করতেন।
সেই থেকে তার লেখা শুরু। বইয়ের বিশেষ একটি দিক নজরে আসার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, একজন রাজনৈতিক নেতা যিনি এত অত্যাচারিত হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন পাকিস্তানি শাসক দ্বারা।
কেবল তিনি এই নির্যাতন ভোগ করেই তিনি বিদেশে গেলেন।
সেখানে গিয়ে তিনি পাকিস্তানি শাসকরা যে তাকে এত অত্যাচার করেছে বা এখানে এত কিছু করেছে সে বিষয়ে কিন্তু কোনো কথা কারও কাছে বলেন নাই। বরং তিনি বলছেন আমাদের দেশের ভেতরে যা হচ্ছে সেটা- আমরা তো বিদেশে এসে দেশের বদনাম করতে পারিনা।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এখানে দেখি আমাদের দেশে অনেকেই বিদেশিদের কাছে আমাদের দেশের বদনাম করতে গেলেই যেন আরো বেশি উৎসাহিত হয়ে যা না ঘটে তা আরেকটু বেশি করে বলে। এই প্রবণতাটা আমরা দেখি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ প্রকাশিত হলেও চীন সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখাটি সব থেকে পুরনো বলেও উল্লেখ করেন তার শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রধানমন্ত্রী মেলা ঘুরে দেখেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৯ বিতরণ করেন। এবার এই পুরস্কার পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় একাত্তরের সেক্টর কমান্ডার ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, প্রবন্ধ / গবেষণায় স্বরোচিষ সরকার, অনুবাদে খায়রুল আলম সবুজ, নাটকে রতন সিদ্দিকী, শিশু সাহিত্যে রহীম শাহ, বিজ্ঞান / কল্পবিজ্ঞানে নাদিরা মজুমদার, ফোকলোরে সাইমন জাকারিয়া এবং আত্মজীবনী / স্মৃতিকথা / ভ্রমণকাহিনীতে। আরো পড়ুনঃ আমাদের খবর।