ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবেনা: তারেক রহমান

অনলাইন ডেস্ক : প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে, লাখো কোটি জনতার গণ অভ্যুত্থানের ফসল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, এই সরকারের কোনো কোনো কার্যক্রম সকলের কাছে হয়তো সাফল্য হিসেবে বিবেচিত নাও হতে পারে। কিন্ত এই সরকারের ব্যর্থতা হবে আমাদের সকলের ব্যর্থতা। বাংলাদেশের পক্ষের গণতন্ত্রকামী জনগণের ব্যর্থতা। এটি আমাদের প্রত্যেকের মনে রাখতে হবে। সুতরাং এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেয়া যাবেনা।

তারেক রহমান বলেন, দেশ-বিদেশ থেকে নানা রকমের উস্কানিতেও জনগণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ হতে দেবেনা। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যাতে নিজেরাই নিজেদের ব্যর্থতার কারণ না হয়ে দাঁড়ায় সে ব্যপারে তাদেরকেও সতর্ক থাকতে হবে।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে’ আয়োজিত সমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশ কিংবা যেকোনো দেশেই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত সরকার অবশ্যই জনগণের সরকার। তাই জনগণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে, রাখবে। তবে কোনো এক পর্যায়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জবাবদিহিতাও কিন্তু নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমেই নিশ্চিত করা হয়। সুতরাং, জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সংসদ এবং সরকার প্রতিষ্ঠাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সকল সংস্কার কার্যক্রমের প্রথম এবং প্রধান টার্গেটও হওয়া জরুরি। এ জন্যই অগ্রাধিকারভিত্তিতে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা গঠিত জবাবদিহিমূলক সরকার এবং সংসদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে সামনে রেখেই সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেয়া দরকার। কারণ, জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ছাড়া সংস্কার কার্যক্রমের প্রক্রিয়ায় জনগণের সরাসরি সম্পৃক্ততা ছাড়া উন্নয়ন-গণতন্ত্র কিংবা সংস্কার কোনোটিই টেকসই এবং কার্যকর হয়না। একটি অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিটি ভোটারের ভোট প্রদানের অধিকার নিশ্চিত করে ভোটারদের কাক্সিক্ষত প্রতিনিধি নির্বাচন করার অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব। সেই লক্ষ্যে বিশেষ করে নির্বাচন কমিশন জনপ্রশাসনের সংস্কার এবং আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে ‘সক্ষম এবং উপযুক্ত’ গড়ে তুলতে অগ্রাধিকারভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যেই বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। তবে বিএনপি মনে করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এজেন্ডা সেটিংয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে না পারলে গণঅভুত্থানের সাফল্য ব্যাহত করতে ষড়যন্ত্রকারী চক্র নানা সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। এর কিছু আলামত ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

এবারের গণঅভ্যুথানের চরিত্র অতীতের যে কোনো গণ-অভ্যুথানের চেয়ে ব্যতিক্রম উল্লেখ করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, পলাতক স্বৈরাচারের অবৈধ শাসনকালে সকল গণতান্ত্রিক অধিকার মানবাধিকার হারিয়ে জনগণ পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিল। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বও হারাতে বসেছিল। তাই, এবারের গণঅভ্যুথানের মধ্য দিয়ে কেবল মানুষের অধিকারই প্রতিষ্ঠিত হয়নি, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা পেয়েছে। দেশ এবং জনগণ এখন গুম, খুন, অপহরণ আর বিভীষিকাময় ‘আয়নাঘরে’র আতংকমুক্ত, স্বাধীন। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার পর এবার দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতা সুরক্ষায় প্রথম কাজ হতে হবে, রাষ্ট্র এবং সমাজে মানুষের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী বীর জনগণকে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের বীর ছাত্র-জনতা, নারী-শিশু, কৃষক-শ্রমিকসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ, সর্বস্তরের জনগণ বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের জনগণ বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিতে রাজি তবুও স্বৈরশাসন মেনে নিতে রাজি নয়।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যারা শহীদী মৃত্যুবরন করেছেন, আহত হয়েছেন, হাত-পা-চোখ হারিয়েছেন কিংবা চিরতরে পঙ্গুত্ববরণ করেছেন দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ আজীবন তাদের এই আত্মত্যাগ এবং অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। হতাহতদের প্রতিটি পরিবারের প্রতি অবশ্যই রাষ্ট্র যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে।

