কেএমপি কমিশনারের প্রেস ব্রিফিং : খুলনায় সংঘর্ষে, পুলিশ সদস্য নিহত

নিজস্ব প্রতিনিধি : খুলনায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে সুমন ঘরামী (৩২) নামে এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খুলনার জিরো পয়েন্ট, গল্লামারী মোড় এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের এ সংঘর্ষ হয়। রাত পৌনে ৯টার দিকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সংঘর্ষে আমাদের ২০-২৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং পুলিশ লাইনের কনস্টেবল সুমন কুমার ঘরামী নিহত হয়েছেন।
মোজাম্মেল হক বলেন, পুলিশ সর্বোচ্চ ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছে। অথচ আমার এক ভাইকে পিটিয়ে মেরে ফেলল। আমরা শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে দিতে চাইলেও তারা আমাদের উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা আমাদের উপর আক্রমণ চালায়। আমাদের একটি গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে এবং পুলিশ সদস্যদের উপর অতর্কিত হামলা করেছে। নিহত সুমন ঘরামির মাথায় প্রচন্ড রকমের আঘাত করেছে। হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরো বলেন এই ঘটনায় আমাদের ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য আহত হয়েছেন। তার ভিতর কয়েকজন গুরুতর। পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, এই ঘটনায় আমরা শুধুমাত্র টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেছি। আর তারা আমাদের উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। শুক্রবার বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে রাত সাড়ে সাতটা পর্যন্ত নগরীর জিরো পয়েন্ট গল্লামারি মোড়সহ আশপাশের এলাকায় এই সংঘর্ষ ঘটে।
জানা যায়, নিহত পুলিশ সদস্য সুমন কুমার ঘরামীর বাড়ি বাগেরহাটের কচুয়ায়। সে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার সৌমেন বাইনের দেহরক্ষী ছিলেন। সৃষ্টি ঘরামি নামে ৬ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (০২ আগস্ট) দুপুর ২টায় খুলনা নিউমার্কেট এলাকা থেকে বৃষ্টি ও পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলনকারীরা গণমিছিল শুরু করে। মিছিলটি ৩টার দিকে শান্তিপূর্ণভাবে গল্লামারী মোড়ে পৌঁছায়। সেখানে বিপরীত দিক জিরোপয়েন্টের দিক থেকে পুলিশ মিছিল লক্ষ করে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন। পরে বিপুল সংখ্যক আন্দোলনকারী মিছিল নিয়ে এগিয়ে গেলে পুলিশ ধীরে ধীরে পিছু হটে যায়। পরে তারা জিরোপয়েন্টে অবস্থান নেয়।
বিকাল ৪টার দিকে পুলিশ সেখান থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শিববাড়ি মোড়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাঁধা দেয়। এ সময় গল্লামারী মোড়ে আবার সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ চলাকালে নগরীর গল্লমারী এলাকায় একটি পুলিশ ভ্যানে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত গল্লামারী এলাকায় থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে।ই

মন্তব্য করুন