
এম.কে.জাকির হোসাইন বিপ্লবী
প্রিয় দেশবাসী,
আপনারা জানেন বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অত্যন্ত ভয়াবহতায় রূপ নিচ্ছে। সম্প্রীতি সময়ে বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত একের পর এক, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের কে উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে। আমরা সবাই জানি বিশ্বের বুকে, সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন যে রাষ্ট্রে আছে, সে রাষ্ট্রের ধর্মীয় সম্প্রীতির বন্ধন ভালো নেই। কারণ ইসকন একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাবাজ সংগঠন। বিশ্বের প্রায় দশটি রাষ্ট্রে ইসকন নিষিদ্ধ। কত ১৬ বছর মন্ত্রণালয় থেকে প্রশাসন বিভাগ পর্যন্ত, ইসকন এবং রো পরিচালনা করেছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি ধর্মের সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য। স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর, এদেশের মুসলিমরা যার যার অবস্থান থেকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা প্রহরী রূপে, সংখ্যালঘুদের কে আঘলে রেখেছি। এদেশের মানুষ সংখ্যালঘুদের কে কখনো সংখ্যালঘু মনে করে না, সব সময় ভাবে যারা সংখ্যালঘু আছে, তারা আমাদের ভাই এদেশের মা মাটির সন্তান। এ দেশের শান্তি রক্ষায়, উন্নয়নশীলতায় সংখ্যালঘু এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ কারো ভূমিকা কম নয়। সবাই সবার জায়গা থেকে সর্বাত্মক রাষ্ট্রকে সহযোগিতা করে। বর্তমান বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে, সংখ্যালঘুরা ভারতের উস্কানিতে পা দিয়ে, দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। তারা ভারতের আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সত্যিকারের দেশ প্রেমিক সংখ্যালঘু যারা, তারা দেশের স্বার্থে ভারতকে নিন্দা জানিয়ে যাচ্ছে।
বর্তমান সংখ্যালঘুরা ইস্কনকে নিজেদের ধর্ম হিসেবে দাবি করছে, আর এদেশের সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী যারা, তারা যেকোনো ধর্মের হোক না কেনো,ইসকন কে কখনো ধর্মীয় স্বীকৃতি দিতে পারে না। ইসকন নেতা চিম্ময়কে গ্রেফতারের পরে, এদেশের অনেক মুসলিম সম্প্রদায়ের আলেম-ওলামাদের উপর, অতর্কিত হামলা করেছে ইসকন সদস্যরা। যা অত্যন্ত ঘৃণিত এবং নিন্দনীয়। কিন্তু এদেশের মানুষ শান্তি চায়, এ দেশের রাজনৈতিক দলগুলো সম্প্রীতির বন্ধন টিকিয়ে রেখে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। তাই হতে হিংসার বশবর্তী হয়ে, কেউ যেনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় না ঝরায়, এটা ছিল রাজনীতিবিদদের অনুরোধ। কিন্তু এদেশের শান্তিপ্রিয় রাজনীতিবিদদের, সম্প্রীতিমূলক বক্তব্যকে দুর্বলতা ভেবে, একের পর এক ষড়যন্ত্র করছে ভারত। বিভিন্নভাবে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে, বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত, করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে ভারতের মুসলিমদের উপর অত্যাচার অব্যাহত। মুসলিম সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলো শিব মন্দিরের নামে দখল করার চেষ্টা করে যাচ্ছে ভারত।
আজকে বাংলাদেশের হাই কমিশনের সহকারী কার্যালয়ে, আক্রমণ করেছে ভারতীয় উগ্রবাদী হিন্দুরা। ভারতের সরকার বার-বার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সাথে কোনরকম সম্পর্ক রাখার যোগ্যতা ভারত রাখে না। বর্তমান বন্ধু বেশি স্বার্থপর রাষ্ট্র ভারত, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইস্যুতে, ভারতের প্রতিটা বক্তব্যে ছড়িয়ে আছে, প্রতিহিংসা এবং উস্কানি। যেই বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে, বাংলাদেশের এক শ্রেনীর সংখ্যালঘুরা লাগামহীন হয়ে, বাংলাদেশের শান্তি নষ্ট করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
কিন্তু কেন? ভারত কি চায়?
