চট্টগ্রাম আনোয়ারার ২৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়ে নানা অভিযোগ

খবর ডেস্ক :
আনোয়ারায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবায় ২৯ কমিউনিটি ক্লিনিক চালু হলেও সেবা নিয়ে আছে নানা অভিযোগ। এসব ক্লিনিক থেকে ২৭ ধরনের রোগীর বিনামূল্যে ওষুধ দেয়ার কথা থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শূন্য হাতে ফিরতে হয় রোগীদের।

জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা এসে সারা দেশে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন। এসব কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সারা দেশে ১৪ হাজার ৪৩৮ জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) নিয়োগ দেওয়া হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় আনোয়ারার ১১ ইউনিয়নে ২৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়। গ্রামীণ পর্যায়ের এসব ক্লিনিকে বাস্তব অর্থে তেমন সেবা নেই বললেই চলে। আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুনুর রশিদ ইতোমধ্যে ৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছেন। তাছাড়া দায়িত্বে অবহেলার কারণে তিনি একাধিক হেলথ প্রোভাইডারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ট্রাস্ট গঠনের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য এই ক্লিনিকের সভাপতি। ৭–৯ সদস্যের কমিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম পরিচালনা করে। এর মধ্যে জমিদাতা সহসভাপতি এবং কর্মরত সিএইচসিপি সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। প্রতি মাসে এই কমিটির নিয়মিত বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও হয় না। কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচসিপির দায়িত্বে অবহেলায় সেবা প্রার্থীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত সকাল ৯টায় কর্মস্থলে উপস্থিত, বিকাল ৩টায় যাওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে কর্মস্থলে আসেন না অনেক সিএইচসিপি। ক্লিনিকে ২৭ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে রোগীদের দেওয়ার কথা থাকলেও এলাকাবাসী অধিকাংশ ওষুধ পান না। প্রসূতির প্রজনন স্বাস্থ্যে পরিচর্যার আওতায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের প্রসবপূর্ব (প্রতিরোধ টিকা দানসহ), প্রসবকালীন এবং প্রসবোত্তর সেবা, সাধারণ জখম, জ্বর, ব্যথা, কাটা, পোড়া, দংশন, বিষক্রিয়া, হাঁপানি, চর্মরোগ, কৃমি এবং চোখ, দাঁত ও কানের সাধারণ রোগের ক্ষেত্রে লক্ষণভিত্তিক প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা পাওয়ার কথা রয়েছে। সময়মতো প্রতিষেধক টিকা; যেমন যক্ষ্মা, ডিপথেরিয়া, হুপিং কফ, পোলিও, ধনুষ্টঙ্কার, হাম, হেপাটাইটিস–বি, নিউমোনিয়া ইত্যাদিসহ কমিউনিটি ক্লিনিকে শিশু ও কিশোর–কিশোরীদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবাও পাওয়ার কথা।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ও কমিউনিটি ক্লিনিকের সভাপতি জানান, দায়িত্বরত হেলথ প্রোভাইডার সময়মতো কর্মস্থলে আসেন না। রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেন না।

হাইলধন ইউনিয়নের বাসিন্দা আরমান বলেন, আমার এলাকার মালঘর বাজারসহ বিভিন্ন ওষুধের দোকানে সরকারি ওষুধ বিক্রি হয়। এসব ওষুধ কোথাই থেকে আসে?

আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুনুর রশিদ বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনার ক্ষেত্রে স্থানীয় হেলথ গ্রুপ রয়েছে। এখানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ইউপি সদস্য, সহসভাপতি জমিদাতা। এরা যদি সচেতন না হন, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করেন, তাহলে কমিউনিটি ক্লিনিকের নিয়ম বন্ধ করা সহজ নয়। তারপরও অনিয়ম দূর করতে এবং তদারকি বাড়াতে আমরা চেষ্টা করব।

মন্তব্য করুন