ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে ইসির মামলা একাধিক এনআইডির জন্য।
1 min read
ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে ইসির মামলা একাধিক এনআইডির জন্য। একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার অভিযোগে মামলা করা হয় ডা. সাবরিনা শারমিন ওরফে সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের বরখাস্ত চিকিৎসক। যিনি জেকেজি হেলথ কেয়ারের জালিয়াতির মামলায় এখন কারাগারে আছেন।
গুলশান থানা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ মমিন মিয়া বাদী হয়ে রাজধানীর বাড্ডা থানায় ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মমিন মিয়া সোমবার আমাদের খবরকে বলেন, “মিথ্যা তথ্য দিয়ে দ্বৈত ভোটার হয়েছেন।
একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে আইন অনুযায়ী অপরাধ করেছেন ডা. সাবরিনা। তার দুটি এনআইডির তথ্য তুলে ধরে বিবাদীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে মামলায়।
২০১০ সালের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনের ১৪ ও ১৫ ধারায় এ মামলা দায়ের করা হয়। ১৪ ধারায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান আছে। আর ১৫ ধারায় একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলেও একই শাস্তি হতে পারে।
এদিকে, ডা. সাবরিনার মোবাইল সিম নিবন্ধিত করা এক রোগীর নামে গ্রেপ্তারের ঠিক আগে যা বলেছিলেন তিনি।
জেকেজি দুর্নীতির মামলায় বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ
ডা. সাবরিনা আরিফ ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালনে ছিলেন। ডা. সাবরিনা জেকেজির প্রধান নির্বাহী আরিফুল হক চৌধুরীর স্ত্রী। সে কারণে সাবরিনা আরিফ চৌধুরী নামেই তিনি পরিচিত।
করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে জেকেজি হেলথ কেয়ারের জালিয়াতির মামলায় তারা দুজনেই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। ওই মামলায় তাদের বিচারও শুরু হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে থাকা অবস্থায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেকেজির চেয়্যারম্যান ডা. সাবরিনা। সরকারি কর্মচারী বিধিমালা ভঙ্গ করার অভিযোগে ডা. সাবরিনাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সরকারি নথিপত্রে নাম সাবরিনা শারমিন হুসাইন থাকলেও এই চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ নামে নানা কর্মসূচিতে অংশ নিতেন।
আবার কর্মস্থলে তার কক্ষে নামফলকেও লেখা ছিল- ডা. সাবরীনা আরিফ।
তবে তার নামে যে দুটো এনআইডি পাওয়ার কথা নির্বাচন কমিশন বলছে, সেখানে আবার নামের বানান অন্যরকম।
একটি এনআইডিতে তার নাম সাবরিনা শারমিন হোসেন, অন্যটিতে সাবরিনা শারমিন হুসেন।
ডা. সাবরিনা
ডা. সাবরিনার দুটি এনআইডি এবং এই এনআইডি দুটি এখন ব্লকড।
মামলার এজহারের তথ্য অনুযায়ী, সাবরিনা ২০০৯ সালে হালনাগাদের সময় মোহাম্মদপুর এলাকায় ভোটার হয়েছিলেন। সেই এনআইডিতে তার নাম সাবরিনা শারমিন হোসেন। বাবার নাম সৈয়দ মুশাররফ হোসেন, মায়ের নাম কিশোয়ার জেসমীন। স্বামী আর এইচ হক, জন্ম তারিখ ২ ডিসেম্বর ১৯৭৮, পেশা সরকারি চাকরি। বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা পিসিকালচার হাউজিং সোসাইটি, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
তার দ্বিতীয় এনআইডির নিবন্ধন হয়েছে ২০১৬ সালে, সেখানে তার নাম সাবরিনা শারমিন হুসেন।
বাবার নাম সৈয়দ মুশাররফ হুসেন, মায়ের নাম জেসমিন হুসেন, স্বামী আরিফুল চৌধুরী।
জন্ম তারিখ ২ ডিসেম্বর ১৯৮৩, পেশা চিকিৎসক এবং বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা বাড্ডার আনোয়ারা ল্যান্ডমার্ক, ঢাকা।
মামলার এজাহারে ইসি বলেছে, ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি ভোটার হওয়ার জন্য আগারগাঁওয়ে এনআইডি উইংয়ের প্রকল্প অফিসে আবেদন করে।
আঙ্গুলের ছাপ ও বায়োমেট্রিক তথ্য দিয়েছিলেন ডা. সাবরিনা। নিয়ম অনুযায়ী তার তথ্য যাচাইয়ের জন্য গুলশান নির্বাচন অফিসকে জানানো হয়।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে সে বছর ২৭ এপ্রিল সাবরিনা গুলশান নির্বাচন কাযালয়ে উপস্থিত হন।
দলিল যাচাই-বাছাই করে তদন্ত প্রতিবেদনে তৎকালীন নির্বাচন অফিসার তাকে ‘ভোটার করা যেতে পারে’ বলে সুপারিশ করেন।
তারই ভিত্তিতে সেই সময় ভোটার আইডি করানো হয় ডা. সাবরিনাকে।
সাবরিনা গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার নামে দুটি এনআইডি থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে নির্বাচন কমিশন।
সচিবাল চিঠি দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। সে বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর এখন মামলা করেন ইসি।
এনআইডি উইং মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে সাবরিনার দুটি এনআইডি ‘ব্লক করা’ হয়েছে।
তাকে দ্বৈত ভোটার করার ক্ষেত্রে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ জন্যে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।