তারেক রহমান বলেন, লাখো শহীদের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্র-রাজনীতি, শাসন-প্রশাসন হওয়ার কথা ছিল- গভর্নমেন্ট অফ দ্যা পিপল, বাই দ্যা পিপল, ফর দ্যা পিপল। অথচ গত ১৫ বছর বাংলাদেশে মাফিয়া শাসন চালু করা হয়েছিল। দেশে-বিদেশে পলাতক স্বৈরাচার, বিনাভোটের সরকারের পরিচয় হয়ে উঠেছিল- গভর্নমেন্ট অফ দ্যা মাফিয়া, বাই দ্যা মাফিয়া, ফর দ্যা মাফিয়া। এই মাফিয়া চক্র দেশকে সর্বক্ষেত্রে ভঙ্গুর করে দিয়েছিলো। দেশকে সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর, ঋণ নির্ভর এবং পরনির্ভরশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। মাফিয়া চক্র দেশের ব্যাংকগুলো দেউলিয়া করে দিয়েছে। গত দেড় দশকে দেশ থেকে ১৭ লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার করে দিয়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলন, ৫ আগস্টের পতিত স্বৈরাচারের বেপরোয়া দুর্নীতি আর লুটপাটের কারণে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ বর্তমানে ১০০ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশে আজ যে শিশুটি জন্ম নিয়েছে কোনো কারণ ছাড়াই সেই শিশুটিরও মাথা পিছু ঋণ কমপক্ষে দেড় লাখ টাকা। মাফিয়া চক্র দেশকে শুধু অর্থনৈতিক ভাবেই ভঙ্গুরকরে দেয়নি। দেশের আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক রীতিনীতিকেও ধ্বংস করে দিয়েছে। প্রতিটি সাংবিধানিক এবং বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান অকার্যকর করে ফেলা হয়েছিল। খোদ ফ্যাসিবাদকেই বিচার বিভাগের সূতিকাগারে পরিণত করে ফেলা হয়েছিল। একটি রাষ্ট্র কতটা সভ্য এবং গণতান্ত্রিক সেটি দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আচরণে স্পষ্ট হয়ে উঠে। কিন্তু মাফিয়া চক্র দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে গিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। অন্যায়-অনিয়ম আর অরাজকতার বিরুদ্ধে গণবিস্ফোরণে মাফিয়া চক্রের প্রধান দেশ ছেড়ে পালানোর পর/দেশে মাফিয়া শাসন-শোষণের অবসান ঘটেছে। পতিত স্বৈরাচারের পলায়নের মধ্য দিয়ে একটি -গণতান্ত্রিক-মানবিক বাংলাদেশ গড়ার পথে প্রধান বাধা দূর হয়েছে। তবে বাধা দূর হলেও মাফিয়া চক্রের রেখে যাওয়া ১৫ বছরের জঞ্জাল দূর হয়নি। এই জঞ্জাল দূর করে জনগণের বাংলাদেশে জনগণের ভোটে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করছে। তবে মাফিয়া চক্রের প্রধান হাসিনা দেশ ছেড়ে পালালেও মাফিয়া চক্রের বেনিফিশিয়ারি অপশক্তি প্রশাসনের অভ্যন্তরে থেকে কিংবা রাজনীতির ছদ্মাবরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়ার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে প্রায় সাড়ে বারো কোটি ভোটার। এরমধ্যে ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ভোটার তালিকায় প্রায় আড়াই কোটি নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে। ভোটার হওয়ার পর তরুণ প্রজন্মের এই আড়াই কোটি ভোটার একটি জাতীয় নির্বাচনেও ভোট দেয়ার সুযোগ পায়নি। ভোট দিয়ে তারা তাদের কাক্সিক্ষত জন প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারেনি। কিংবা তাদের নিজেরাও কেউ ভোটে নির্বাচিত হয়ে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পায়নি।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি মনে করে, দেশের জনশক্তির অর্ধেক নারী এবং তারুণ্যের এই বৃহৎ অংশকে, রাজনৈতিক অংশীদারিত্বের বাইরে রেখে একটি বৈষম্যহীন মানবিক রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয়। সংবিধান কিংবা প্রবিধানে যাই থাকুক জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা না গেলে সংস্কার প্রক্রিয়ায় জনগণকে সম্পৃক্ত করা না গেলে শেষ পর্যন্ত কোনো সংস্কার কার্যক্রমেরই কার্যকরী ফল পাওয়া যাবেনা।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র-রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি দলীয় রাজনৈতিক কার্যক্রম সংস্কারের লক্ষ্যে ২০২৩ সালেই বাংলাদেশের পক্ষের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। তবে, ঘোষিত ৩১ দফাই শেষ কথা নয়। বিএনপি মনে করে, রাষ্ট্র কিংবা রাজনীতি, সকল ক্ষেত্রেই সংস্কার কার্যক্রম একটি ধারাবাহিক এবং চলমান প্রক্রিয়া। সুতরাং, রাষ্ট্র এবং রাজনীতি সংস্কারে বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচীর/ আরো প্রয়োজনীয় পরিবর্তন পরিমার্জনকেও বিএনপি স্বাগত জানায়। এমনকি কেউ যদি মনে করেন, একটি উন্নত এবং নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য আরো নতুন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন রয়েছে, তাতেও দোষের কিছু নেই। কারণ শেষ পর্যন্ত, জনগণই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তারা কাকে সমর্থন জানাবে কিংবা কাকে সমর্থন দেবেনা। এ কারণেই, বিএনপি বারবার জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার উপর জোর দিয়েছে। বিএনপি মনে করে, একমাত্র অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই, রাষ্ট্র- রাজনীতি এবং রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সঙ্গে জনগণের প্রতক্ষ্য অংশীদারিত্ব তৈরী হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গণঅভ্যুত্থান কিংবা সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে রাজনীতির মাঠে নানারকম কথা হচ্ছে। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে এটি একটি স্বাভাবিক এবং গ্রহণযোগ্য রীতি। প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করবেন, এটিই স্বাভাবিক। এ নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, ফৌজদারি অপরাধের বিচার যেমন বিচারিক আদালতে হয় ঠিক তেমনি রাজনৈতিক কর্মকান্ড কিংবা রাজনৈতিক আচরণের বিচার হয় জনগণের আদালতে।