এরকম হাজারো প্রশ্ন জমা রয়েছে এদেশের অসহায় শান্তি প্রিয় বাঙালি তার হৃদয়ে।তাই ভারতের উদ্দেশ্যে আমার আরো কিছু কথা না লিখলেই নয়!
ব্রিটিশ থেকে এ পর্যন্ত ভারতের লক্ষ্য উদ্দেশ্য :-
আপনারা জানেন একাত্তরের যুদ্ধে ভারত বাংলাদেশকে গোলামী চুক্তিতে, সহযোগিতা করেছিলো।ভারতের উদ্দেশ্য ছিলো,বাংলাদেশের পতাকা থাকবে, শুধু পরিচয়। কিন্তু বাংলাদেশের মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে প্রশাসন বিভাগ পর্যন্ত ভারতের গোলামী করবে। এদেশের মানুষ ভারতের প্রভূত্ব মেনে নেবে। যুদ্ধের পরে ভারত তাদের পরিকল্পনায় সফলতা অর্জন করেছে। এদেশের প্রতিবাদী যুবকদের উপর, বিভিন্ন পরিকল্পনায় অন্যায় অত্যাচার, করে তাদেরকে বাকরুদ্ধ রাখার চেষ্টা করেছে। স্বাধীনতার পরে বাংলার মাটিতে যত গুম,খুন হয়েছে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে, সবকিছুর মূলে রয়েছে ভারত। আর ভারতকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে, ভারতের পরিচালিত রো এবং সন্ত্রাসী জঙ্গিগোষ্ঠী ইসকন। হাসিনা এবং মুজিব তাদের গোলামী মেনে নিলেও, বিরোধী দলের অনেক নেতাকর্মী, দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধারা ভারতের গোলামী মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। যার কারণে তাদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে, দিনের পর দিন করেছে কারা নির্যাতন। ৩৬০ আউলিয়ার বাংলাদেশে আলেম-ওলামার অবদানও কম নয়। এপর্যন্ত যতজন আলেম ভারতের আধিপত্য মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, প্রতিটা আলেম কে জঙ্গি অপবাদে অভিযুক্ত করে কারা নির্যাতন করেছে, এবং কাউকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অন্যায় ভাবে হত্যা করেছে।নামে করেছে অবিচার। বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে প্রশাসন বিভাগ, সবাই ভারতের হাতের পুতুল রূপে রূপান্তরিত হয়েছিলো। এর বাস্তব প্রমাণ আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী দীর্ঘ ১৩বছর কারারুদ্ধ থাকার পর, চিকিৎসার নামে শহীদ হয়েছেন। বাংলাদেশের সাবেক বিচারপতি মুজিবুর রহমান স্পষ্টভাবে ভারতীয় দালালিতে যুক্ত ছিলো। আপনাদের প্রশ্ন থাকতে পারে, আমি নিশ্চিতভাবে কিভাবে মজিবুর রহমান কে দোষী করছি। সেইজন্য বলছি, গত ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ঢাকা শিশু কল্যাণ পরিষদে একটি সাহিত্য প্রোগ্রাম ছিলো। সেখানে মুজিবুর রহমান প্রতিটি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। মজিবুর রহমান সাহিত্য প্রোগ্রামে, বক্তব্য দিতে গিয়ে অনেক সমালোচিত হয়েছেন। তার কারণ হচ্ছে উনি ওনার বক্তব্যে, স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন ভারতীয় লেখকরা হচ্ছে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা। ভারতীয় লেখ মুক্তিযোদ্ধাদের কারণেই বাংলাদেশ টিকে আছে। উনি আরো বলেছেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ফাসির রায় উনি দিয়েছেন। উনি ওনার বক্তব্যে দেশের গাদ্দার বলে চিহ্নিত করেছেন উক্ত ব্যক্তিবর্গ কে। আমি সেখানে আমার চশমা ভেঙ্গে দিয়ে প্রতিবাদ করেছিলাম। সেই দিন একটি প্রতিবেদনে, উনার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। এবং এদেশের অনেক দেশ প্রেমিক মানুষ, উনার বক্তব্যের প্রতিবাদস্বরূপ উক্ত অনুষ্ঠানের সম্মাননা বয়কট করেন। এখান থেকে স্পষ্ট প্রমাণ বিচার বিভাগ থেকে প্রশাসন বিভাগ পর্যন্ত, সবাই ভারতের প্রবর্তক মেনে নিয়েছিল। কিন্তু যারা দীর্ঘদিন যাবত কারা নির্যাতিত এবং ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী হয় জীবন-যাপন করেছে, তারা ভারতের গোলামী মেনে নেয়নি।
