গাজায় মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ : এরদোগান

অনলাইন ডেস্ক :
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগান তার আমিরাতের প্রতিপক্ষ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানকে (এমবিজেড) বলেছেন যে- গাজায় যুদ্ধবিরতির সমাপ্তি ‘খুবই নেতিবাচক’ প্রভাব ফেলবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। দুবাইতে কপ-২৮ ক্লাইমেট সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার সাক্ষাৎ হয়। সেখানে এরদোগান এ কথা বলেন। ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট হারজোগও শীর্ষ সম্মেলনে এমবিজেডের সাথে দেখা করেছেন। টাইমস অফ ইসরাইল জানিয়েছে যে- তাদের সাক্ষাতে এমবিজেড গাজায় মানবিক সাহায্যের অনুমতি দেয়ার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। এদিকে ফিলিস্তিনি চিকিৎসা সূত্রে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকাল থেকে গাজায় ইসরাইলের বোমা হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এই হামলায় আরো অনেকেই আহত হয়েছে। হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেড জানিয়েছে, ইসরাইলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় তারাও দেশটির আশকেলন, সেডরোট ও বিয়ারশেবা শহরে আক্রমণ করেছে। ইউনিসেফের বৈশ্বিক মুখপাত্র জেমস এল্ডার বলেছেন, ইসরাইলি বিমান হামলা পুনরায় শুরু হওয়ায় শিশুরা ভয় ও ট্রমায় ফিরে এসেছে। ইসরাইল সরকারের মুখপাত্র আইলন লেভি সাংবাদিকদের বলেছেন, হামাসের হাতে এখনো ১৩৭ জন বন্দী রয়েছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলছে, অধিকৃত পশ্চিমতীরে অন্তত ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে বলে ঘোষণা করে। এর প্রতিরোধে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরাইল। বস্তুত, ১৯৫৩ সালের পর এই প্রথম এত বড় মাত্রার যুদ্ধ শুরু হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে। এরদোগান বলেন, ইসরাইলি হামলায় ১৬ হাজারের বেশি নিরীহ ফিলিস্তিনি নাগরিকের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগ শিশু ও নারী। এটি কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না। গাজায় যা ঘটছে তা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, এটি একটি যুদ্ধাপরাধ। অপরাধীদের অবশ্যই ধরতে হবে। আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে তার বিচার করতে হবে। তিনি বলেন, ক্লাইমেট সংকট নিয়ে আলোচনা করার সময়, আমরা আমাদের পাশের রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের মানবিক সঙ্কট উপেক্ষা করতে পারি না। গাজার বর্তমান পরিস্থিতি একটি যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। তিনি আরও বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া দ্বন্দ্ব এবং করোনভাইরাস মহামারির পর এবার বিশ্ব গাজা গণহত্যার যন্ত্রণাদায়ক প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি। এই প্রতিটি সংকটের সময়, তুর্কিতে ন্যায়বিচার ও ন্যায়পরায়ণতার নীতির ভিত্তিতে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে কথা বলেছেন। একইভাবে আমরা এই সুবিধাজনক পয়েন্ট থেকে ক্লাইমেট পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরাইল। শুক্রবার ভোর থেকেই দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলে অনবরত বোমাবর্ষণ শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। ধোঁয়ার কুণ্ডলিতে ছেয়ে যায় আকাশ। আল-জাজিরা।

মন্তব্য করুন