
নিজস্ব প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া অংশে বেড়েছে ডাকাতের দৌরাত্ম্য। নিত্যদিনই ঘটছে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা। তবে এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
সর্বশেষ বুধ ও বৃহস্পতিবার কক্সবাজার ঘুরতে আসা মোটরসাইকেল আরোহীকে অস্ত্র ঠেকিয়ে মারধর করে টাকা, মোবাইল ও মোটরসাইকেল কেড়ে নিয়েছে ডাকাতদল। চকরিয়ার হাঁসের দীঘি এলাকায় পরপর এমন দুটি ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রুবেল শনিবার রাতে চকরিয়া থানায় এজাহার দায়ের করেছেন।
চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, চকরিয়া অ্যাডভোকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাবিব উদ্দিন মিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক মিফতাহ উদ্দিন আহমদসহ কয়েকজন আইনজীবী শনিবার রাতে ডাকাতির ঘটনায় এজাহার দায়ের করেছেন। পরে ঘটনাস্থলে আমাদের ২টি টিম পাঠানো হয়। তার আগের দিনের ঘটনায় সন্দেহভাজন ১জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রুবেল বলেন, আমরা ১০ বন্ধু কুমিল্লা থেকে রাঙ্গামাটির সাজেক হয়ে কক্সবাজার যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে চকরিয়া স্টেশন পার হওয়ার পরে আমাদের টিমের অন্য বন্ধুদের থেকে আমরা একটু পিছিয়ে পড়ি। শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ফাঁসিয়াখালী হাঁসের দীঘির নির্জন এলাকায় পৌঁছলে, পেছন থেকে ৩টি মোটরসাইকেলে ৬জন ডাকাত আমাদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। পরে বন্দুক ধরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলেন।
এ সময় তারা আমাদের লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। আমার অপর সঙ্গী মাকছুদুর রহমানকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে আমাদের কাছে থাকা নগদ টাকা, মোবাইল এবং হিরো-হান্ট মডেলের দামি মোটরসাইকেল ডাকাতি করে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে আমরা চিকিৎসা নেই।
এদিকে এ ঘটনার আগের দিন একই স্থানের এক কিলোমিটারের ভেতর রিংভং ছগিরশাহ কাটা এলাকায় রাকিব ও তার বন্ধুরা পটিয়া থেকে কক্সবাজার যাচ্ছিল ঘুরতে। পথিমধ্যে দুটো মোটরসাইকেলে ৬ জন ডাকাত তাদের গতিরোধ করে মারধর করে নগদ টাকা, মোবাইল ও দুটো মোটরসাইকেল ডাকাতি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় চকরিয়া থানায় মামলা করতে গেলে থানার ওসি মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি হিসেবে লিপিবদ্ধ করেছেন বলে জানান ভুক্তভোগী মোহাম্মদ রাকিব উদ্দিন।
এদিকে একই রাতে চকরিয়া চিংড়ি জোনের একাধিক মৎস্য ঘেরে ডাকাতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চরন্দ্বীপ মৌজার গুলডিয়া এলাকার চিংড়ি ঘের মালিক সুরাজপুর মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক।
ইউপি চেয়ারম্যান আজিম বলেন, চিংড়ি জোনে মৎস্য ঘের করতে গেলে মৌসুমের শুরুতে ডাকাতদের চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না নেওয়ায় ডাকাতরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
জানা যায়, চকরিয়ার রামপুর, বদরখালী, কোনাখালী, ছিলখালী, পশ্চিম বড় ভেওলা, ঢেমুশিয়া, চরন্দ্বীপ, বহলতলী, ডুলাহাজারা ও খুটাখালীতে অন্তত ৩৫ হাজার একর চিংড়ি জমি রয়েছে। মৌসুম শুরু হলেই এসব এলাকায় চলে ডাকাত দলের তাণ্ডব ও দখল বেদখলের মহোৎসব। তাদের চাঁদা না দিয়ে কেউ ঘের করলে নেমে আসে ডাকাতি, হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এমনকি ঘের মালিক ও কর্মচারীদের অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও শোনা যায়।
ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, চিংড়ি জোন এলাকার চারপাশে নদী ও খাল। রাতে কোনোভাবে সেখানে পুলিশ পৌঁছাতে পারে না। নিরাপত্তার কথা ভেবে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয় না বলে জানান তিনি।