তিনি বলেন, আমি আগেও বলেছি/ক্ষমতার পরিবর্তন মানে শুধুই রাষ্ট্র ক্ষমতার হাত বদল নয়। ক্ষমতার পরিবর্তন মানে রাষ্ট্র এবং রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন। তাই প্রতিটি রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর মনে রাখা প্রয়োজন রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের জন্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের আচার-আচরণেও গুণগত পরিবর্তন জরুরি। সুতরাং, আমার আহবান/কোনো প্রলোভন কিংবা উস্কানিতে বিভ্রান্ত না হয়ে জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র এবং সমাজের নেতৃত্ব দানের জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত রাখুন।

হাজারো শহীদের রক্তস্নাত এই রাজপথে আজ আপনাদের এই স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতির অর্থ/ছাত্র-জনতার কাঙ্খিত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার এই যাত্রাপথে বাংলাদেশের পক্ষের শক্তিকে/হয়তো আরো ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আরো কিছু পথ পাড়ি দিতে হবে। তবে সেই পথ সন্ত্রাস-সংঘর্ষ-প্রতিশোধ কিংবা প্রতিহিংসার নয়। সেই পথ হবে ধৈর্য-সহনশীলতা এবং সমঝোতার।

সংস্কার কার্যক্রমের পথ ধরে নির্বাচনী রোডম্যাপে উঠবে দেশ। সুতরাং, আসুন, আমরা সবাই কাজের মাধ্যমে জনগণের বিশ্বাস ভালোবাসা অর্জন করি। জনগণের সঙ্গে থাকি। জনগণকে সঙ্গে রাখি।ই

মন্তব্য করুন