ভারতের চাওয়া পাওয়া আওয়ামী সরকার থাকা কালীন অবস্থায়। আপনারা জানেন বাঙালি জাতি কারো গোলামী করতে প্রস্তুত নই। যার কারণে একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরেও, দ্বিতীয় যুদ্ধের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন করে, দ্বিতীয়বারের মতো দেশকে কলঙ্কমুক্ত করার চেষ্টা করেছে। স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট হাসিনা পতনের পরপরেই ভারতের সকল স্বপ্ন ভেঙ্গে গিয়েছে। যার কারণে ভারতের এক নেতা, বক্তব্যে বাংলাদেশকে ভেঙ্গে নতুন রাষ্ট্রে পরিণত করার হুমকি ও দিয়েছে। তারা বলেছে মুজিব হাসিনা তাদের বন্ধু। তাই এদেশের বিরুদ্ধে কোন ভূমিকা নেয়নি, এবার নেবে। ভারত বিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবরার ফাহাদ কে কেমন নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল, তা আপনাদের অজানা নয়। সবশেষে ভারতের বিরুদ্ধে, ভারতের ষড়যন্ত্রমূলক লেখা শুরু করা যতটা সহজ, শেষ করা ততটাই কঠিন।
তাই আমি আমার দেশ এবং জাতির উদ্দেশ্যে শেষ বার্তা দিয়ে বলতে চাই,
শত্রুপক্ষকে দুর্বল এবং বন্ধু ভাবাটাই হচ্ছে আমাদের বোকামি। আমাদের সবার এখন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সজাগ দৃষ্টি রাখা উচিত। দল মত ধর্ম বর্ণ ভুলে গিয়ে, দেশ প্রেমিক নাগরিক ঐক্য গঠন করে দেশের সাথে কাজ করা উচিত। ভারতীয় সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায়,আমাদের সর্বদায় প্রস্তুত থাকা উচিত। দেশের শান্তি রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা করা, এবং যারা দেশের শান্তি বিনষ্ট করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে আইনিভাবে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। এদেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে, দেশকে মায়ের মত মনে করে দেশের স্বার্থে ঐক্য করা উচিত। ঐক্যবদ্ধ জানতেই পারে, যে কোনো স্বৈরাচারী শক্তির মোকাবেলা করে একটি নতুন শান্তিপূর্ণ দেশ জাতিকে উপহার দিতে। ইতিমধ্যে আমাদের সবার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে, আইন কিছু পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহযোগী সদস্য হয়ে, দেশের সকল ষড়যন্ত্র কে রুখে দেওয়া একজন সচেতন নাগরিকের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। অতএব আসুন,আমরা সবাই ভিনদেশী তাবেদারদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে, একটি শান্তিপূর্ণ দেশ গঠনের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করি। শান্তিপূর্ণ দেশ গঠনে যারা বাধা হয়ে দাঁড়াবে, তাদের বিরুদ্ধে সচেতন ভাবে প্রতিবাদের দুর্গ গড়ে তোলে, স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষার চেষ্টা করি। একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি পারে, একটি তাবেদার মুক্ত দেশ গঠন করতে।