খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নিতে এখন কোনো বাধা নেই অ্যাটর্নি জেনারেল

ডেস্ক : খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নিতে এখন কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। শুক্রবার রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ কথা জানান। ‘অতীতের নির্বাচনী অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হলে ভবিষ্যৎ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করা যাবে’ শীর্ষক এ ছায়া সংসদে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির সভাপতি হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। আসাদুজ্জামান বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে যত মামলা ছিল সেগুলোর অনেকগুলো থেকে তিনি ইতিমধ্যে খালাস পেয়েছেন। সেখানে আইনগত বাধা আপাতত দেখা যাচ্ছে না। আগামী দিনে নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো বাধা আসবে কিনা সেটা সময় বলে দেবে, তবে আপাতত কোনো বাধা আইনগতভাবে দেখা যাচ্ছে না।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না এটা নিতান্তই আওয়ামী লীগের ব্যাপার। নির্বাচনে প্রত্যেকে যেন অংশগ্রহণ করতে পারে সে পরিস্থিতি যখন উন্মুক্ত হবে, ভোটাধিকারের স্বপ্ন বাস্তবায়নে চিন্তা এবং মননে যখন বাংলাদেশের মানুষ বুঝবে আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো ‘আমি ডামি’ নির্বাচন হবে না, সে পরিস্থিতি তৈরি হলে তখন এদেশে অন্তর্বর্তীমূলক নির্বাচন হবে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি নেবে না সে বিষয়টা এখানে মুখ্য বিবেচ্য বিষয় হিসেবে সামনে আসবে না।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা যাদের নির্বাচনে পাঠিয়েছে, যাদের জন্য সংবিধানের কবর রচনা করেছে, যাদের জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে তারা হাসিনার নির্মম দিনে পাশে দাঁড়ানোর সাহস পায়নি। এটা নির্মম বাস্তবতা। যারা গণতন্ত্র হত্যা করেছেন, দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছেন, সাংবিধানিক বিধি হত্যা করেছেন, যারা সব নির্বাচন ব্যবস্থাকে হত্যা করেছেন, যেখানে কারও ভোট দেয়ার অধিকার ছিল না, যেখানে মানুষের মৌলিক অধিকারকে কণ্ঠরোধ করা হয়েছে- এমন একটি পথ পরিক্রমা অতিক্রম করে এসে আমরা চব্বিশের জুলাই বিপ্লব পেয়েছি।

আমরা ২৪-এর জুলাই বিপ্লবের মধ্যে যে বিজয় অর্জন করেছি তা অনেকের অপকর্মের কাছে ভূলুণ্ঠিত হতে বসেছে। আমরা বলতে চাই, যারা বিপ্লব করেছে তারা বিপ্লব বুকে ধারণ করেছে। যারা বিপ্লব করেছে তারা দেশের গণতন্ত্রের চেতনা, ১৯৭১’র স্বাধীনতার চেতনা, সাংবিধানিক মূল্যবোধ, মানুষের কথা বলার স্বাধীনতাকে বুকে ধারণ করে ও লালন করে এই বিপ্লব ঘটিয়েছে। বিপ্লবীদের এই চেতনা কেউ হত্যা করতে পারে না। কোনো ষড়যন্ত্রকারী এ বিপ্লবীদের পরাজিত করতে পারবে না। যারা অপরাধ করেছে তারা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিপতিত হবে। যারা সংগ্রামের পথে, বিপ্লবের পথে দেশের মানুষের জন্য জীবন দিয়েছেন, স্বপ্ন দেখিয়েছেন, বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন তারা ইতিহাসে মহানায়ক হয়ে থাকবেন।

অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার বিষয়ে কথা উঠলে আসাদুজ্জামান বলেন, কে এম নূরুল হুদার নির্বাচন কমিশনের রেজাল্ট হলো ফ্যাসিস্ট সরকার। ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় থেকে কে এম নুরুল হুদার বিচার করবে, এটা একটা হাস্যকর ব্যাপার। তবে নতুন সরকার এ সবকিছুই তদন্তের আওতায় আনবে এটা প্রত্যাশা করা যায়। আমিও এ প্রত্যাশায় সহযাত্রী।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির সভাপতি হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ তার বক্তব্যে ভবিষ্যৎ নির্বাচন সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য ১০টি পয়েন্ট সুপারিশ করেন। অনুষ্ঠিত ছায়া সংসদে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির মধ্যে বিতর্কে সরকার দল ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি বিজয় লাভ করে।মা

মন্তব্য করুন