
ডেস্ক : লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট খেতাবপ্রাপ্ত বীরমুক্তিযোদ্ধা ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, দেশ রক্ষার স্বার্থে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে এটাও স্পষ্ট করে বলা প্রয়োজন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের এই বিলম্বিত সিদ্ধান্তে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চরমভাবে। যারা সিদ্ধান্ত নিতে বাধাগ্রস্ত করেছে কিংবা প্রভাবিত করেছে, তারা ইতিহাস ও জনগণের সামনে দায় এড়াতে পারবে না।
গত বছর ৮ আগস্ট এলডিপি সর্বপ্রথম জোরালোভাবে এ দাবি জানিয়েছিল। আ.লীগ দেশের এমন একটি রাজনৈতিক দল, যারা বারবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে গুম, খুন, দমনপীড়নকে সরকারিভাবে অনুমোদন দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন খেতাবপ্রাপ্ত এ বীরমুক্তিযোদ্ধা। রোববার (১১ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
অলি আহমদ বলেন, রাষ্ট্রীয় শুদ্ধি ও ন্যায়ের পথে এই পদক্ষেপ কেবল শুরু। শুধু একটি দলকে নিষিদ্ধ করলেই রাষ্ট্র সঠিক পথে চলবে না। রাষ্ট্রপতিসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্বগুলোতেও এমন ব্যক্তিদের দায়িত্বে রাখা আবশ্যক, যাদের প্রতি জনগণের আস্থা রয়েছে, পরীক্ষিত এবং যারা দেশের স্বার্থকে ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে রাখতে সক্ষম। সময় এসেছে- সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতেও নীতি-নৈতিকতা, নিরপেক্ষতা, অভিজ্ঞ ও জনআস্থার ভিত্তিতে পুনর্মূল্যায়ন করার।
তিনি বলেন, প্রায় ৯ মাস পর জনতার প্রতিরোধ, তরুণ প্রজন্মের সাহসিকতা ও বিভিন্ন গণতান্ত্রিক শক্তির সম্মিলিত চাপে আওয়ামী লীগকে অবশেষে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি। কর্নেল অলি বলেন, আমি দেশের সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ এবং বিবেকবান মানুষদের প্রতি আহ্বান জানাই- বিদেশি প্রভাব, অনৈতিক রাজনীতি এবং ক্ষমতাকেন্দ্রিক চক্রান্ত থেকে জাতিকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হোন। দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থেই এখন জাতীয় ঐক্য ও সাহসিকতার প্রয়োজন।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি অতীতেও জনগণের পাশে ছিল, আজও আছে, আগামীতেও থাকবে- একটি মুক্ত, মর্যাদাসম্পন্ন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পক্ষে অটল প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ড, হেফাজতে ইসলাম গণহত্যা, সাংবাদিক হত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যার দীর্ঘ তালিকা, লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার, দুর্নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন এবং ভারতের স্বার্থরক্ষায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ করার মতো অপরাধের দায় আ.লীগের কাঁধেই বর্তায়। এদের শাসনামলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি এবং নীতি- নৈতিকতা সর্বোচ্চভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে বলে দাবি করেন ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম।
কর্নেল (অব.) অলি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে শুরু করে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা এবং সাধারণ মানুষের ওপর যেভাবে নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছে, তা পৃথিবীর ইতিহাসেও নজিরবিহীন। এই নৃশংসতা ও অবিচারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার সুদৃঢ় ঐক্য গড়ে উঠেছিল। যার কারণে ফ্যাসিস্ট সরকারের সূচনীয় পতন হয়েছিল। সেদিনই বলেছিলাম আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা ছাড়া বাংলাদেশ রক্ষা পাবে না।ই